দেশে রিটেল ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ সুরক্ষা কর্মসূচী নিয়ে এসেছে রিমার্ক এইচবি লিমিটেড। এর আওতায় কোম্পানির খুচরা পর্যায়ের কোনো বিক্রেতার মৃত্যু হলে সমুদয় বকেয়া মওকুফ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ব্যবসায়ী বিগত এক বছরে কোম্পানিকে পণ্য মূল্য বাবদ যে পরিমাণ টাকা পরিশোধ করেছেন তার সমপরিমাণ অর্থ পরিবারকে অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
রিমার্ক এলএলসি ইউএসএ’র অ্যাফিলিয়েটেড রিমার্ক এইচবি সারা দেশে তাদের বিজনেস নেটওয়ার্কিং পার্টনারদের জন্য এ ঘোষণা দেওয়ায় রিটেইল ব্যবসায়ীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রথাগতভাবে সারা দেশে ব্যবসাকে বিস্তৃত করা এবং সরাসরি ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন যে সব খুচরা ব্যবসায়ী, তারা ছিলেন অনেকটা অনাদরে, অবহেলায়। কোম্পানিগুলো এতদিন নিজস্ব পণ্য বিক্রি ও মুনাফা আয়ের হাতিয়ার হিসেবেই তাদেরকে ব্যবহার করে আসছে। অবহেলিত এ খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ী সমাজকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান রিমার্ক-হারল্যান তাদেরকে করে নিয়েছে ‘আপনজন’। কারণ তারাই যে এ ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি। আর তাদের সংখ্যা সারা দেশে ১৪ থেকে ২০ লাখের মতো।
রিমার্ক বরাবরই এ ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এর আগে রিটেইল ব্যবসায়ীদের স্ট্রাটেজিক পার্টনার হিসেবে বরণ করে নিয়েছিল। এবারে ‘আপনজন’ ঘোষণা দিয়ে স্ট্যাটেজিক পার্টনার ও তাদের পরিবারের জন্যও নিয়ে এসেছে কিছু উদ্যোগ, যা বাংলাদেশে শুধু প্রথমই নয় বরং এটি হবে তাদের ব্যবসা ও পরিবার উভয়েরই সুরক্ষা কবচ। কোম্পানির এ উদ্যোগ এ সেক্টরে বিশেষ মাইলফলক হয়ে থাকবে।
শনিবার (১৩ জুলাই ২০২৪) ঢাকার একটি হোটেলে রিমার্কের এ আপনজন কর্মসূচির ঘোষণা দেন কোম্পানির পরিচালক এবং চিত্রনায়ক শাকিব খান। এ সময় তিনি ‘আপনজন’ কর্মসূচির আওতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১৩ জন খুচরা ব্যবসায়ীকে আপনজন হিসেবে বরণ করে নেন।
মেগাস্টার শাকিব খান বলেন, ‘রিমার্ক শুধু একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়, রিমার্ক একটি পরিবার। আমি, আপনি, আমাদের সহকর্মীবৃন্দ সবাই এ পরিবারেরই একেকজন সদস্য। সুবিধা-অসুবিধায় একজন আরেকজনের পাশে থেকে সবাই মিলে সামনে এগিয়ে যাওয়াই এ পরিবারের মূল উদ্দেশ্য। আর সে লক্ষ্যে রিমার্ক চালু করেছে “আপনজন”প্রোগ্রাম। এরফলে আমাদের পরিবারের সেসব সদস্য যারা সারা দেশের মানুষের কাছে আমাদের পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন সে ব্যবসায়ীগন উপকৃত হবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কক্ষ থেকেই আমার ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয়েছিল। দেশের উন্নয়নে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে, মানুষের জীবনের মানউন্নয়নে অথেনটিক পণ্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এই যাত্রা শুরু করেছিলাম। আমাদের একটি ভালোবাসার একটি নাম হয়ে উঠেছে রিমার্ক। আমাদের ভালোবাসার গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে ছড়িয়ে গেছে। রিমার্কের নাম আমরা নিজেদের পণ্য বলে গর্ব করে বলতে পারব। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি দোকানীদের আমরা নিজেদের আপনজন করে নিতে চাই। কারণ তাদের সম্বলই বলেন ওই একটা দোকান, তার পরিবারও নির্ভর করে ওই দোকান বা ব্যবসাকে ঘিরেই। কিন্তু ওই ব্যবসায়ি মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারের স্বপ্ন ও নির্ভরতার জায়গাটাও মারা যায়। এই প্রথম রিমার্ক প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবসায়িদের নিয়ে যে উদ্যোগ নিয়েছে এটি আপনজনের মতোই মহতি উদ্যোগ। ব্যবসায়ীদের পরিবার যেন ভাবে আপনজন হয়ে রিমার্ক তাদের পাশে রয়েছে।’
‘আপনজন’ প্রোগ্রামের আওতায় রিমার্কের পণ্য বিক্রয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিরবচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ, ক্রেডিট সুবিধা, আপদকালীন সময়ে পারিবারিক সহায়তা পাবেন। পাশাপাশি এই প্রোগামের আওতায় থাকা ব্যবসায়ির আকস্মিক মৃত্যুতে চলমান বকেয়া মওকুফসহ এক বছরে পণ্য ক্রয়ের সমপরিমান টাকা পরিবারকে দেয়ার মতো মানবিক নীতি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ‘আপনজন’প্রোগ্রামে রয়েছে আরও নানা সুযোগ-সুবিধা যার মাধ্যমে সারা বছরজুড়ে ‘আপনজন’ সদস্যদের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করে যাবে রিমার্ক এইচবি।
রিমার্কের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মামনুন হাসান ইমন বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকেই এ কার্যক্রম শুরু করেছে রিমার্ক। এর ফলে তাদের পরিবার উপকৃত হবে। বকেয়া পরিশোধের আগে মৃত্যুবরণ করলে পণ্যের কোনো দায়ভার গ্রহণ করতে হবে না পরিবারের সদস্যদের। বিক্রেতাদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেয়ার জন্যই আমাদের এ উদ্যোগ।’
শাকিব খান ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রিমার্কের অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া জনপ্রিয় চিত্রতারকা পরীমনি, বিদ্যা সিনহা মিম, মামনুন হাসান ইমন, তানজিন তিশা, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, পূজা চেরী, মিম মানতাসা ও কেয়া পায়েলসহ আরও অনেক মিডিয়া ব্যক্তিত্বও উপস্থিত ছিলেন।
কেয়া পায়েল বলেন, ‘বিপদে যে পাশে থাকে তারাই আপনজন। আমি নিজেও একজন আপনজন প্রোগ্রামে অংশ নিতে যাচ্ছি। বাংলাদেশে আগে কখোনোই রিটেলাইর পর্যায়ে এভাবে সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসেনি। আশা করছি রিমার্কের এই কাজ আসলেই রিমার্কেবল হয়ে থাকবে।’
পূজা চেরী বলেন, ‘ছোটবেলায় আমরা এইম ইন লাইফ হিসেবে ব্যবসায়ী হতে চাইতাম। হয়তো আমিও আমার মিডিয়ার কাজের শেষে ব্যবসায়ী হব। তাই মনে করি, এটি সব ব্যবসায়ীর জন্য অত্যন্ত ভালো একটি উদ্যোগ। আমি সৌভাগ্যবান, আমি এই উদ্যোগের সাথে রয়েছি, এবং এর অংশ। রিমার্কের এই পথচলা অফুরান থাকুক। আমার সবচেয়ে বিপদের সময় ছিল যখন আমি আামার মাকে হারিয়েছি। তার মারা যাওয়ার পর আমি নিজেকে নিঃস্ব মনে করেছি। এরপর রিমার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। এরপর থেকে আমার মনে হয়েছে আমার অন্যান্য আপন মানুষগুলোর পাশাপাশি রিমার্ককেও সঙ্গে পেয়েছি। আশা করছি এই পথচলা অবিরাম থাকবে।’
পরীমনি বলেন, ‘আপনজন কখোনোই পর হয় না– এ কথা আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি। ছোট ব্যবসায়ীদের হাত ধরে যেভাবে রিমার্ক এগিয়ে নিতে সাহস যোগতে এসেছে এটি অবিশ্বাস্য।’
বিদ্যা সিনহা সাহা মিম বলেন, ‘আমরা কাজ করি আপনজনকে ঘিরেই। সুখের পাশাপাশি দুঃখের সময়ে যারা পাশে থাকে তারাই আমার আপনজন। মানুষের কিছু মুহূর্ত থাকে যেগুলো ভোলার নয়। যারা রিমার্কের পণ্য নিয়ে কাজ করছে তাদের সঙ্গে থাকতে পারাটা অনেক গৌরবের। আমরা একসঙ্গে সবার জন্য আরপরীমনি ভালো কাজ করতে চাই, এজন্য আপনাদেরকে আমাদের পাশে চাই।’
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: রিমার্ক-এর সৌজন্যে