skip to Main Content

ফিচার I ফর ক্লিনজিং মিসটেকস

ত্বকযত্নের প্রথম ধাপে গলদ মানে বাকি রূপরুটিনটাই ভেস্তে গেল! যার ক্ষতিকর প্রভাব ধরা দেবে চেহারায়

মুখ ধোয়া? সে তো খুব সহজ। সবাই পারে। সেরেও নেওয়া যায় চটজলদি। কিন্তু এর মধ্যেও হয়ে যেতে পারে এমন সব ভুল, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়। তাই মুখ ধোয়ার কাজটা সারা চাই সচেতনভাবে।
 মুখ ধোয়ার আগে হাত ধুয়ে নেওয়া জরুরি। সারা দিন হাতে জমতে থাকা ধুলা, দূষণ, তেল আর জীবাণু মুখত্বকে লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই শুরুটা হোক হাত পরিষ্কার দিয়ে। সাবান, হ্যান্ডওয়াশ- চলবে সবই।
 মুখভর্তি মেকআপের ওপর ক্লিনজার, ফেসওয়াশ বা ত্বক পরিষ্কারক কোনো পণ্য মেখে নেওয়া উচিত নয়। এতে করে মুখ সাফ তো হবেই না, উল্টো পুরো মেকআপ ঘেঁটে যাবে চেহারাজুড়ে। লোমকূপগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই রিমুভার দিয়ে মুখ প্রথমে পরিষ্কার করে নিতে হবে ভালো করে। তারপর মাখতে হবে পছন্দসই ত্বক পরিষ্কারক পণ্য। মেকআপ থাকলে ডাবল ক্লিনজিং মাস্ট। এতে ত্বকে যদি কিছু প্রডাক্ট রয়েও যায়, তা-ও নিশ্চিহ্ন হবে।
 বাড়াবাড়ি মনে হলেও ক্লিনজিং ব্রাশ খুবই কাজের। শুধু ত্বকের উপরিভাগ নয়, অনেক হাইঅ্যান্ড ব্রাশ এপিডার্মিসের গভীরে প্রবেশ করে ভেতর থেকে ত্বক পরিষ্কারে সক্ষম। নিয়মিত এসব ব্রাশের ব্যবহার ব্লকেজ দূর করে, কমায় ব্রণের আশঙ্কা। এ ছাড়া মুখত্বকে হেয়ার ফলিকলের আধিক্য থাকলে তা-ও দূর করতে পারে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। যা ইনগ্রোন হেয়ারের মতো সমস্যা সমাধানে কার্যকর।
 ধোঁয়া ওঠা গরম পানিতে মুখ ধোয়া অনেকের কাছেই আরামদায়ক মনে হতে পারে। কিন্তু এতে ত্বকের ক্যাপিলারিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চেহারায় লালচে দাগছোপ পড়ে যেতে পারে স্থায়ীভাবে। এ ছাড়া ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয় এই তাপমাত্রার পানি। করে তোলে অত্যধিক শুষ্ক, অথবা সিবাম উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়ে তেলে ভাব বৃদ্ধি করে আশঙ্কাজনকভাবে। এ ছাড়া গরম পানি ত্বকের লোমকূপ খুলে দেয় আর ঠান্ডা পানি লোমকূপ বন্ধ করে দেয় বলে যে ধারণা ছিল, তা সম্পূর্ণ ‘মিথ’ বলেই এখন প্রচলিত। বরং হঠাৎ ঠান্ডা আর গরমের তারতম্য ত্বককে শকে ফেলে দিতে পারে। তাই মুখ ধোয়ার সেরা উপায় হচ্ছে ঈষদুষ্ণ পানি।
 ক্লিনজিং প্রডাক্ট কতটুকু নেওয়া হচ্ছে, তা যাচাই জরুরি। এ ক্ষেত্রে অনেক বেশি কিংবা কম- কোনোটাই প্রযোজ্য নয়। এ ধরনের ভুল এড়াতে পণ্যের ধরন বুঝে তারপর পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। ফোম বেসড ক্লিনজার ব্যবহার করতে চাইলে গলফ বল সাইজের পরিমাণ নিলেই চলবে। ক্রিম বেসড অথবা জেল বেসড ক্লিনজারের জন্য আমন্ড সাইজেরটাই যথেষ্ট।
 অনেকে মুখ ধোয়ার আগে ত্বকে ক্লিনজার মেখে বসে থাকেন। তাদের ধারণা, এতে পণ্যের গুণাবলি ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করবে, আরও কার্যকরভাবে পরিষ্কার হবে ত্বক। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে ত্বকে ক্লিনজার রেখে দিলে বরং তা কার্যকারিতা হারায়। তাই মুখে মাখিয়ে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করে নেওয়াই ভালো। তারপর ধুয়ে নিতে হবে। আরও নিশ্চিত হতে চাইলে পণ্যের লেবেলের নির্দেশনা মেনে চলা জরুরি।
 ক্লিনজিং এসেনশিয়াল বটে, কিন্তু তাই বলে অনেক দামি ক্লিনজার না মাখলে ত্বক পরিষ্কার হবে না, তা কিন্তু নয়। বরং কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা রোজ জলেই ভেসে যাবে। তাই কেনার সময় খেয়াল করা চাই দামের ব্যাপারটা। সাধ্যের মধ্যে আছে এমন ক্লিনজার কিনে বাকিটা খরচ করা যাবে হাইঅ্যান্ড কোনো সেরামে।
 ফেসিয়াল ওয়াইপ। ত্বক পরিষ্কারের চটজলদি এবং সহজ বিকল্প বটে, কিন্তু সেরা অপশন নয় মোটেই। এর ব্যবহারে ত্বক কখনোই পুরোপুরি সাফ হয় না। অনেক সময় প্রডাক্টও রয়ে যায় চেহারায়। এ ছাড়া সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ওয়াইপগুলোতে একটু হলেও ক্ষতিকর কেমিক্যালের উপস্থিতি থাকে। সঙ্গে ওয়াইপ ব্যবহারের সময় ত্বক টানাটানি তো থাকছেই, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তার চেয়ে বরং ত্বক-উপযোগী ক্লিনজার আর কোমল এক্সফোলিয়েটিং ক্লথের ব্যবহারেই ক্লিয়ার স্কিন নিশ্চিত। ওয়াইপ দিয়ে ক্লিন করতে হলে পরবর্তী পর্যায়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে ভালোভাবে।
 মুখ ধোয়ার পরপরই অনেকে ময়শ্চারাইজ করতে ভুলে যান। ডার্মাটোলজিস্টদের মতে, ক্লিনজিংয়ের পর সঙ্গে সঙ্গেই টোনিং সেরে ময়শ্চারাইজ করে নিতে হবে। এতে ত্বকের আর্দ্রতা আর পিএইচের ভারসাম্য বজায় থাকবে। নইলে একবার শুষ্ক হয়ে যাওয়া ত্বকে ময়শ্চারাইজারও ভালোভাবে কাজ করবে না।

 জাহেরা শিরীন
মডেল: বর্ণ
ছবি: জিয়া উদ্দিন
মেকওভার: পারসোনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top