কংক্রিটের নগর ছেড়ে একটু হাঁপ ছেড়ে বাঁচতে আমরা গিয়ে উঠি কোনো এক রেস্তোরাঁয়। খানিক গল্প ও খানিক আড্ডায় সময় কেটে যায় বেশ। মনও হয়ে ওঠে চনমনে। কিন্তু লক্ষ করে দেখেছেন, বেশির ভাগ রেস্তোরাঁতেই গান বাজতে থাকে। রেস্তোরাঁর গানগুলো দুই ধরনের শব্দে বাজে। কোনো কোনো রেস্তোরাঁয় উচ্চ শব্দে বাজানো হয়, কোথাও আবার মৃদু। যদি জোরে গান বাজানো হয়, তাহলে ধরে নেবেন রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করেই সেটা করছে। এতে তাদের আর্থিক লাভ আছে।
উচ্চ শব্দে গান বাজালে কাস্টমাররা অনেক দামি খাবারের অর্ডার দিয়ে বসেন। তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়, এমন খাবারও তারা অর্ডার দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণার নিবন্ধে বলা হয়েছে, কোনো রেস্তোরাঁয় যদি জোরে গান বাজানো হয়, তাহলে ক্রেতারাও স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়েন।
সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক দীপায়ন বিশ্বাস স্টকহোমের একটি ক্যাফেতে ওই গবেষণা চালিয়েছেন। তিনি ওই ক্যাফেতে ৫৫ থেকে ৭৭ ডেসিবেলের বিভিন্ন ধরনের গান বিভিন্ন সময়ে বাজিয়ে দেখেছেন। যখন গানের শব্দ জোরে দেওয়া হয়, তখন ২০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেতারা তাদের জন্য ভালো নয়, এমন খাবারের অর্ডার করেছেন। কিন্তু গান যদি ধীরে ধীরে বাজে, তখন সাধারণত ওই খাবারগুলোর অর্ডার তাঁরা দেন না।
‘এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মৃদু লয়ের গান ক্রেতাদের মনে প্রশান্তি আনে আর জোরালো গান ক্রেতাদের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে যায়। গবেষকেরা দাবি করেছেন, ভলিউমের সঙ্গে সরাসরি হৃৎস্পন্দন ও উত্তেজনার প্রভাব আছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভলিউম মানুষের মনে প্রভাব ফেলে। মৃদু শব্দের গানে আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকে এবং ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কিন্তু রক গানের মতো উচ্চ শব্দের গানে উত্তেজনা চলে আসে। মানুষ তখন মাংস, চিজ, বান, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বিয়ারের মতো নানা জিনিসের অর্ডার দিতে থাকেন।
গান দিয়ে রেস্তোরাঁর মালিকেরা ক্রেতাদের আকর্ষণ করে থাকেন। এ পদ্ধতি নতুন কিছু নয়। তবে মানুষের মধ্যে গানের শব্দের প্রভাবের এই গবেষণা একেবারেই নতুন।