জাতীয় খাবার যেভাবে নির্ধারিত হয়
ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় পার্থক্য দেখা যায়। কোথাও রুটিভুক মানুষের সংখ্যা বেশি, কোথাও ভাত কিংবা মাংসের।
একটি দেশে একাধিক খাবার উৎপন্ন হলেও এমন একটি খাদ্যকে জাতীয় খাবার হিসেবে নির্ধারণ করা হয় যেটির সঙ্গে ঐ দেশের সংস্কৃতির যোগ আছে। এ ছাড়া আরও কিছু বিষয় থাকে জাতীয় খাবার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে। যেমন, এটিকে স্থানীয়ভাবে সবস্থানেই পাওয়া যাবে। তা ছাড়া, জাতীয় খাবার একটি দেশের মানুষের ব্যক্তিপরিচয় ও জাতীয় পরিচয় তুলে ধরবে। এসব বিষয় মাথায় রেখে একেক দেশে একেক ধরনের জাতীয় খাবার নির্ধারণ করা হয়। একটি জাতীর সহস্র বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে একটি খাবারের যোগসূত্র থাকলে, সেই খাবারটিই ঐ অঞ্চলের মানুষের জাতীয় খাবার হয়ে ওঠে। এই খাবারে স্থানীয় মসলা ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়। জাতীয় খাবার থেকে একটি জাতীর খাদ্যভ্যাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এমনকি সেই দেশের কৃষি এবং সম্পদের উৎস সম্পর্কে আঁচ করা যায়। পরিবেশের প্রভাবও অনেক সময় জাতীয় খাবারের ওপর পড়তে পারে। তবে কোনো কারণ ছাড়া, এমনকি বিষাক্ত কোনো খাবারও কখনো কখনো কোনো দেশের জাতীয় খাবার হয়। যেমন, জামাইকার জাতীয় ফল অ্যাকি। পাকা অবস্থায় এই ফল খেলে ক্ষতি নেই। কিন্তু কাঁচা অবস্থায় খেলে বমি, নানা ধরনের অসুখ এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। আমাদের দেশের জাতীয় খাবার ভাত। প্রায় পাচ হাজার বছর আগে থেকে এই অঞ্চলের মানুষেরা এই খাবারের সঙ্গে পরিচিত। এই খাবারের সঙ্গে বাঙালির নানা ধরনের সংস্কৃতি মিশে আছে। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে- বাঙালির সব কিছুতেই ভাতের উপস্থিতি। ভাতের সঙ্গে আছে মিথ, কল্প কাহিনি। তাই এটি বাংলাদেশের জাতীয় খাবার।