ফোকাস I অত্যুষ্ণে আরাম
তাপমাত্রার বাড়াবাড়ি রকমের অদলবদলের আভাস মিলেছে খোদ আবহাওয়াবিদদের কাছেই। পারদ থাকতে পারে ঊর্ধ্বমুখী। তাই বলে তাপানুকূল কক্ষের আরামে সর্বক্ষণ কাটালে অসুখ জেঁকে বসার আশঙ্কাও আছে। দাবদাহ মানিয়ে নিতে জানা চাই সহজ কিছু কৌশল
লু হাওয়ার দিন এসেছে। গরমে অতিষ্ঠ সবাই। হাঁসফাঁসে কাটে দিন-রাত। এর সঙ্গে প্যাচপ্যাচে ঘামে কষ্টের চূড়ান্ত। এমন পরিস্থিতিতে সুস্থতাই যেন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। হাতপাখা, বক্স ফ্যান, সিলিং ফ্যান, এসি—এসবে কিছুটা শান্তি; সে তো জানা সবার। কিন্তু পুরোপুরি স্বস্তি কি মেলে? এ নিয়ে সংশয় রয়েই যায়। আবার ২৪/৭ এসব যন্ত্রপাতি সঙ্গে নিয়ে ঘোরাও সম্ভব নয়। হাতের কাছের উপকরণ ব্যবহারে নিত্যদিনের সুস্থতা নিশ্চিত করা গেলে গ্রীষ্মকাল হতে পারে আরও উপভোগ্য।
পানি ফেরাবে প্রাণ
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য পানি খুব কার্যকরী। কারণ, মানবদেহের ৬০-৬৫ শতাংশ পানি। সুস্থ দেহে এর প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। আবার গরমে ঘাম অস্বস্তিকর হলেও এর ইতিবাচক দিক হচ্ছে, ঘাম শরীরের তাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। এবং এ জন্য শরীরে প্রয়োজন হয় পানির। দিনে দু-তিন লিটার পানি পান করলে পর্যাপ্ত ঘাম নিঃসরণ সহজ হবে। এই ঘামের সঙ্গে টক্সিন বের হয়ে যায়। তাই শরীরের সুস্থতা অনেকটা নিশ্চিত হয়। পানিসমৃদ্ধ খাবার ও ফল মেনুতে থাকলে সারা দিন হাইড্রেট থাকা আরও সহজ।
নাওয়াতে নীরোগ
দিনে অন্তত একবার গোসল করে নেওয়া জরুরি বলে জানা যায়। একাধিকবার শাওয়ার নেওয়া সম্ভব হলে আরও ভালো। কারণ, এতে দেহের তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমে আসে। সারা দিনের ক্লান্তি দূর করতেও ভূমিকা রাখে গোসল। গোসলের পরে শরীর এয়ার ড্রাই করে নেওয়া গেলে বেশ আরাম অনুভূত হবে।
ছায়া সুশীতল
যতটা সম্ভব কম বাইরে বের হলেই ভালো। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত যেহেতু প্রচণ্ড রোদ থাকে, তাই এ সময় ছায়াযুক্ত জায়গায় অবস্থানের চেষ্টা করা যেতে পারে। তাতে হিট স্ট্রোকের মতো দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।
প্রসাধনে পরিমিতি
জবরদস্ত গরমে যতটা সম্ভব হালকা সাজ মানাবে। বাহুল্যে আসবে বিরক্তি। এ সময় মেকআপ আইটেম হালকা শেডের বেছে নেওয়া যেতে পারে। আইশ্যাডো প্যালেট এবং লিপস্টিকের ক্ষেত্রেও একই পরামর্শ। চুল বেঁধে রাখলে অস্বস্তি কম হবে। তাই এ সময়ে হেয়ার অ্যাকসেসরিজ সঙ্গে রাখা ভালো।
পাউডারে প্রশান্তি
ঘামে জবজবে শরীর ভোগায় খুব। প্রিকলি হিট পাউডার হতে পারে সমাধান। কুলিং উপাদানসমেত হলে তো কথাই নেই। এতে উপস্থিত কুল সেনসেশন দেহকে শীতল রাখতে ভূমিকা রাখে। ব্যবহারে কম ঘাম উৎপন্ন হয়। শরীরে ঘাম জমে থাকলে সেখানে ঘামাচি উৎপন্ন হতে পারে। এ ধরনের পাউডার ব্যবহার করা হলে ঘামাচি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রিকলি হিট পাউডার ত্বকে কুলিং সেনশেসন তৈরি করে। ফলে গরম কম অনুভূত হয়।
সানস্ক্রিন প্রতিদিন
বাইরে বের হতেই হবে যাদের, তাদের বিউটি রুটিনে সানস্ক্রিন যোগ করলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা পাবে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে রোদে পোড়া ভাব থাকবে না, কালো দাগ দূর করার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। পণ্যটি কেনার সময় সেটি কত এসপিএফ সম্পন্ন, সে সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিতে পারলে ভালো।
ঘৃতকুমারীর গুণে
অ্যালোভেরা অর্থাৎ ঘৃতকুমারী ব্যবহার করলে ত্বকের সানবার্নের দাগ কমে আসবে ধীরে ধীরে। একই সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করাও সম্ভব হবে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে উপকার
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একটি রাসায়নিক উপাদান, যার উপস্থিতিতে ত্বক ভালো থাকে। এটি কাজ করে ত্বককে ভেতর থেকে সারিয়ে তুলতে। ত্বকে কোনো ক্ষতিকর র্যাডিক্যাল উপস্থিত থাকলে সেগুলো দূর করে। ইনফ্লামেশন রোধ করে। তাই এই কেমিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট সমৃদ্ধ ময়শ্চারাইজার ব্যবহারে ত্বক সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনা বেশি।
শীতলতার স্পর্শে
অতিরিক্ত গরমে ত্বকে বরফের ছোঁয়া শীতল পরশ বুলিয়ে যাবে। শুধু পানিতে তৈরি বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তার সঙ্গে প্রাকৃতিক উপাদানের সঙ্গত ত্বকের যত্নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হতে পারে।
গোলাপ ফুলের নির্যাসমিশ্রিত গোলাপজল ফ্রিজে রেখে বরফ করে নিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রাকৃতিক এই উপাদান স্কিন টনিক হিসেবে কাজ করে। তাই ত্বক যেমন শীতল হবে, তেমনি রক্তচলাচল এবং ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়াবে।
গ্রিন টির নির্যাস বরফ করে ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখের চারপাশে ব্যবহার করা হলে চোখের ফোলা ভাব অর্থাৎ পাফিনেস কমে আসবে। এমনকি নিয়মিত ব্যবহারে ডার্ক সার্কেল কমাতেও কাজ করে বলে জানা যায়। শসার রস আইস কিউব করে ত্বকে ব্যবহার করলে বলিরেখা কমে আসে। আবার ত্বকও থাকে ঠান্ডা।