ফিচার I চা-বড়ি
আমাদের দেশের নিমপাতার বড়ির মতো। চায়ের এই ছোট ছোট বল মূলত ভেষজ পথ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এটি মোটেও নতুন নয়, বরং হাজার বছরের পুরোনো চৈনিক ঐতিহ্য বহন করছে এই টি পিল। চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি বড় অংশজুড়ে আছে ভেষজবিদ্যা। বিভিন্ন শিকড়-বাকড়সহ অন্যান্য উপকরণ পরিমাণমতো একত্র করে পানিতে জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় একেকটি ভেষজ দাওয়াই। ব্যক্তিপর্যায়ে এটি গ্রহণ সহজ করার উদ্দেশ্যে চীনে তৈরি হয়েছিল টি পিল। অবশ্য বাণিজ্যিকভাবে সেই পুরোনো পদ্ধতিতে, মানে প্রয়োজনীয় ভেষজ উপাদান পানিতে জ্বাল দিয়েই তৈরি করা হয়। ঘন হয়ে এলে তা দিয়ে বল তৈরি হয়। ছোট বড়িগুলো ট্যাবলেটের মতো করেই গিলে ফেলা যায়। সাধারণত একাধিক ভেষজের মিশেলে তৈরি হয় এসব। এমনকি কিছু পিল ২১টির বেশি ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি হয়। একেক বড়ির উপকারিতা একেক রকম। এটি ঠিক ওষুধের মতোই। এখন তো কৌটাবন্দি অবস্থাতেই বিক্রি হচ্ছে।
রোগ সারাইয়ে টি পিলকে বিকল্প পথ্য বলা যেতে পারে। বিশেষ করে অনিদ্রা, সাইনাস, লিভার, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি রোগের জন্য আলাদা আলাদা বড়ি মেলে। এগুলোতে সাধারণত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। ফলে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা যারা এড়িয়ে যেতে চান, তারা টি পিলের মতো ভেষজ বড়ির দিকে ঝোঁকেন। এগুলোর প্রভাব শরীরে দীর্ঘমেয়াদি হয় না। পাকস্থলী এটিকে সাধারণ খাবার হিসেবেই গ্রহণ করে, হজম করে এবং এর পুষ্টিগুণ শরীরে ছড়িয়ে দেয়। তাতেই সেটি বালাইয়ের সঙ্গে লড়ে। অবশেষে বর্জ্য হয়ে বেরিয়ে যায়।
আকারে ছোট হওয়ায় পিল গিলতে সমস্যা হয় না। তবে কিছু টি পিল তেতো হতে পারে। এই ওষুধ দিনে আটটি খাওয়া যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে খেতে হবে তিন বেলায়। একবারে আটটি খাওয়া উচিত হবে না। বিশেষ কোনো রোগে ভুগতে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই টি পিল খাওয়া ভালো।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতেও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে টি পিল। এর বিশুদ্ধতা রক্ষায় উৎপাদনের সময় কড়া নজর রাখতে হয়। এমনকি বেশির ভাগ টি পিলে প্রিজারভেটিভ, ফুড কালার কিংবা সুগারও মেশানো হয় না।
সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় ভ্রমণপিয়াসীদের পছন্দের দাওয়াই হয়ে উঠেছে টি পিল। বর্তমানে বিভিন্ন প্রকারে এটি পাওয়া যায়। যেমন কাম স্লিপ, ওমেন প্রিসিয়াস, লিলিয়াম, কুল সাইনাস, সেন্ট্রাল চি, গোল্ডেন বুক, অ্যাঞ্জেলিকা রুট, নারিশিং পিলস ফর ডেফনেস, টনিফাই স্পিøন, প্লেটিকডন, সিক্স ফ্লেভার, দ্য স্নেক অ্যান্ড দ্য ড্রাগন, হ্যাম্প সিড, এইট ফ্লেভার রেহমানিয়া, লাইচি ক্রিসান্থামাম, সুথি লিভার, গ্যাস্ট্রোডিয়া, ফ্রি অ্যান্ড ইজি ওয়ান্ডারার এবং গাইনোস্থিমা পেন্থাফাইলাম। এগুলোর একেকটি একেক রোগের পথ্য হিসেবে কাজ করে।
ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট