skip to Main Content

তনুরাগ I রেইন-রুটিন

বৃষ্টির পানির সংস্পর্শে সৃষ্ট সব ত্বক সমস্যা থেকে সুরক্ষায়। মৌসুমকে আরও উপভোগ্য করে তুলতে

বৃষ্টি কার না ভালো লাগে! কিন্তু এর পানি যে অজান্তেই ত্বকের অনেক রকম ক্ষতি করে দিতে পারে, তা হয়তো অনেকের অজানা। আবহাওয়া উপভোগ্য হলেও এর প্রভাবে ত্বক ও চুলের নানান সমস্যা নিয়ে ভীষণ চিন্তায় পড়তে হয়। কারণ, বৃষ্টির পানি আরামের পাশাপাশি ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, ফাঙ্গাল ইনফেকশনের মতো নানা সমস্যার উদ্রেক করে। তবে এগুলোর সমাধান খুব যে কঠিন, এমন নয়। দরকার সচেতনতা। আর বছরের বাকি সময়ের তুলনায় বাড়তি যত্ব এবং প্যাম্পারিং। খুব ভালো হয় যদি সম্পূর্ণ শরীরের যত্বের একটা রুটিন করে নেওয়া যায়। এতে মৌসুমের বৃষ্টি যেমন উপভোগ করা যাবে, তেমনি এর ফলে সৃষ্ট ত্বক বিপর্যয় থেকে নিজেকে বাঁচানো সম্ভব হবে।
ডু দ্য ডিটক্সিং
বর্ষায় ত্বকযত্ব রুটিনের প্রধান দিক হলো এটি পরিষ্কার রাখা। মেঘলা আবহাওয়ায় দিন আর্দ্র থাকে, ফলে সহজে এ সময় ধুলো-ময়লা ত্বকে আটকে যায়। সমস্যা শুরু সেখান থেকেই। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে তিন বেলা ত্বক পরিষ্কার করা চাই। সবচেয়ে সহজ সমাধান হলো, বাড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সোজা শাওয়ারে ঢুকে যাওয়া। বর্ষার ত্বকজনিত সমস্যাগুলো দূর করবে এমন কোনো ভালো ব্র্যান্ডের একটি ডিটক্সিফাইং বডি ওয়াশ ব্যবহার করা। এমন বডিওয়াশ যাতে সাধারণত অ্যালোভেরা, অলিভ অয়েল ও গ্লিসারিনের মতো প্রাকৃতিক উপাদান উপস্থিত থাকে; যা শরীরকে পরিষ্কার করার পাশাপাশি বৃষ্টিজনিত যেকোনো ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষায় সহায়তা করে। পাশাপাশি গ্লিসারিন ও অলিভ অয়েল ত্বককে নরম, উজ্জ্বল ও মসৃণ করতেও দারুণভাবে কার্যকর। তা ছাড়া গ্রিন টির নির্যাসযুক্ত বডিওয়াশও ব্যবহার করা যেতে পারে। এতেও ত্বক ফ্রেশ থাকবে।
এক্সারসাইজ এক্সফোলিয়েশন
ত্বক পরিষ্কার করার অর্থ হলো মৃত ত্বককোষ ও ধুলোবালিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া ছিদ্রগুলো ভালোভাবে সাফ করা। কারণ, এর থেকেই মূলত ব্রণ সৃষ্টি হয়। তাই ত্বককে বর্ষাকালের জন্য প্রস্তুত করার পরবর্তী পদক্ষেপ হলো নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন। কাজটি ঘরে বসেই করা সম্ভব। ব্যবহার করা চাই ভালো মানের একটি এক্সফোলিয়েটিং বডি পলিশ স্ক্রাব। খুব ভালো হয় যদি তাতে অ্যালোভেরা এবং কিউই বীজের মতো উপাদান থাকে। কারণ, স্ক্রাবের মধ্যে থাকা অ্যালোভেরা এবং কিউই বীজ শুধু মৃত ত্বককোষ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে না; ত্বককে আর্দ্র, উজ্জ্বল ও মসৃণ করতেও কাজ করবে।
ময়শ্চারাইজিং মাস্ট
অনেকে ভাবেন, যেহেতু বর্ষার সময় বাতাস অতিরিক্ত আর্দ্র থাকে, তাই এ সময় ত্বকযত্বের রুটিনে ময়শ্চারাইজার এড়িয়ে যাওয়া যাবে। ধারণাটি ভুল। বরং বলা যায়, এই ঋতু ত্বক ময়শ্চারাইজ করা এবং হাইড্রেটেড রাখার কাজটিকে আরও বেশি প্রয়োজনীয় করে তোলে। ত্বকের সতেজতা, উজ্জ্বলতা এবং সারা দিন আর্দ্রতা নিশ্চিত করতে দিনে বেশ কয়েকবার ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা খুব জরুরি। বেছে নেওয়া যেতে পারে ল্যাভেন্ডার যুক্ত ময়শ্চারাইজিং জেল। এই ধরনের নন-স্টিকি জেল ময়শ্চারাইজার ত্বককে ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধে ফুরফুরে রাখবে।
ঢিলেঢালা পোশাকে
আঁটসাঁট পোশাকে ত্বকের শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। তাই সঠিক যত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি এটাও খেয়াল রাখা জরুরি। কীভাবে খেয়াল রাখা যায়? ত্বকের লোমকূপগুলো যেন শ্বাস নিতে এবং ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে এ সময় সিনথেটিক কাপড় ও মোজা পরা এড়িয়ে চলা চাই। অনেকে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে সুতির বদলে সিনথেটিক কাপড়কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। অথচ গবেষকদের মতে, ফুসকুড়ি, অ্যালার্জি এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যা এড়াতে এ সময় সুতি ও লিনেন পোশাক ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
হাত ও নখের সুস্থতায়
পায়ের মতো, হাতের ত্বকও বর্ষায় অ্যালার্জি ও সংক্রমণের শিকার হয়। তাই বাড়তি যত্ব নেওয়া দরকার। প্রাথমিকভাবে হাত-নখ নিয়মিত পরিষ্কার করাই সবচেয়ে জরুরি। যেমন বাইরে থেকে ফিরে হালকা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলে মাখতে হবে ময়শ্চারাইজ। হাত আর্দ্র এবং জীবাণু থেকে সুরক্ষিত রাখতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হ্যান্ড ক্রিমের মতো ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে একসঙ্গে দুটি কাজ হবে। ভিটামিন ই, গ্লিসারিন এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানযুক্ত এই ধরনের ক্রিম একই সঙ্গে হাতকে আর্দ্র রাখার পাশাপাশি জীবাণু থেকেও সুরক্ষা দেবে; যা এই মৌসুমে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন!

 রত্না রহিমা
মডেল: ফাবলিহা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top