এই শহর এই সময় I অস্বস্তির গরমে স্বস্তির আয়োজন
গরমে ভুগল নগরবাসী। গেল ঈদও। ফলে দাবদাহ ও উৎসবের মেলবন্ধন ছিল জুলাই মাসে। ঈদের জন্য এটা-ওটা কিনতেও সময় ব্যয় হয়েছে খুব। ব্যস্ত ও আনন্দমুখর ছিল নগরীর গ্যালারিগুলোও। মাসের শুরুতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হয়েছিল মাধুরী সঞ্চিতা স্মৃতির ‘প্লিসেন্টনেস: দ্য স্টোরি অব মাধুরী’ শীর্ষক প্রথম একক গয়না প্রদর্শনী। গয়নাগুলো ছিল ব্যতিক্রমী। এসব গয়না তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন গাছের বীজ, মাটি, কাঠ, ঝিনুক, কড়ি, শঙ্খ ও মুক্তা। এগুলোর সঙ্গে সোনা, রুপা, লোহা, তামা ও পিতলের গয়নাও ছিল প্রদর্শনীতে।
মাধুরী সঞ্চিতা স্মৃতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে অনার্স শেষ করেছেন ২০০৬ সালে। গয়নার প্রদর্শনীর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি আমাকে অনুপ্রাণিত করে। প্রকৃতির কাছ থেকেই রং, আকৃতি ও কম্পোজিশন পাই। একই সবুজ গাছের পাতার বৈচিত্র্য, মাটির বিচিত্র রং, পাখির পালক, আকাশের রং, গাছের শিরা-মূলের কম্পোজিশন আর সাগর-নদীর স্রোতের পাড়ের আকৃতি—এসবই আমাকে টানে। তাই আমার কাজে প্রাকৃতিক উপাদান বেছে নিয়েছি। পোশাকে তাই প্রাকৃতিক রং আর গয়নায় সুতা, কাঠ, মাটি, শঙ্খ, মুক্তা, সোনা, রুপা ও তামার মতো ধাতুর সঙ্গে ব্যবহার করি বিভিন্ন বীজ। বীজের এসব গয়নায় প্রকৃতিকে ধারণ করতে চাই।’
প্রদর্শনীটি চলে ১ থেকে ৮ জুলাই, প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা অবধি। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল।
উৎসবমুখর ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিও। সেখানে হয়েছে ‘জাতীয় নৃত্যনাট্য উৎসব’। ২০, ২৪ ও ২৫ জুলাই। প্রথম দিন একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায়। সেদিন আলোচনা শেষে মঞ্চস্থ হয়েছে মুনীর চৌধুরীর নৃত্যনাট্য ‘কবর’। সাজু আহমেদের পরিচালনায় ‘প্রসঙ্গ ৪৭’ এবং অনিক বোসের পরিচালনায় পরিবেশিত হয়েছে নৃত্যনাট্য ‘চন্ডালিকা’।
২৪ জুলাই বিকেল ৫টায় ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় ‘হাজার বছরের বাঙালি’, মাহবুব হাসান সোহাগের পরিচালনায় ‘বারামখানা’, নীলাঞ্জনা জুঁইয়ের পরিচালনায় ‘রূপান্তরের গান’ এবং সাহিদা রহমান সুরভীর পরিচালনায় ‘কুঞ্জ সাজাও গো’ নৃত্যনাট্য পরিবেশিত হয়েছে। তা ছাড়া ২৫ জুলাই সমাপনী দিনে ছিল লুবনা মরিয়ম পরিচালিত ‘মায়ার খেলা’, কবিরুল ইসলাম রতন পরিচালিত ‘শ্যামা’, নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়ি পরিচালিত ‘মেহের নেগার’ এবং এনামুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘রঙ্গিলা নায়ের মাঝি’ শিরোনামে নৃত্যনাট্য।
এ মাসে রাজধানীবাসীর ফ্যাশনে আরেকটি নতুন পালক যোগ করে কো-ডিজাইন স্টুডিও লঞ্চ করেছে দেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ড হাউস অব আহমেদ। ১ জুলাই প্রতিষ্ঠানের বনানী আউটলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে এর গ্র্যান্ড লঞ্চিং সিরিমনি। এই ফ্যাশন হাউসের চেয়ারম্যান ও ফাউন্ডার তানজিলা এলমা জানান, নতুন মাত্রায় দুটি পার্টের সূচনা করেছে তার প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে কো-ডিজাইন অংশে ক্রেতারা নিজেদের পছন্দসই ডিজাইন-ভাবনা কিংবা রেফারেন্স ডিজাইন হাজির করতে পারবেন। নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে ক্রেতাদের নিজেদের ও হাউস অব আহমেদের ক্রিয়েটিভ টিমের মধ্যে কো-ওয়ার্কের মাধ্যমে চূড়ান্ত করে নেওয়া যাবে আউটফিটের ডিজাইন। তারপর ক্রেতার চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে তাকে তৈরি করে দেওয়া হবে কাঙ্ক্ষিত আউটফিট।
তা ছাড়া ক্রিয়েটিভ লাউঞ্জ অংশে হাউস অব আহমেদের নিজস্ব আউটফিটগুলোর এক্সিবিশন করা হবে বলে জানা গেছে। এ ধাপে নারী ও পুরুষের জন্য থাকবে আলাদা সাইড। ক্রেতারা এসে সেগুলো ট্রায়াল দিতে পারবেন। ওই আউটফিটগুলো রেডি-টু-ওয়্যার নয়, বরং পছন্দের আউটফিট অর্ডার দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তৈরি করে দেবে হাউস অব আহমেদ।
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ