জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস কোম্পানি লিমিটেড সম্প্রতি জেনারেশন ১৭ (ভিডিও) উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছে। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ( ইউএনডিপি) এর সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস কোম্পানি লিমিটেড। ২০৩০ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণে জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ইউএনডিপি’র প্ল্যাটফর্ম এর সাথে স্যামসাং গ্যালাক্সি স্মার্টফোন প্রযুক্তি সহযোগে জেনারেশন ১৭ এক দশকেরও কম সময়ে তরুণদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৭টি অভীষ্ট অর্জনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। যে সব তরুণ বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে তাদের গল্প ও ইতিবাচক কাজকে এ উদ্যোগ ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের প্রেসিডেন্ট ও হেড অব মোবাইল কমিউনিকেশন বিজনেস ড. টিএম রোহ বলেন, ‘এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে এবং অন্যান্যদের সাথে কার্যকরভাবে যুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা গ্যালাক্সি প্রযুক্তি ও আমাদের ভিশনের মাধ্যমে তাদের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরকে তুলে ধরতে পারবো। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আমরা সমন্বিত উদ্যোগে বিশ্বাসী।’
জেনারেশন ১৭ -এর ২০২০ দল চার তরুণ নিয়ে গঠিত হয়েছে, যারা মালি, আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের নানা কমিউনিটিতে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করে কমিউনিটিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে।
ত্রিশ বছর বয়সী আর্জেন্টিনার নাগরিক ম্যাক্সিমো মাজোক্কো ইকো হাউজ প্রতিষ্ঠা করেছে। অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শিক্ষা, স্বেচ্ছাশ্রম, অ্যাডভোকেসি ও এনভায়রনমেন্টাল সার্টিফিকেশন নিয়ে কাজ করে। ২৩ বছর বয়সী মালির নাগরিক সাদিয়া ট্যুরে মালি মুসো নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে যেখানে লৈঙ্গিক সহিংসতা দূরীকরণে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখা হয়। ২৬ বছর বয়সী বাংলাদেশি শমি চৌধুরী (ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিন নিয়ে কাজ করে) তার পরিচালিত বৈশ্বিক সংস্থা অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ (বিশ্বের ২৩টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে) এর মাধ্যমে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিতে কাজ করছে। ২৪ বছর বয়সী জিম্বাবুয়ের নাগরিক তাফারা মাকাজা (উইলিয়ামস কলেজের অ্যাস্ট্রোফিজিকসের এমএ বর্ষের শিক্ষার্থী) পরিবহন, জ্বালানি, কৃষি ও শিক্ষা বিষয়ক সমাধানের ক্ষেত্রে একটি স্টার্টআপ চালু করেছে।
মিলেনিয়ালস এবং জেনারেশন জি প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা রাখছে। তাদের উদ্যম ও আশাবাদী মানসিকতা জলবায়ু পরিবর্তন ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণে নীতি নির্ধারকদের টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করছে। আর এসব ক্ষেত্রে জেনারেশন ১৭ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এখিম স্টেইনার বলেন, ‘তরুণরা উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা ও অ্যাডভোকেট হিসেবে তাদের কাজের মাধ্যমে বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে এগিয়ে যেতে আমাদের সহায়তা করতে হবে, কারণ তারাই সামনের দিনগুলোতে বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। ইতিবাচক ও সিস্টেমেটিক পরিবর্তনের এ সারথিদের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করতে হবে। এ উদ্যোগটি জাতিসংঘের অন্যান্য উদ্যোগগুলোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এবং তরুণদের জন্য জাতিসংঘের ইয়ুথ স্ট্র্যাটেজি: ইয়ুথ ২০৩০-কে শক্তিশালী করবে।’
ইউএনডিপি ও স্যামসাং মেন্টরশিপ ও নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ দেবে এবং গ্যালাক্সি ডিভাইসগুলো তরুণদের কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে এবং তাদের প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসার অগ্রগতির পথকে সুগম করবে। তারা স্যামসাং গ্লোবাল গোলস অ্যাপ (যা স্যামসাংয়ের নতুন গ্যালাক্সি স্মার্টফোন ডিভাইসে আগে থেকে ইন্সটল করা রয়েছে) ব্যবহার করতে পারবে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে ১৭টি বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রাগুলোর উপযোগিতার বিষয়গুলো প্রদর্শন করবে। শিক্ষামূলক কনটেন্টের মাধ্যমে এ লক্ষ্যমাত্রাগুলো নিয়ে সচেতনতা তৈরি করাই এ অ্যাপটির লক্ষ্য এবং এ অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ইউএনডিপি’র তহবিলের জন্য ১ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে।