ফোকাস I Unapologetically Feminine
লাক্স সুপারস্টার শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়; প্রতিভা বিকাশের এক দুর্দান্ত প্ল্যাটফর্মও। এবারের আয়োজনে হাজারো প্রতিযোগীকে টপকে এই আলোকোজ্জ্বল মঞ্চের মাঝখানে এখন দাঁড়িয়ে আছেন শীর্ষ আট প্রতিযোগী। তাদের ব্যক্তিজীবন, প্রস্তুতি, প্রতিযোগিতা ঘিরে ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার নির্যাস জানা যাক তাদেরই বয়ানে
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব ও জুয়েলারি: আনজারা
ছবি: কৌশিক ইকবাল
তিস্তা পাল
আমি বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হয়েও মায়ের আদর-যত্নে বেড়ে উঠেছি। কৈশোরে বাবাকে হারিয়েছি। বাবার ইচ্ছা ছিল আমাকে পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ শেখানোর। সেই সুবাদে অল্প বয়সে নাচ শিখেছি; পাশাপাশি অভিনয়কেও ভালোবেসে ফেলেছি। ছোটবেলা থেকে আমি সংস্কৃতিমনা। বাবাকে হারানোর পর স্বভাবতই পড়াশোনায় এবং ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। একপর্যায়ে পরিবার নিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে পড়তে হয়েছিল। সেই প্রতিকূল দিনগুলোতে মায়ের সঙ্গে শক্ত হাতে পরিবারের হাল ধরার চেষ্টা করেছি।
লাক্স সুপারস্টার ঘিরে আমি আলাদা কোনো প্রস্তুতি নিইনি। ছোটবেলা থেকে ভালোবাসা নিয়ে নাচ ও অভিনয় শেখা রপ্ত করেছি বলে বাড়তি আত্মবিশ্বাস সঙ্গী হয়েছিল। এই প্ল্যাটফর্মকে নিজের মেধা ও গুণ প্রকাশের, নিজ যোগ্যতা প্রমাণের এবং বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা নেওয়ার সর্বোত্তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করি।
মেধা, বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস এবং এর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিষয়; বিশেষ করে অভিনয় ও নাচে পারদর্শিতা আমার বিশেষ যোগ্যতা বলে মনে করি। লাক্স সুপারস্টারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সফল অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী হিসেবে প্রকাশ করতে চাই। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিজেকে অন্যদের কাছে আদর্শ হিসেবে দেখতে চাই।
সাদিয়া ইসলাম মৌ
আমার জন্ম যশোরে। বাবা সেনাবাহিনীতে থাকার সুবাদে শৈশব ও বেড়ে ওঠা দেশের বিভিন্ন জেলায়। এই ভ্রমণশীল জীবনের অভিজ্ঞতা আমাকে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে শিখিয়েছে। আমার হোমটাউন রাজশাহী, যেটিকে সব সময় নিজের শিকড়ের মতো মনে হয়। সব মিলিয়ে নানা পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সহজাত সক্ষমতার জোরে আমি হয়ে উঠেছি যেকোনো লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত।
লাক্স সুপারস্টারে আমার অংশগ্রহণের প্রস্তুতি ছিল ভেতরের সাহস, আত্মবিশ্বাস এবং নিজেকে উপস্থাপন করার আগ্রহ দিয়ে গড়া। প্রতিদিন নিজেকে আরও ভালোভাবে তুলে ধরতে কাজ করেছি। হোক সেটা কথা বলায়, পারফরম্যান্সে কিংবা নিজেকে সাজানোর ক্ষেত্রে। কখনো কোনো ব্যাপারে এতটুকু দ্বিধাকে প্রশ্রয় দিইনি।
লাক্স সুপারস্টার আমার জন্য নিজেকে চিনে নেওয়া, স্বপ্নকে স্পর্শ করা এবং কোটি মানুষের কাছে নিজের পরিচয় তৈরি করার এক অসাধারণ সুযোগ। আত্মবিশ্বাস, ইতিবাচক মানসিকতা, পরিশ্রম করার সদিচ্ছা এবং মানুষের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করার ক্ষমতা আমার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা বলে মনে করি। এই যোগ্যতাগুলো আরও ঝালিয়ে নেওয়ার, আরও শাণিত করার সুযোগ আমাকে দিয়েছে এই মঞ্চ।
লাক্স সুপারস্টার আমাকে যে প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে, তা ব্যবহার করে মডেলিং ও অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান তৈরি করতে চাই। একই সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চাই, যেন তারা নিজেদের স্বপ্নকে সাহসের সঙ্গে অনুসরণ করতে পারে।
আমিনা ইসলাম
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। শৈশব থেকে নাচ, অভিনয় ও পারফর্মিং আর্টসের প্রতি রয়েছে গভীর ভালোবাসা। ‘লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন!’—এই তিন শব্দ আমাকে সব সময় রোমাঞ্চিত করে। পরিবারের পূর্ণ সমর্থন, ভালোবাসা এবং নিজের আগ্রহ আমাকে করে তুলেছে আরও আত্মবিশ্বাসী।
লাক্স সুপারস্টারে অংশ নিতে বহুদিন ধরে নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত করেছি। নিয়মিত মিরর প্র্যাকটিস, স্ক্রিপ্ট রিডিং এবং ক্যামেরার সামনে আত্মবিশ্বাস তৈরির জন্য করেছি কঠোর অনুশীলন। শারীরিক ফিটনেসের পাশাপাশি কণ্ঠের ওপরও দিয়েছি জোর। জানতাম, এখানে শুধু সৌন্দর্য নয়; প্রতিভা ও ব্যক্তিত্বকেও প্রমাণ করতে হয়। আমার কাছে লাক্স সুপারস্টার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার একটি অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম। এটি নারীর ক্ষমতায়ন ও আত্ম-আবিষ্কারের এক শক্তিশালী মঞ্চ, যেখানে একজন নারী তার প্রতিভা, সাহস ও দক্ষতাকে পুরো দেশের সামনে তুলে ধরতে পারেন। এই প্রতিযোগিতা আমাকে শেখার মানসিকতা, নেতৃত্ব ও পেশাদারত্বের গুরুত্ব শিখিয়েছে।
দৃঢ় মানসিকতা ও আত্মবিশ্বাস আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। খুব দ্রুত নতুন কিছু শিখতে পারি এবং চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। অভিনয়, নাচ ও উপস্থাপনার ক্ষেত্রে সব সময় আত্মবিশ্বাসী। কঠোর পরিশ্রম করি এবং যেকোনো টিমের সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করতে পারি। মিডিয়ার প্রতি ভালোবাসা, ইতিবাচক মনোভাব এবং কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতাই আমাকে সবার চেয়ে আলাদা করে তুলেছে।
লাক্স সুপারস্টার থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ ও পরিচিতি ব্যবহার করে ভবিষ্যতে নিজেকে সফল অভিনেত্রী এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে দেখতে চাই। আমার স্বপ্ন এমন চরিত্রে কাজ করা, যা দর্শকদের অনুপ্রাণিত করবে এবং সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেবে। শুধু গ্ল্যামার নয়; চ্যালেঞ্জিং ও অর্থবহ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে চাই। সিনেমা, নাটক বা ওটিটি—সব মাধ্যমে নিজের প্রতিভা দেখাতে এবং মিডিয়াকে শুধু গ্ল্যামার নয়, দায়িত্বের জায়গা হিসেবেও গ্রহণ করতে চাই।
ফারিস্তা সালিম
চট্টগ্রামে জন্ম আমার। ছোটবেলা থেকে নাচ ও বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলাম। তবে পরিবারে কিছুটা কঠোরতা থাকায় কিশোরী বয়সে ওই সব চর্চা থেকে একটু দূরে সরে আসি। অবশ্য ভেতরে স্বকীয়তা তৈরির তাগিদ বরাবরই ছিল। সেই স্বপ্নই আমাকে এগিয়ে নিচ্ছে।
আমার কাছে লাক্স সুপারস্টার শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়; নিজস্ব পরিচয় তৈরি করার এবং ক্যামেরার সামনে নিজ স্বপ্ন অনুসরণের একটি সুযোগও। পাশাপাশি আগামীর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চাই, যেন তারা নিজের ওপর বিশ্বাস রাখে এবং কখনো নিজের স্বপ্নকে না হারায়।
নিজের চোখে আমি একজন জেদি, উদ্যোগী ও অদম্য মনোবলের মানুষ। ধৈর্যশীলও। কখনো হাল ছাড়ি না। যখন কোনো কাজে নিজেকে উৎসর্গ করি, কোনো চ্যালেঞ্জই আমাকে থামাতে পারে না। নতুন কিছু শেখার সুযোগ পেলে দ্রুত শিখে নিজেকে আরও উন্নত করি। আমার এই জেদ, ধৈর্য, শেখার আগ্রহ এবং কখনো হাল না ছাড়ার মনোভাব আমাকে প্রতিটি পরিস্থিতিতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে এবং নিজের স্বপ্ন ও লক্ষ্য অর্জনের পথে অনুপ্রাণিত রাখে।
লাক্স সুপারস্টার আমার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম এবং শেখার সুযোগ। এতে অংশ নিয়ে অভিনয়ের প্রতি আরও গভীর ভালোবাসা আবিষ্কার করেছি এবং অনেক কিছু শিখেছি, যা আমার এই প্রতিভাকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণের আগ্রহ আরও বাড়িয়েছে। এই অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে নিজের শক্তিশালী পরিচয় তৈরি করতে এবং অভিনয় ও কনটেন্ট ক্রিয়েশন চালিয়ে যেতে চাই। পাশাপাশি আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চাই, যে কেউ পরিশ্রম ও বিশ্বাসের মাধ্যমে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।
নাযাহ্ নাওয়ার বিনতে নুরুল
আমার জন্ম পাবনায়, বেড়ে ওঠা ঢাকায়। একদিকে মাটির কাছাকাছি গ্রামীণ জীবন, অন্যদিকে ছুটে চলা শহরের বাস্তবতা—এই দুটি ভিন্ন পরিবেশ আমাকে ভিন্নভাবে গড়ে তুলেছে। গ্রাম ও শহর—দুটো দিকই সংবেদনশীল করে তুলেছে আর শিখিয়েছে যে, প্রত্যেক মানুষের জীবনই তার নিজের লড়াইয়ে পূর্ণ।
লাক্স সুপারস্টারে অংশগ্রহণের জন্য আমার প্রস্তুতি ছিল একরকম আত্ম-অনুসন্ধান। একদম বাহ্যিক গ্ল্যামারের বাইরেও খুঁজেছি নিজেকে—যে মানুষ ভেতরে আছে, যাকে প্রতিদিন আরও ভালোভাবে বুঝতে চাই। প্রস্তুতি আমার কাছে শুধু স্কিল শেখা নয়; বরং নিজের ভেতরের ভয়, দ্বিধা আর আশা-আকাঙ্ক্ষার মুখোমুখি হওয়া। এই যাত্রা আমাকে শিখিয়েছে, আসল প্রস্তুতি শুরু হয় তখন, যখন আমরা নিজেদের সত্যিকারের সত্তাকে চিনতে শুরু করি। লাক্স সুপারস্টার আমার কাছে যেন এক দরজা, যার ওপারে নিজেকে নতুন করে দেখতে পেয়েছি। এটি শুধু একটি মঞ্চ নয়; বরং একটি সুযোগও—নিজেকে প্রমাণের, ভয়কে জয় করার এবং স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় এনে ধরার সাহস খোঁজার। লাক্স সুপারস্টার আমার আত্মবিশ্বাসের আঁতুড়ঘর।
আমার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা নিজেকে জানি ও শুনি। জানি কখন সামনে যেতে হয়, আর কখন এক পা পেছনে এসে নিজেকে গড়ে নিতে হয়। আমি খুব দ্রুত শিখি; কিন্তু সবকিছু ধৈর্য ধরে বুঝে নিতে ভালোবাসি। বিশ্বাস করি, আত্মবিশ্বাস, সংবেদনশীলতা আর মানুষের সঙ্গে সহজে সংযোগ তৈরি করার ক্ষমতাই আমাকে আলাদা করে তোলে। আমি নিখুঁত নই; কিন্তু প্রতিদিন নিজেকে উন্নত করার আগ্রহ আমার বড় শক্তি।
লাক্স সুপারস্টার প্ল্যাটফর্ম আমাকে শুধু প্রতিযোগী হিসেবে নয়, শিল্পী হিসেবেও গড়ে তুলছে। এখান থেকে পাওয়া প্রতিটি শিক্ষা জীবনে কাজে লাগিয়ে, আরও পরিপূর্ণ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে আগামীর পথে হাঁটার ব্যাপারে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। স্বপ্ন দেখি নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে তোলার, যে শুধু পর্দায় নয়, মানুষের হৃদয়েও আলো জ্বালাতে পারবে।
নুসরাত আফরিন ইয়ুমনা
খুলনায় বেড়ে উঠেছি। শৈশবের শুরু থেকে খুব পড়াশোনাপ্রিয় ছিলাম; একেবারে একধরনের ‘নার্ড’ বলা যায়! পড়াশোনায় সব সময় ভালো ফল করতাম এবং মনোযোগী ছাত্রী ছিলাম। বড় হতে হতে আমার খুব বেশি বন্ধু ছিল না; মাত্র দু-তিনজন। তবে ছোটবেলা থেকে সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলাম। গান শেখার ক্লাস, নাচের ক্লাস, আর্ট ক্লাস—সবকিছুতে অংশ নিতাম। এককথায় আমি ছিলাম পড়াশোনা আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে একদম ব্যস্ত একটি শিশু!
লাক্স সুপারস্টারে অংশ নেওয়ার জন্য আলাদা কোনো প্রস্তুতি ছিল না। আমি তো স্বাভাবিক জীবনই চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ সুযোগটা এলো, আর তাতে একই সঙ্গে অবাক এবং ভীষণ খুশি হয়ে পড়লাম। আমার কাছে এই প্ল্যাটফর্মের তাৎপর্য সত্যিই অনেক বড়। কারণ, আমি অভিনয় ভীষণ ভালোবাসি, আর এই মঞ্চ আমার কাছে নিজেকে গড়ে তোলার, শেখার এবং আরও এগিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ। এখানে অংশগ্রহণ করা মানে নিজের স্বপ্ন ও দক্ষতাকে আরও বড় পরিসরে তুলে ধরার এক অসাধারণ সুযোগ পাওয়া। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, যা ভবিষ্যতের পথচলাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
আমার বিশেষ যোগ্যতার মধ্যে প্রথমেই বলব গান গাওয়ার দক্ষতার কথা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে যেকোনো নতুন কিছু শিখে নিতে পারি। আমি ইতিবাচক ও শান্ত স্বভাবের মানুষ; তাই যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে সহজে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত। এই গুণগুলোই আমাকে আলাদা করে তোলে।
লাক্স সুপারস্টারের অভিজ্ঞতা আমাকে এক নতুন দিগন্ত দেখিয়েছে। ভবিষ্যতে নিজেকে সফল অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখি। শুধু অভিনয়ের ক্ষেত্রে নয়; মানুষের জন্যও ভালো কিছু করতে চাই, যাতে আমার কাজের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়।
রুবাইয়া চৌধুরী
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিলেটে। লাক্স সুপারস্টারে অংশগ্রহণের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ক্যাটওয়াক, স্টাইলিং, অ্যাক্টিং, কনটেন্ট মেকিংয়ের ওপর প্রাথমিক কিছু ধারণা নিয়ে এখানে আসার চেষ্টা করেছি। শরীরচর্চায়ও দিয়েছি বিশেষ গুরুত্ব। যেন কোনো কারণে পিছিয়ে পড়তে না হয়, সেই মনোভাব ধারণ করে শুরু থেকে নিজেকে প্রস্তুত রেখেছি।
লাক্স সুপারস্টারকে আমার প্রতিভা প্রকাশের একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গণ্য করি। তা ছাড়া এখানে অংশ নেওয়ার পর খেয়াল করেছি, এই মঞ্চের গ্রুমিং সেশন আমাকে আমার বেটার ভার্সন তৈরি করতে সহযোগী ভূমিকা রেখেছে। সর্বোপরি প্ল্যাটফর্মটি ইতিমধ্যে আমার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার এবং স্বপ্নপূরণের এক অনন্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে; তাই আমার জীবনে এর তাৎপর্য অপরিসীম।
ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে সৎ ও বুদ্ধিমতী হিসেবেই গণ্য করি। একই সঙ্গে কঠোর পরিশ্রমী ও ধৈর্যশীল। এসব যোগ্যতার পাশাপাশি উচ্চতা ও ক্যামেরা ফ্রেন্ডলি চেহারা আমার বাড়তি গুণাবলি বলে মনে করি। লাক্স সুপারস্টারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে একজন গুণী অভিনয়শিল্পী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চাই। এর পাশাপাশি বাংলাদেশি সিনেমাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি।
বিদুষী বর্ণিতা
২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসে আমার জন্ম। জন্মশহর রাজশাহী; তবে শৈশব থেকে বেড়ে ওঠা ঢাকায়। হস্তাক্ষর, ড্রইং, নৃত্য, সংগীত নিয়ে কেটেছে শৈশবের বেশির ভাগ সময়। অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসার জন্মও তখনই।
লাক্স সুপারস্টারে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু শৈশবেই। নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়—সবকিছু নিয়েই কাজ করেছি। মনে স্বপ্ন বুনতাম, কোনো এক সময় বড় পর্দায় অভিনয় করতে পারব। সেই স্বপ্ন থেকেই অপেক্ষা, আর অপেক্ষার মাঝে প্রচেষ্টা নিজেকে আরেকটু প্রস্তুত করার।
এই মঞ্চ আমার কাছে জীবন অনেকাংশে পরিবর্তনের একটি বড় সুযোগ। এখান থেকে যা যা অর্জন করেছি ও শিখেছি, তা দিয়ে সামনের পথচলায় নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করব। আমার জীবনের উদ্দেশ্য অনুসন্ধানে এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে শান্তির একটি জায়গায় পৌঁছে দিতে যে ভূমিকা এই প্ল্যাটফর্ম রাখছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন।
যেকোনো কাজে নির্দ্বিধায় ঝাঁপিয়ে পড়তে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তা আয়ত্তে আনতে পারি; মনে করি এটিই আমার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা। শিল্পকলার প্রতি অতল ভালোবাসা আর শেখার ক্ষুধা আমার বড় শক্তি। অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা আমার অন্যতম গুণ বলে মনে করি।
লাক্স সুপারস্টার থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করব, তা পুঁজি করে নিজেকে একজন বহুমুখী শিল্পী এবং সমাজের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমার স্বপ্ন—সফল অভিনেত্রী হওয়া। অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা অত্যন্ত গভীর। কাজের মাধ্যমে সমাজের জন্য একজন রোল মডেল হয়ে উঠতে চাই। আমি চাই তরুণ প্রজন্ম আমাকে দেখে শিখুক যে সৌন্দর্য মানে শুধু বাহ্যিক রূপ নয়; বরং অন্তরের সততা, সহানুভূতি আর মানবতা। লাক্স সুপারস্টারের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে এমন একজন মানুষ হতে চাই, যে শুধু নিজের সাফল্যেই থেমে থাকবে না, বরং অন্যদেরকেও তাদের স্বপ্নপূরণে সাহস জোগাবে।
