নখদর্পণ I ফাইলিং ফ্যাক্ট
রকেট সায়েন্স নয় বটে, কিন্তু স্যালন গ্রেডের সুন্দর নখের জন্য জানা চাই পুরোটা খুঁটিনাটি
রূপচর্চার রুটিনে নখের যত্ন খুব ঘটা করে শেখানো হয় না। পেডিকিউর বা মেনিকিউরের কিছুটা হয়তো শেখা হয় স্যালনে গিয়ে কিংবা পাশের জন যদি কোনো সেবা নেন, তখন। জটিল আর ব্যস্ত লাইফস্টাইলে নখের যত্ন নেওয়া যদি বিলাসিতা মনে হয়, তবে এই নেইল কেয়ারিং স্কিল রপ্ত করলে কিন্তু ক্ষতি নেই। ঘরে বসেই নেইল ফাইলিং নখের হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে দিতে পারে।
ট্রিমিং টাইম
কখনো সেলিব্রিটি ইন্সপিরেশন, কখনোবা ফ্যাশন ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে নখের অবস্থা হয়ে যায় তেরোটা! কারও ত্রিকোণ, কারওবা স্কয়ার, কারও গোল করে কাটা। নখের স্বাভাবিক আকৃতিতে বাধা আনলেই একদিকে যেমন কিউটিকলের পরিমাণ বাড়ে, অন্যদিকে বাড়তি নখের ব্যথা নিত্যদিনকার জীবনকে করে দিতে পারে দুর্বিষহ।
পছন্দসই শেপে নখ রাখতে চাইলে নেইল আর্টিস্টের শরণাপন্ন হতে বাধা নেই। তবে যারা ঘরে বসে নখের ফাইলিং কিংবা স্টাইলিং করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য নখের স্বাভাবিক আকৃতিতে নখ কেটে রাখাই শ্রেয়।
কীভাবে বোঝা যায় নখের স্বাভাবিক শেপ? নখের একেবারে গোড়ার দিকে থাকে নেইল মুন। এই মুনের আকৃতি যদি খানিকটা চ্যাপ্টা চাঁদের আকৃতির মতো হয়, তবে আপনার নখও কাটা চাই ঠিক একইভাবে। অর্থাৎ নখের দুপাশের কোনা গভীরভাবে কাটা যাবে না কোনোভাবেই। আবার নেইল মুন যদি থাকে গোলাকৃতি, তবে নখের শেপ বুঝে নখ কাটা চাই কিছুটা গোল করেই। এ ছাড়া আমন্ড কিংবা স্কয়ার নেইল মুন থাকলে নখের আকৃতি সে অনুযায়ী করে নেওয়া যেতে পারে।
ফাইলিংয়ে প্রয়োজনীয়
নেইল ফাইল
বাফার
বোর্ড ফাইল
মোড অন
শুধু কার্যসিদ্ধি করতে চাইলে যেভাবে ইচ্ছা ফাইলার দিয়ে ঘষে নেওয়া যেতে পারে নখের অগ্রভাগ। তবে ঘরে বসে স্যালন স্টাইল নেইল ফাইলিংয়ে খাটানো লাগতে পারে ছোট ছোট কিছু টিপস। এ ক্ষেত্রে প্রো হতে চাইলে সেলিব্রিটি নেইল আর্টিস্ট সারাহ গুগলিয়ানোর বাতলে দেওয়া পথ বেছে নেওয়া যেতে পারে।
নখকে দুভাগে কল্পনা করে নিতে হবে। শুরুটা করা চাই নখের দুপাশ থেকে। অর্থাৎ প্রথমে নখের বাঁ পাশ থেকে ফাইল করে মাঝ বরাবর, এরপর ডান পাশ থেকে ফাইল করে আবার মাঝ বরাবর আসতে হবে; বাইরের দিক থেকে ভেতরের দিক—এই নিয়ম ফলো করেই শুরু করা যেতে পারে নেইল ফাইলিং।
স্যালনে হয়তো ফোনে কিংবা রিল্যাক্সেশনে ব্যস্ত থাকায় খেয়াল করা হয় না, নেইল আর্টিস্টরা ফাইলিংয়ে যে সময় ব্যয় করেন, তার ২০ শতাংশ সময়ও নেইল পেইন্ট অ্যাপ্লিকেশনে ব্যয় করেন না। তার মানে প্রিপারেশনই সুন্দর নখ পাবার চাবিকাঠি। নেইল পেইন্ট সঠিকভাবে বসাতে চাইলে নেইল ফাইল হওয়া চাই একদম অন-পয়েন্ট। তাই তাড়াহুড়ো করা যাবে না কোনোভাবেই। সময় নিয়ে যথাযথভাবে সারার আরেকটা টোটকা হলো—ধরে নিতে হবে, নিজের নয়; বরং অন্যের নেইল ফাইলিং করে দেওয়ার কাজ নেওয়া হয়েছে হাতে। সে ক্ষেত্রে খানিকটা অসুবিধা হলেও আঙুল ঘুরিয়ে একটু উঁচু করে ধরে রেখে ফাইল করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। নখের কোনাগুলোর একটু বিশেষ যত্ন নেওয়াই লাগে; কারণ, কিউটিকল কিংবা ইন-গ্রোন নেইল তৈরি হয়ে লুককে যেমন নষ্ট করে দিতে পারে, তেমনি নখে ব্যথার উদ্রেকও করতে পারে।
নখের স্বাভাবিক অবস্থা থেকে নখকে স্যালন স্টাইলে শাইন করাতে নেইল বাফিংয়ের এই ধাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নখ একটু শক্ত হলেও আসলে ত্বকেরই অংশ; তাই অতিরিক্ত ঘষামাজা করে শাইনি ভাব আনার ব্যর্থ প্রয়াস না করাই ভালো। নেইল আর্টিস্টরা নেইল বাফিংয়ের ক্ষেত্রে ২৮০ অথবা ৫০০ গ্রিটের নেইল বাফারের ব্যবহার বেশি করেন। নিজে নেইল বাফ করতে চাইলে বেছে নেওয়া যেতে পারে নমনীয় কোনো বাফার। প্রথমে নখের কোনাগুলোকে স্মুথ করে, আঁকাবাঁকা কোনা থাকলে তা সুন্দরভাবে বাফ করে নিতে হবে। নখের রাফ এরিয়াগুলোর দিকে এ সময় বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন।
ভেজা নখ কাটা সহজ হলেও এ অবস্থায় কখনো বাফ করা উচিত নয়। আর্দ্র অবস্থায় নখের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় করে নেওয়া যেতে পারে। এতে নখ ভেঙে যাবে না। এ ছাড়া যারা প্রথমবারের মতো নেইল ফাইল করছেন, তাদের জন্য একটা সহজ অপশন হতে পারে নখকে অর্ধচন্দ্রাকার শেপে ফাইল করা। মেনিকিউরে খুব একটা পারদর্শী না হলেও এই স্টাইলে নখ খারাপ দেখানোর শঙ্কা নেই বললে চলে।
বাড়িতে বসে মেনিকিউর করতে নেইল আর্টিস্টদের মতো প্রো না হলেও চলবে। দরকারি টুলস, যথাযথ ট্রিকস অ্যান্ড টিপস জানা থাকলে নিজেই নিজের নখকে সব সময় রাখা যাবে স্যালন রেডি।
বিদিশা শরাফ
ছবি: সংগ্রহ
