skip to Main Content

ফিচার I রূপরাশি

জন্মতিথিও নির্ধারণ করে দেয় ত্বকের ধরন। সে অনুযায়ী চাই যত্নআত্তি। সুন্দর হয়ে ওঠার জন্য। লিখেছেন সারাহ্ দীনা

বছরের কোন সময়ে জন্ম আপনার? কোন রাশির জাতক আপনি? রূপচর্চার পরামর্শ নিতে গিয়ে যদি বিশেষজ্ঞ এমন প্রশ্ন করেন, তবে অবাক হতেই হয়। কিন্তু ত্বকের জাত চিনতে সাহায্য করবে রাশিফল। এর কারণ হচ্ছে, জন্মতিথির ওপর নির্ভর করে ত্বকের ধরন। একে তিনটি দলে বিভক্ত করা যেতে পারে। আর্থ, ফায়ার ও এয়ার। এসব রাশির জাতক-জাতিকাদের ত্বকে ভিন্নতা পাওয়া যায়।
প্রথমেই বলা যায় আর্থ সাইন নিয়ে। এই ইংরেজি শব্দের বেশ কয়েকটি বাংলা অর্থ আছে। রাশির প্রভাবের ক্ষেত্রে ধরা যায় এটি মাটি। মকর, বৃষ কিংবা কন্যা রাশির জাতক-জাতিকারা ধরণী দলের অন্তর্ভুক্ত। ক্লগড পোরস নিয়ন্ত্রণে রাখলেই ত্বকের যত্নে তা যথেষ্ট। মকর রাশির সদস্যরা সহজ-সরল জীবনেই আনন্দ পায়। তবে ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় তাদের মনোযোগী বতে হবে। প্রসাধন ব্যবহারের চেয়ে যত্নটাই এ রাশির জন্য বেশি দরকার। জুতসই স্কিন কেয়ার রুটিন তৈরি করে নিন ধরন বুঝে। ত্বকের চাহিদা সঠিকভাবে বুঝতে পারলে সমস্যা কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। সাজের পরের যত্ন ভুলে গেলে চলবে না।
বৃষ রাশির সদস্যরা বিউটি গেমে যথেষ্ট পটু। কেয়ারের ক্ষেত্রে স্টিম, অর্থাৎ উষ্ণ ভাপ তাদের ত্বককে ডিটক্স করতে সাহায্য করবে। কেয়ার লেভেল ওয়ান থেকে ত্বক ডিটক্স করে প্রয়োজনীয় উপাদান বেছে নিতে হবে পরিচর্যার জন্য। যত্নে জেল্লা আসবে, ত্বক হয়ে উঠবে নিখুঁত।
কন্যা রাশির স্কিন কেয়ার সাজেও ফেলবে প্রভাব। রূপ রুটিনে তাই সঠিক যত্নে মনোযোগী হতে হবে। স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও সচেতনতা প্রয়োজন। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরি।
এবার ফায়ার সাইন। বোঝা যাচ্ছে এই দলের সদস্যরা যথেষ্ট হট! বলা চলে বেশ খানিকটা রাফ অ্যান্ড টাফ! তাদের স্কিন চায় বিশেষ মনোযোগ। কারণ, হইহল্লাময় দিনযাপনে ত্বকে ইনফ্ল্যামেশন, রেডনেস, স্টিমুলির প্রতি হাইটেনডেন্ট রেসপন্স আর র‌্যাশ তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে স্ট্রেসের দিনে এসব সমস্যা জোরালো হতে পারে। সিংহ, মেষ আর ধনু—এই তিন রাশি আছে অগ্নির দলে। অর্থাৎ এই তিনের সাইন ফায়ার।
সিংহ। এই দলের সদস্যরা ত্বকের গ্লোতে দারুণ আকৃষ্ট। শো স্টপারের মতো স্ট্যানিং তাদের চলাফেরা। ত্বকের উজ্জ্বলতা তাই তারা বেশি আশা করে। কিন্তু এ জন্য সবার আগে চায় হেলদি স্কিন। এদের ত্বকের যত্নে যোগ করতে পারে শিট মাস্ক। এটি প্রলেপে সোনার গুঁড়ার মতো উপাদান ত্বক উজ্জল করে। এর বাইরে ব্যবহার করা যায় অ্যাসেনশিয়াল অয়েল। এতে ঘরে থাকার এই সময়ে নিজ কক্ষেই পাওয়া যাবে স্পার সতেজ একটি অনুভূতি। ত্বকেরও চাই প্রশান্তিকর বিশ্রাম।
মেষ, রাশির সদস্যদের যারা খুব বেশি ব্যস্ত, তারা নিশ্চয়ই চায় চটজলদি সাজ। কাজের মাঝেও ত্বক পরিচর্চায় মনোনিবেশ প্রয়োজন। শুধু বাড়িতে নয়, বাইরেও চলতে পারে যত্ন। ব্যাগে রাখা চাই ছোট্ট পাউচে অল্প সময়ের স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট আর প্রসাধন। সাজের ক্ষেত্রে মাল্টিপারপাস শ্যাডো আর ব্ল্যাশ প্যালেট রাখা যায় সঙ্গী হিসেবে। এই অল্প কিছু প্রসাধন ব্যবহারেই পাওয়া যেতে পারে গ্লো।
ধনু রাশির জাতকদের ক্ষতিকর আবহাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে। বুঝতে হবে ত্বকের ভাষা। সূর্যরশ্মিও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে হবে নিজেকে। সানমিল্ক ব্যবহার চাই নিয়মিত। কমপক্ষে ২৫ এসপিএফ আছে এমন সানস্ক্রিন প্রয়োজন। এতে ত্বক থাকবে সুস্থ। আক্রান্ত হবে না প্রকৃতির রুক্ষতায়।
এয়ার সাইনের দলে যেসব রাশি রয়েছে, তাদের বৈশিষ্ট্যে আছে বেশ কিছু মিল। এই সাইনের জাতকদের ত্বকে সব থেকে বেশি দরকার হয় আর্দ্রতার। এর কারণ, এদের ত্বক কিছুটা শুষ্ক। তাই স্কিন কেয়ার রুটিনে হাইড্রেশনকে রাখতে হবে তালিকার প্রথম। যেসব ত্বকের আর্দ্রতার মাপকাঠি শুষ্কতার দিকে এগিয়ে থাকে, তাদের নিশ্চিত করতে হয় ময়শ্চার। নয়তো ত্বক হারাবে জেল্লা। হাইড্রেশনের পাশাপাশি ডায়েটে কোলাজেন যোগ করলে পাওয়া যেতে পারে ইতিবাচক প্রভাব। একই সঙ্গে ত্বক পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও চাই সাবধানতা। প্রডাক্টের উপাদানে মনোযোগী হওয়া দরকার। ড্রাই করে এমন উপাদানের প্রডাক্ট ব্যবহার করলে ত্বকে দেখা দিতে পারে রিংকেল। শুষ্কতা বাড়িয়ে দেয় এমন উপাদান এড়ানো দরকার।
তুলা রাশির জাতকের যদি ত্বক রাখতে হয় তুলার মতো তুলতুলে, তাহলে মনোযোগ চাই হাইড্রেশনে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। চাই ময়শ্চারাইজারের মায়াময় যত্ন। প্রসাধন এবং কেয়ার প্রডাক্টের তালিকায়ও থাকুক ময়শ্চার। ক্লিনজার ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। এ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। ত্বকের সঙ্গে সঠিকভাবে জুটি গড়ে তোলে এমন একটি ক্লিনজার বেছে নিতে হবে। ক্রিম রাখতে হবে রূপ রুটিনে। আর্দ্রতাতেই অর্ধেক ত্বকচর্যা হয়ে যাবে। ত্বককে ড্রাই ফিল দেয় এমন প্রসাধন এড়ানো প্রয়োজন। ব্যাবহারের আগে উপাদান ভালো করে জেনে নিতে হবে। শুষ্কতা অনুভব করলে বিউটি বক্স থেকে সরিয়ে ফেলা যায় এটি।
মিথুন, নান্দনিকতা এই রাশির প্রধান বৈশিষ্ট্য। ত্বকের যত্নেও নিত্যনতুন পণ্য ব্যবহার করতে পারে এরা। শুষ্কতাকে কোনোভাবেই জাঁকিয়ে বসতে দেওয়া যাবে না। তাই ময়শ্চার জরুরি। ত্বকের যত্নে সেরাম ব্যবহার করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। ঘরে বসে স্কিনের যত্নে মাস্ক ব্যবহার করা যায়। এটি সতেজতা ধরে রাখে। প্রডাক্ট অ্যাপ্লাই করার ক্ষেত্রে ক্রিস্টাল রোলার কার্যকর। তাই নিত্যদিনের রূপ রুটিনে এই বিউটি অ্যাকসেসরিজ অ্যাড করে নেওয়া যেতে পারেন।
কুম্ভ, অর্থাৎ অ্যাকুয়ারিস। এর একটি প্রতিশব্দ হচ্ছে ওয়াটার ক্যারিয়ার। এই শব্দ দুটিতেই স্পষ্ট, ত্বকে প্রয়োজন পানির। ডায়েট এবং বিউটি কেয়ার—দুই তালিকাতেই যথেষ্ট পানি প্রয়োজন। এতে কুম্ভর স্বভাবগত উচ্ছলতার সঙ্গে যোগ হবে স্কিনের উজ্জ্বলতা। ব্যস্ততা থাকুক অথবা অবসর পানির প্রয়োজনীয়তা মনে রাখতে হবে। পানের পাশাপাশি নিয়ম করে পানির স্পর্শ ত্বকের জন্য জরুরি। স্টিম থেরাপিও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি পরিষ্কারের পাশাপাশি সতেজতা ধরে রাখে। অন্যদিকে স্কিন কেয়ার প্রডাক্টও সুন্দরভাবে বসে যায় ত্বকে। প্রসাধনের সুফল শতভাগ দৃশ্যমান হয়। রাশিফলের প্রতি আগ্রহ অনেকেরই রয়েছে। কিস্তু তারা যদি রাশি অনুযায়ী নিজেদের ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখার চেষ্টা করেন, তবে তাদের মেকআপও হবে সহজ। আকর্ষণীয় হয়ে উঠবেন তারা। তবে একটি কথা সব রাশির সদস্যদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তা হলো ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

মডেল: মাহি ও মিথিলা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস আর্কাইভ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top