প্রায় পাঁচ হাজার খ্রিস্টপূর্ব অব্দে তৎকালীন মেসোপটেমিয়াতে তৈরি হয়েছিল চাকা। চাকা আবিষ্কারের মধ্য দিয়েই মানুষ আয়ত্ত করে নিয়েছিল গতিকে। প্রথম দিকে চাকার সঙ্গে গাড়ি যুক্ত করে প্রাণী দিয়ে টানা হতো। ধীরে ধীরে সেটি বিলুপ্ত হয়ে এসেছে ইঞ্জিন। আর এখন তো গাড়িকে স্থলপথ ছেড়ে পানি কিংবা আকাশে ওড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। কিছু কিছু গাড়ি তো চলছে চালক ছাড়াই। তবে গাড়ি যে ধরনেরই হোক না কেন, গাড়ির বডি তৈরিতে যুগে যুগে নানা ধরনের দ্রব্য ব্যবহৃত হয়েছে। ইস্পাত, স্টিল, লোহা, কাঠ আরও কত কী! বহুদিন ধরেই স্টিলকে গাড়ির বডি তৈরি করার জন্য আদর্শ উপকরণ হিসেবে মানা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের গাড়ি নির্মাতারা কাঠ দিয়ে গাড়ি তৈরির কথা এক প্রকার ভুলেই গেছেন। কিন্তু সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় গাড়িতে স্টিলের তুলনায় টেকসই ও কার্যকর কাঠ ব্যবহারের উপায় উঠে এসেছে।
তবে এ গাড়ি তৈরিতে সরাসরি কাঠ কেটে গাড়ির বডি তৈরি করা হবে না, বরং পরিবর্তিত কাঠই গাড়ির জন্য আদর্শ বলে মনে করছেন গবেষকেরা। তারা জানিয়েছেন, কাঠের মন্ড থেকে একটি জৈবিক উপাদান তৈরি করা হয়েছে যা অত্যন্ত মজবুত ও হালকা। এ উপাদান তৈরি করেছেন জাপানি গবেষকেরা। তারা জানিয়েছেন, কাঠের মন্ড থেকে পাওয়া উপাদানটি স্টিলের তুলনায় পাঁচ গুণ শক্তিশালী, কিন্তু উপাদানটির স্টিলের তুলনায় ৮০ শতাংশ হালকা। গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টয়োটার যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিলে কাঠমিশ্রিত এ উপাদান তৈরি করেছে। মজবুত করার জন্য কাঠের মন্ডের সঙ্গে প্লাস্টিকের মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে। কাঠ-প্লাস্টিকের যৌগ দ্বারা তৈরি কাঠামোর গাড়ির নমুনা তৈরির জন্য ইতোমধ্যে চেষ্টা করা হচ্ছে। গাড়িগুলো কবে নাগাদ বাজারে আসবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।