লোগো I লিগ্যাসি জিভাঁসি
ফরাসি কতুর। শতভাগ লাক্সারি ফ্যাশন ব্র্যান্ড। শুরুটা ১৯৫২ সালে। হাই ফ্যাশনের ভিত্তিপ্রস্তর। গ্রাউন্ডব্রেকিং ক্লদিং লাইন। তারকাদের তারকা বলা চলে। কেন? কারণ, অড্রে হেপবার্ন, গ্রেস ক্যালি, জ্যাকি কেনেডি—এদের সবার প্রিয়র তালিকায় করেছে রাজত্ব। ফ্যাশন ডিজাইনার হিউবার্ট জিভাঁসির বয়স যখন মাত্র চব্বিশ বছর, তখন তিনি দুয়ার খোলেন এ লাক্সারি ব্র্যান্ডের। যাত্রার শুরুয়াত প্যারিসে। তখন অফিশিয়াল নাম ছিল ‘হাউস অব জিভাঁসি’।
ইতিহাস
বিশ্ববিখ্যাত এই লেবেলের প্রথম লোগো তৈরি হয়েছিল পিয়েরে দিনান্দের হাতে। ইংরেজি শব্দের বোল্ড উপস্থাপনে তৈরি। কাট-কাট, ছাঁট-ছাঁট। শৈল্পিক নয়; বরং নিয়মতান্ত্রিক। একের পর এক অক্ষর বসিয়ে তৈরি এই লোগো পরিবর্তিত হয় ২০০৩ সালে। দীর্ঘ ৫১ বছর পরে। কারণ হিসেবে জানা যায় ডিটেইলিংয়ের অভাবের কথা। ফ্যাশন জগতের সবকিছুই দেখা হয়ে থাকে মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে। করা হয় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিশ্লেষণ। এমন দুনিয়ায় লোগো কতটা দর্শনদারি আর কতটা গুণবিচারি, তা নিয়ে হিসাব-কিতাব তো হবেই। নান্দনিক লোগোর খোঁজ শুরু হয় সেখান থেকেই। শেষমেশ তৈরি করেন পল বার্নস। পেশায় তিনি গ্রাফিক ডিজাইনার এবং টাইপোগ্রাফার। লোগো সাজান মিনিমালিস্টিক ডিজাইনে। জিভাঁসি শব্দটির প্রথম অক্ষর ‘জি’ ব্যবহৃত হয়েছে এই লোগোতে। একটি চতুর্ভুজে চারদিকে মুখ করে চারটি জি-এর অবস্থান। জ্যামিতিক এই নকশায় ঐক্য আর প্রতিসাম্যের সহাবস্থান। ব্র্যান্ডটির সাত দশকের পদচারণার দৃপ্ত প্রকাশ। সাবলীল। লিরিক্যাল। অক্ষর আর জ্যামিতির মেলবন্ধনে নতুন প্রাণসঞ্চারই ছিল পলের প্রচেষ্টা।
টাইপোগ্রাফি
ইন্টারলিংকড ‘জি’-এর অবস্থানে ক্যালটিক নটস দৃশ্যমান। যেন লুপে আটকে আছে একে অপরের সঙ্গে। খটমট শব্দের বুননে তৈরি এই নটের দর্শন বড্ড গভীর। বাস্তব জীবন আর অনন্তকালের সন্ধিকে বোঝায় এটি। খ্রিস্টধর্ম মতে পবিত্রতার প্রতীক। টাইপোগ্রাফিতে ব্যবহার করা হয়েছে মিস্টার ইভস মোড বোল্ড ফন্ট। বাহুল্যহীন। ব্যবহৃত চারটি ‘জি’তেই এই ফন্টের ব্যবহার; যা একই সঙ্গে সরলতা ও সুন্দরতাকে আলিঙ্গন করতে সক্ষম। ফ্রেঞ্চ এলিগেন্স। আর ডিটেইলিংয়ে মনোযোগ। কতুর ক্রেতা যেমন মনোযোগী হন নকশার সূক্ষ্মতা খুঁজতে, তেমনি নিখুঁত নকশা করেছেন ডিজাইনার পল।
কালার স্কিম
সাদার জমিনে কালোর অবস্থানে সম্পন্ন হয়েছে নকশা। পরিশীলতায় পরিপূর্ণ। অতিরঞ্জনের আধিক্য নেই মোটেই। জটিলতাহীন। স্পষ্ট উপস্থাপন।
দর্শন
জিভাঁসির লোগো তৈরির ক্ষেত্রে পাঁচটি বিষয় মৌলিক দর্শন হিসেবে কাজ করেছে। এগুলো হচ্ছে সরল নকশায় গড়ে তোলা আভিজাত্য, ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার, নির্ভুলতা, ফরাসি প্রথা এবং অভিযোজন করার যোগ্যতা। জিভাঁসির প্রতিটি পণ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় এসব বিষয়। আর সেখান থেকেই অনুপ্রেরণার উৎস।
ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট