skip to Main Content
স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘জোকার ২, সঙ্গে আরও ২ সিনেমা

পাঁচ বছর আগে ‘জোকার’ সিনেমায় মুগ্ধ দর্শক পরবর্তী সিক্যুয়েল দেখার জন্য কতটা মুখিয়ে আছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। টড ফিলিপসের এই ছবি বিশ্বব্যাপী যে আলোড়ন তুলেছিল, তাতে দ্বিতীয় ছবির আকাঙ্ক্ষা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে আর নয়, এবার সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের সুযোগ ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। ১৮ অক্টোবর ২০২৪ থেকে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে ‘জোকার ২’। যার অফিশিয়াল নাম ‘জোকার: ফোলি আ দ্যু’। যদিও ছবিটি আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পেয়েছে ৪ অক্টোবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে কিছুটা দেরিতে মুক্তি পেয়েছে বলে জানান স্টার সিনেপ্লেক্স কতৃপক্ষ।

‘জোকার ২’-এর পাশাপাশি একই দিনে আরও দুটি হলিউডের ছবি মুক্তি দিয়েছে তারা। কল্পকাহিনিভিত্তিক ভৌতিক ছবি ‘এলিয়েন: রোমুলাস’ এবং ‘ট্রান্সফরমারস’ ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন সংযোজন ‘ট্রান্সফরমারস ওয়ান’। এরইমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো দর্শকদের হলে টানতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

জোকার ২

দুঃখ পেলে তার অট্টহাসি আসে। রাগ, হতাশা সবকিছুরই বহিঃপ্রকাশ সেই হাসি। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সে। পেশায় কৌতুকশিল্পী হওয়া তার পক্ষে তাই সুবিধাজনক ছিল। মানুষ তাকে চিনত পার্টি মাতানো ‘জোকার’ বলেই। তবে নেপথ্যে ছিল স্নায়ুরোগ। যা কেউ বোঝেনি। আমেরিকার বুকে কল্পিত এক শহর প্রান্তের বাসিন্দা, স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আর্থার ফ্লেকের জীবনে ট্র্যাজেডি বয়ে নিয়ে আসে সমাজই। অন্ধকার জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয় সে। ‘জোকার’ হয়ে ওঠে প্রতিবাদের মুখ, অন্ধকারের রাজা। টড ফিলিপসের পরিচালনায় ২০১৯ সালে নির্মিত হওয়া ছবি ‘জোকার’ বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলেছিল। ছবিটি এক বিলিয়ন ডলার আয় করে ইতিহাসের সর্বোচ্চ আয়কারী ‘আর রেটেড’ সিনেমা হয়ে উঠেছিল। ছবির প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন ‘হার’খ্যাত অভিনেতা জোয়াকিন ফিনিক্স। অ্যান্টি হিরো সিনেমা ‘জোকার’ পুরো দুনিয়ার দর্শককে মুগ্ধ করেছে। ডিসির গতানুগতিক আমেজের বাইরে গিয়ে ভিন্ন আঙ্গিকের এ সিনেমা ৯২তম অস্কারে সেরা সিনেমা, সেরা পরিচালকসহ ১১টি বিভাগে পায় মনোনয়ন। সেরা অভিনেতার অস্কার উঠেছে জোকার চরিত্রের অভিনেতা জোয়াকিন ফিনিক্সের হাতে। সেরা অরিজিনাল স্কোর বিভাগেও অস্কার জিতেছে ছবিটি। পরিচালক টড ফিলিপসের কাছে এই নির্মাণ যেমন গর্বের, তেমনই অভিনেতা ফিনিক্সের জীবনেও জোকার চরিত্র এক মাইলস্টোন। যে কারণে অস্কার-মঞ্চে সেরা অভিনেতার সম্মান জিতেছিলেন তিনি। মুগ্ধ দর্শক এতদিন মুখিয়ে ছিলেন পরবর্তী ছবিটি দেখার জন্য। অপেক্ষার পালা শেষ হয়েছে এবার। পর্দায় এসেছে ‘জোকার’। যা মূল ছবির চেয়ে অনেকটাই আলাদা। আরও নাটকীয় এবং সংগীতময়। নাম ‘জোকার: ফোলি আ দ্যু’। প্রথম ছবির মতো এটিও পরিচালনা করেছেন টড ফিলিপস। জোকারের ভূমিকায় এবারও জোয়াকিন। সেই সঙ্গে এ ছবির বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে আছেন জনপ্রিয় গায়িকা লেডি গাগা।

জোকার ২’ মিউজিক্যাল সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। এতে জোয়াকিন ফিনিক্স নানা সমস্যায় জর্জরিত স্ট্যান্ডআপ আর্থার ফ্লেক হিসেবে অভিনয় করেছেন। লেডি গাগা অভিনয় করেছেন ‘হার্লে কুইন’ চরিত্রে। হার্লিন কুইঞ্জেল গোথাম সিটির আরখাম অ্যাসাইলামের একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, যে জোকারের প্রেমে পড়ার পরে হার্লে কুইন নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। ছবিটি এরইমধ্যে বিশ্বের ৭৬টি দেশের ২৫ হাজার ৭৮৮টি স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয়েছে। সবচেয়ে ভালো সাড়া মিলেছে যুক্তরাজ্যে। সেখানে সিনেমাটি ৮ মিলিয়ন ডলার ঘরে তুলেছে। এ ছাড়াও জার্মানিতে ৬.৯ মিলিয়ন, ইতালিতে ৫.৬ মিলিয়ন, মেক্সিকোতে ৫.৫ মিলিয়ন এবং ফ্রান্সে ৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ১৬ অক্টোবর থেকে ছবিটি চীনে মুক্তি পেয়েছে। তার আগে জাপানের হলগুলোতেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

এলিয়েন: রোমুলাস

বহু দূরের এক গ্রহে নিজেদের আবিষ্কার করে তারা। সম্পূর্ণ নতুন এক জগৎ। সেখানে তাদের মোকাবেলা করতে হবে মহাবিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণীদের। এলিয়েনদের নিয়ে এমনই এক গল্পের ছবি ‘এলিয়েন: রোমুলাস’। পরিচালনা করেছেন ফেড আলভারেজ। সিনেমায় ভিনগ্রহের প্রাণীদের মোকাবেলা করবেন ডেভিড জনসন, অর্চি রেনক্স, কাইলি স্পেইনি, ইসাবেলা, স্পাইক ফার্ন প্রমুখ।

এলিয়েন ফ্রাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা ‘এলিয়েন’। ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন রিডলি স্কট। সিনেমাটি দর্শকদের কাছ থেকে দারুণ সাড়া পায়। সেই সাফল্যের পথ ধরে পরবর্তীকালে নির্মিত হয় ‘এলিয়েনস’, ‘এলিয়েন থ্রি’, ‘এলিয়েন রেজারেকশন’ নামে তিনটি সিক্যুয়েল। ২০০৪ সালে প্রিডেটর ও এলিয়েন-এর যৌথ গল্পের সিনেমা। একই বছর ‘এলিয়েন ভার্সাস প্রিডেটর’ সিনেমা মুক্তি পায়। এরপর ‘এলিয়েনস ভার্সাস প্রিডেটর: রিকুয়েম’ মুক্তি পায় ২০০৭ সালে। এলিয়েন-এর প্রিক্যুয়েল সিরিজের প্রথম সিনেমা ‘প্রমিথিউস’ ২০১২ সালে মুক্তি পেয়েছিল। দ্বিতীয় সিনেমা ‘এলিয়েন: কোভেন্যান্ট’ মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। সিক্যুয়েল, প্রিক্যুয়েল এবং ক্রসওভার সিরিজ মিলিয়ে এলিয়েন ফ্রাঞ্চাইজির এ পর্যন্ত মোট ৮টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সিনেমার চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে ১৯৭৯ এবং ১৯৮৬ সালের এলিয়েন চলচ্চিত্রের ঘটনাগুলোর ওপর নির্ভর করে। ছবিটিতে তুলে ধরা হয়েছে মহাকাশ উপনিবেশবাদীদের একটি দল যারা মহাকাশে ক্ষতিসাধন করতে একটি ভয়ংকর জীবনরূপ নিয়ে আসে। তাদের প্রতিরোধ করার বিধ্বংসী সংগ্রামের গল্প নিয়ে এগিয়ে যায় সিনেমাটি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান সাই-ফাই হরর ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পরিচালক ফেড আলভারেজ নতুন প্রজন্মের দর্শকদের কাছে টানার প্রয়োজনবোধ করেন। যদিও গল্পটি কোনো পুরানো চলচ্চিত্রের সাথে সরাসরি সংযোগ করে না, তবে এটি অনুমান করা হয় যে জ্যাকসনস স্টারের মতো উপনিবেশের মানুষের কাজ এবং সংগ্রামের জন্য মরিয়া জীবন যা তৈরি করে তার একটি অংশ। তরুনরা জানে যে তারা তাদের কর্পোরেট মালিকদের জন্য যে অর্থ উপার্জন করে তার একটি পয়সা দেখার আগেই তারা মারা যাবে। সেই ভয়াবহ বাস্তবতা তরুণদের জন্য একটি জটিল পরিকল্পনা নিয়ে আসা খুব সহজ করে তোলে।

ট্রান্সফরমারস ওয়ান

‘ট্রান্সফরমারস’ ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন সংযোজন। আমেরিকান অ্যানিমেটেড সায়েন্স ফিকশন অ্যাকশন সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে হাসব্রো’র ট্রান্সফরমার টয় লাইনের ওপর ভিত্তি করে। এরিক পিয়ার্সনের চিত্রনাট্য থেকে সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন জোশ কুলি। এতে বিভিন্ন চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন ক্রিস হেমসওয়ার্থ, ব্রায়ান টাইরি হেনরি, স্কারলেট জোহানসন, লরেন্স ফিশবার্নসহ আরও অনেক তারকা। ‘দ্য ট্রান্সফরমারস: দ্য মুভি’ (১৯৮৬)-এর পর এটি ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম অ্যানিমেটেড ফিচার সিনেমা।

ট্রান্সফরমার ওয়ান ১১ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রিমিয়ার হয় এবং ২০ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্যারামাউন্ট পিকচার্সের ব্যানারে মুক্তি পায়। এ যাবৎ ছবিটি বিশ্বব্যাপী ১১১.৪ মিলিয়ন আয় করেছে এবং সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক পর্যালোচনা পেয়েছে। হলিউড রিপোর্টার ফ্র্যাঙ্ক শেক চলচ্চিত্রটির পরিচালনা, অ্যানিমেশন, চিত্রনাট্য এবং আবেগের জন্য প্রশংসা করেছেন। তিনি অনুভব করেছেন যে এটি ট্রান্সফরমার ফ্র্যাঞ্চাইজিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে।

ছবির কাহিনিতে দেখা যায়, সাইবারট্রন এমন একটি গ্রহ যেখানে সংবেদনশীল রোবটরা বাস করতে অভ্যস্ত। এনারগন নামক পদার্থ দিয়ে সেখানে জ্বালানী হয় এবং ট্রান্সফরমেশন কগ, ডিভাইস যা তাদের যানবাহনে রপান্তরিত করতে দেয়। আইকন শহরে খনির রোবট ওরিয়ন প্যাক্স একটি সংরক্ষণাগারে লুকিয়ে পড়ে। একটি ডকুমেন্টারি দেখে সে প্রথম বুঝতে পারে সাইবারট্রোনিয়ানরা সরাসরি তাদের স্রষ্টা প্রাইমাসের সৃষ্টি। নিরাপত্তারক্ষীরা ওরিয়নকে ধরে ফেলে, কিন্তু তার সেরা বন্ধু উ-১৬ তাকে জামিন দেয়। এদিকে, সাইবারট্রনের নেতা সেন্টিনেল প্রাইম একটি অভিযান থেকে গ্রহের পৃষ্ঠে ফিরে আসে। নিজে দাবি করে, কুইন্টেসন এলিয়েনদের আক্রমণের বিরুদ্ধে সে লড়াই করেছে। নিজেদেরকে খনি শ্রমিকদের চেয়ে বেশি প্রমাণ করতে ওরিয়ন এবং উ-১৬ জেট প্যাক ব্যবহার করে অবৈধভাবে প্রবেশ করে; কিন্তু হেরে যায়। সেন্টিনেল অসাবধানতাবশত খনির মনোবল বাড়ানোর জন্য তাদের পুরস্কৃত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। ডার্কউইং দুজনকে আবর্জনা পোড়ানোর জন্য পুনরায় নিয়োগ দেয়, যেখানে তারা উদ্ভট ই-১২৭ এর সঙ্গে দেখা করে। আবর্জনার মধ্যে একটি চিপ আবিষ্কার করে তারা যার মধ্যে প্রাইম আলফা ট্রিয়নের কাছ থেকে একটি কষ্টের বার্তা রয়েছে। চারজন অবশেষে অন্যান্য প্রাইমদের মৃতদেহের পাশাপাশি একটি গুহায় একটি নিস্ক্রিয় ট্রিয়নকে খুঁজে পায়। পুনরায় সক্রিয় হওয়ার পরে, ট্রিয়ন প্রকাশ করে যে সেন্টিনেল প্রাইমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং গোপনে কুইন্টেসনদের জন্য কাজ করছে। ট্রিয়ন দলটিকে কগ সরবরাহ করে। তাদের রূপান্তরিত করার অনুমতি দেয়। সেন্টিনেল এবং তার বাহিনী ট্রিয়নকে ধরে এবং হত্যা করে।

  • ক্যানভাস অনলাইন
    ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top