সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হলো ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস’। বর্তমানে পর্যটন খাতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো প্রভাব ফেলছে নানাভাবে। টিকটক এসব প্ল্যাটফর্মের মধ্যে অন্যতম। ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে এবং নতুন জায়গাগুলো তুলে ধরতে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এটি। টিকটকে অভিনব এবং আকর্ষণীয় সব কনটেন্টের মধ্য দিয়ে ভ্রমণের গন্তব্যস্থানগুলো বিশ্বের সকল দর্শকদের কাছে উঠে আসছে। ঘুরতে যাওয়ার জায়গা খুঁজতে আর ভ্রমণ সংক্রান্ত পরামর্শ জানতে টিকটক হয়ে উঠছে অন্যতম একটি প্ল্যাটফর্ম। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এন্টারটেইনমেন্ট ও ভ্রমণ
শুরুর দিকে টিকটক এন্টারটেইনমেন্ট বা বিনোদনমূলক কনটেন্টের জন্য পরিচিত থাকলেও পরবর্তীকালে প্ল্যাটফর্মটির জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এর ভিন্নতা বা বহুমাত্রিক ফিচারের জন্য। টিকটকের ফরম্যাট এবং এর পরিবর্তিত টুলগুলো প্ল্যাটফর্মটিকে ভ্রমণপিয়াসুদের কাছে পছন্দের করে তুলেছে বিশেষভাবে।
টিকটকের দারুণ কিছু ফিচারগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘ফর ইউ’ ফিড যা ইউজারদের আগ্রহ বা ইন্টারেস্ট অনুযায়ী কনটেন্ট সামনে নিয়ে আসে। তাই এটা অনেকটা পারসোনালইজড স্পেসের মতো। নির্দিষ্ট কিছু হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নিচ্ছে প্ল্যাটফর্ম ইউজাররা, যেখানে #DiscoverWithTikTok এবং #traveltok এর মতো হ্যাশট্যাগগুলো ব্যবহার করে ভ্রমণপ্রিয় মানুষরা একত্র হচ্ছে তাদের কনটেন্ট নিয়ে। আর এভাবে ভ্রমণ করতে সকলকে আরও উৎসাহী করে তুলছে এই ‘ফর ইউ’ ফিড।
কনটেন্ট ক্রিয়েটররা তুলে ধরছেন বাংলাদেশকে
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের কনটেন্ট ক্রিয়েটররাও টিকটকে তুলে ধরছে নিজের দেশের সৌন্দর্যকে। ফটোগ্রাফি, সিনেমাটোগ্রাফি এবং শর্ট ফিল্মগুলোর মাধ্যমে এখানে কাজ করছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটররা। নিজের অভিজ্ঞতা বা গল্পগুলো বলার ক্ষেত্রে টিকটকের সৃজনশীলতাকে এমন ক্রিয়েটরদেরকে উৎসাহিত করে তুলছে। বাংলাদেশের অন্যতম কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাফসান আদিজ বিদেশের বৈচিত্র্যের পাশাপাশি তার কনটেন্টে তুলে ধরছেন বাংলাদেশের নানা স্থান। স্থলের প্রাকৃতিক দৃশ্য থেকে শুরু করে সমুদ্র-জলাভূমির অপূর্ব দৃশ্য উঠে এসেছে তার ক্যামেরায়। অন্যদিকে, রনি শারাফাতের মতো কনটেন্ট ক্রিয়েটররা মানুষের জীবনের ক্ষুদ্র মুহূর্তগুলোকে তুলে ধরেন ভিডিওতে। গ্রামীণ জীবনধারা, স্থানীয় রীতি এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের দিকগুলো দেখা যায় তার কনটেন্টে।
টিকটক হ্যাশট্যাগে বাংলাদেশ
টিকটকের মতো গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের চিত্র উঠে আসছে আলাদাভাবে। হ্যাশট্যাগ #amarbangladesh এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা তুলে ধরছেন বাংলাদেশকে নিয়ে বানানো নানান ভিডিও এবং হ্যাশট্যাগটির মাধ্যমে এই পর্যন্ত ১.১ মিলিয়ন ভিডিও পোস্ট হয়েছে। ক্রিয়েটর অনির্বাণ কায়সার এবং ফিল্ম বাই রবিউলের মতো ক্রিয়েটররা দেশের সৌন্দর্য এবং সংস্কৃতিকে তুলে ধরছেন বিশ্বমঞ্চে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের পাশাপাশি, সাধারণ মানুষও তাদের ভ্রমণ এবং ছুটির দিনগুলো শেয়ার করছে এখানে।
হ্যাশট্যাগ #DiscoverWithTikTok
টিকটক সম্প্রতি হ্যাশট্যাগ #DiscoverWithTikTok ক্যাম্পেইন চালু করেছে, যার মাধ্যমে নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের পর্যটন স্থানগুলো খুঁজে পেতে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ট্র্যাভেল-কনটেন্ট ক্রিয়েটররা একসঙ্গে কাজ করছে। ক্রিয়েটর রনি শারাফাত এই হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডে তুলে ধরেছেন তার নেপালের ভ্রমণ। থামেল শহরের রাস্তার দৃশ্য এবং অতঃপর নেপালের অন্যান্য শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আর প্রাকৃতিক দৃশ্যের অসাধারণ মুহূর্ত উঠে এসেছে তার ভিডিওগুলোতে। এ ছাড়া ফুডিশ নামে পরিচিত তানহা ইসলামও তার নেপালের যাত্রা তুলে ধরেছেন এই হ্যাশট্যাগ দিয়ে। ঐতিহাসিক স্থান, কাঠমান্ডুর স্ট্রিট-ফুড ইত্যাদি উঠে এসেছে তার কনটেন্টগুলোতে।
ভ্রমণপ্রেমীদের ট্রেন্ডি কনটেন্ট
টিকটকে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নতুন সব ট্রেন্ড। ট্র্যাভেলিং নিয়ে করা কনটেন্টগুলোও সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। ‘ডেসটিনেশন ডুপস’ তেমনি একটি ট্রেন্ড, যেখানে ক্রিয়েটররা জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে কম পরিচিত স্থানগুলোর সাথে তুলনা করে থাকেন। যেমন একটি বিদেশি সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে কক্সবাজারের বা কুয়াকাটা নিয়ে ভিডিও। অন্যদিকে, ভ্রমণের টিপস, ট্র্যাভেল রুট এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরছেন ইনফ্লুয়েন্সাররা যেটি আবার দর্শক বা ভিউয়াররা সাজেশন হিসেবে গ্রহণ করছেন। কমেন্ট, রিপোস্ট এবং শেয়ার অপশনের মাধ্যমে প্ল্যাটফর্ম ইউজাররা যুক্ত থাকছেন, যার ফলে টিকটকের ট্র্যাভেল কমিউনিটিও আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নতুন স্থান খুঁজতে, কিংবা অভিজ্ঞতা আর ট্র্যাভেল টিপস জানতে টিকটক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এর নতুন সব ফিচার আর ট্রেন্ডের মাধ্যমে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এভাবে পর্যটন খাতকে আরও ত্বরান্বিত করছে গ্লোবাল এই প্ল্যাটফর্মটি।
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: সংগ্রহ