স্মার্টফোনের হাই-রেটেড হেলথ অ্যাপ ব্যবহারে আপনি কি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন? চটজলদি পরীক্ষা করে নিচ্ছেন আপনার রক্তচাপ? সাবধান! এ ক্ষেত্রে ভুল হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, বেশির ভাগ সময়েই এই হেলথ অ্যাপগুলো থেকে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত নির্ভুল তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের মতে, বরং এ ধরনের অ্যাপ কেবল একধরনের খেলনা ছাড়া কিছুই নয়।
হেলথ অ্যাপ-সম্পর্কিত ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাফ বক্তব্য, ই-কমার্স নির্ভর দুনিয়ায় পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে অনলাইন শপিংয়ের প্রতি মানুষের নির্ভরশীল হওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু স্বাস্থ্যপরীক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইনের ওপর নির্ভরশীলতা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। আশঙ্কার কথা, মধ্যবিত্ত শহুরে মানুষের মধ্যে এ ধরনের অ্যাপ ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। এমনকি চিকিৎসক ও নার্সরাও এটি শুধু ব্যবহারই করছেন না, পাশাপাশি ভালোমতো র্যাঙ্কও দিচ্ছেন।
জামা ইন্টারনাল মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা বলছে, ২০১৫ সালের জুন মাসে মার্কেট থেকে উঠে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অ্যাপলের আই-টিউন থেকে ইনস্ট্যান্ট ব্লাড প্রেসার অ্যাপ ডাউনলোড করেছিলেন, এমন মানুষের মধ্যে ২৬১ জনের ওপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ওই অ্যাপের সর্বশেষ সংস্করণের র্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে গড় র্যাঙ্ক ফোর স্টার। যদিও প্রায় ৫৯ শতাংশ ইউজারকে ফাইভ স্টার র্যাঙ্ক দিতেও দেখা গিয়েছিল। রিভিউর ক্ষেত্রে ৪২ শতাংশ ইউজার আবার এ ধরনের অ্যাপ সঠিক ফল দিচ্ছে বলে প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেছিলেন। আর অ্যাপের ভ্রান্তির বিষয়ে সরব হয়েছিলেন মাত্র ১০ শতাংশ ইউজার। বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ইউজাররা এ ধরনের অ্যাপগুলো ব্যবহার করেছেন। যেমন রক্তচাপ পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ, কিডনির অসুখ, হার্ট অপারেশনের পরবর্তী সময়ে ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা ইত্যাদি। অথচ এ ধরনের অ্যাপে বিশেষ সতর্কীকরণ উল্লেখ থাকে যে, চিকিৎসার ক্ষেত্রে এর ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। কারণ, এটা মূলত বিনোদনমূলক।
এই গবেষণায় সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, চিকিৎসা জগতের সঙ্গে পেশার সূত্রে সম্পৃক্ত একাংশ এ ধরনের অ্যাপকে রিভিউ র্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য, ডাক্তার-নার্সসহ চিকিৎসা জগতের ব্যক্তিরা এ ধরনের অ্যাপকে হাই-রেটেড রিভিউ র্যাঙ্কিং করালে তার প্রভাব সাধারণ মানুষের মধ্যে পড়তে পারে। যার ফল হতে পারে ভয়ঙ্কর। এই গবেষণার সাফ পরামর্শ, হেলথ-অ্যাপ থেকে দূরে থাকুন, ক্লিনিকে বা হাসপাতালে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করান, চিকিৎসককে দিয়েই চিকিৎসা করান।