রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত শফিউদ্দীন শিল্পালয়ে শুরু হয়েছে শিল্পী কামরুন নাহারের তিন দিনব্যাপি একক চিত্র প্রদর্শনী ‘নিসর্গের চিত্র’।
সোমবার বিকেল চারটায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনাব শাজাহান খান (এম.পি), জনাব রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক (এম.পি)। এছাড়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়েষ্টার্ন গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি জনাব এ.এস.এম. আলাউদ্দিন ভূইয়া।
বাংলাদেশের গ্রাম-বাংলার জীবন ধারার উপর বিভিন্ন মাধ্যমে আঁকা শিল্পীর ৩৫টি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে প্রদর্শনীতে। তিন দিন ব্যাপি প্রদর্শনীটি চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। সকাল ১১ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে প্রদর্শনী।
অনাড়ম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনাব শাজাহান খান (এম.পি.) বলেন, ‘সবুজ শ্যামল আমাদের এই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে আলাদা স্থান করে নিয়েছে ইতমধ্যে। আমাদের গ্রাম-বাংলার নৈসর্গিক চিত্রমালা রঙ-তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী কামরুন নাহার। যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।’
জনাব রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক (এম.পি.) তার বক্তব্যে বলেন, শিল্পী কামরুন নাহারের চিত্রমালায় উঠে এসেছে আমাদের গ্রামীন জীবনের প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি চিত্রকর্মেই দেখা যাচ্ছে গ্রামের অপরূপ চিত্র। প্রথাগত শিল্পী না হয়েও ক্যানভাসে তিনি এঁকেছেন সুজলা-সুফলা বাংলাদেশের স্বকীয় রূপ। এমন একটি দেশের কল্পনাই তো আমরা করি। যেখানে আমাদের শিকড়ে গেঁথে আছে মাটির ঘ্রাণ। আমি তার সাফল্য কামনা করি।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রদর্শনী প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন। শফিউদ্দীন শিল্পালয় ঘুরে দেখা যায়, গ্যালারির দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে শিল্পীর হাতে আঁকা গ্রাম-বাংলার অপরূপ চিত্রমালা। এ যেন শ্যামলিমা বাংলার শৈল্পিক এক রূপ। যেখানে শিল্পী কামরুন নাহারের রঙ-তুলিতে মূর্ত হয়েছে নদীময় গ্রামীন জীবন। নৌকা নিয়ে যাচ্ছেন মাঝি। দিগন্ত বিস্তীর্ণ ধানের ক্ষেত, কৃষকের বাড়িতে খড়ের গাদা, শরতের কাশফুল কিংবা কখনো কখনো গ্রামের বাড়ির উঠোন বা ছনে ছাওয়া ঘর।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন, আর্ট কলেজ থেকে পাশ না করেও নিজ চেষ্টায় শিল্পী কামরুন নাহার আয়ত্ব করেছেন ছবি আঁকার কলাকৌশল। অয়েল, অ্যাক্রেলিক কিংবা যে কোনো মাধ্যমেই ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন মনের ভাব। আশির দশকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। পরবর্তীতে স্বামীর ব্যবসায় যোগ দেন। শখের বসে শিখেছেন অনেক কিছু। করেছেন নানান কাজ। বর্তমানে ছবি আঁকাই তার ধ্যান-জ্ঞান। ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল। সেই প্রেরণা থেকেই এঁকেছেন প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া চিত্রকর্মগুলো।
শিল্পী কামরুন নাহার বলেন, আজকের এই পথ পাড়ি দিতে পেরেছি শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছে শক্তির কারনে। নিজের শখের যায়গাটা বা ভালো লাগার যায়গাটায় ধরে রাখতে চাইলে, একটু কম্প্রমাইস একটু সেক্রিফাইস করে ধৈর্য্যের সাথে লেগে থাকলে একটা না একটা সময় সফলতা আসবেই।