সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপারমার্কেট চেইন ‘কুপ’৷ সুপার শপটির বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড বেশ জনপ্রিয়। দিনের বেশি ভাগ সময় এখানে ফাস্টফুড প্রেমীদের লম্বা লাইন দেখা যায়। সম্প্রতি তারা মুরগি, গরু এবং শূকরের মাংসের পাশাপাশি পোকামাকড় দিয়ে তৈরি ফাস্টফুডও বাজারে ছাড়েছে।যা এখন স্থানীয় ভোজন রসিকদের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে।মজার ব্যাপার হলো, খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলো একে সমর্থন জানিয়েছে৷
সুইস স্টার্ট আপ কোম্পানি এসেনটোর উৎপাদন করা উচ্চ আমিষযুক্ত শূককীট দিয়ে তৈরি হয় এই খাবারগুলো৷ তবে বর্তমানে শুধুমাত্র জেনেভা, বার্ন ও জুরিখের বাছাই করা কিছু দোকানে পাওয়া যাচ্ছে এই খাবার৷
চলতি বছরের মে মাসে পোকামাকড় দিয়ে খাবার তৈরির বিধান রেখে পরিবর্তন হয় দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা আইন৷ এরপরই প্রতিষ্ঠানটি এধরনের উদ্যোগ গ্রহন করে।তবে পোকামাকড় দিয়ে ফাস্ট ফুড তৈরির প্রক্রিয়াটি মোটেই সহজ নয়। সুইস নিরাপত্তা আইন অনুসারে মানুষের খাওয়ার উপযুক্ত করার জন্য কঠোর তত্ত্বাবধানের মধ্যে অন্তত চার প্রজন্ম ধরে বংশবিস্তার করাতে হয় এই পোকাগুলোকে৷
এসেনটোর সহপ্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টিয়ান ব্যার্টশ বলছেন, শূককীটের সাথে ভাত, গাজর, শাক, পেঁয়াজ এবং সামান্য মরিচ মেশালে যা হয়, তা সত্যিকার অর্থেই অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা৷
গত এক দশক ধরেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ, পোকা-ভিত্তিক খাবারের উপকারি দিকগুলো মিানুষের মধ্যে তুলে ধরতে নানা ধরনের সচেতনতা মূলক কাজ করে চলছে৷ এর কারন হিসেবে বলা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা ৯০০ কোটিতে পৌঁছবে৷ খাদ্যের চাহিদার সাথে তাল মেলাতে হলে উৎপাদনও বর্তমানের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হতে হবে৷ আর এই বাড়তি চাহিদা মেটাতে বিকল্প খাদ্যব্যবস্থা হতে পারে নানা ধরনের পোকামাকড়৷
২০১৩ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা এফএও-র এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘পোকামাকড় পরিবেশের খুব কম ক্ষতি করে আমাদের খাবার জোগাতে পারে৷ জীবনযাত্রা ও প্রকৃতির উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে৷ কিন্তু সাধারণ মানুষ এই দিকগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না৷”