skip to Main Content

এই শহর এই সময় I শৈল্পিক স্নিগ্ধতা

অক্টোবরজুড়ে রাজধানীর শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গন ছিল বিভিন্ন আয়োজনে মুখরিত। গান, চিত্রকলা, নাটকের শৈল্পিক এবং জীবনবোধী পরিবেশনা ও প্রদর্শনী নগরবাসীর মনন শাণিত করেছে নানাভাবে। ছড়িয়েছে শৈল্পিক স্নিগ্ধতার রেশ।

কল্পনার জানালা

৩ থেকে ১১ অক্টোবর। ধানমন্ডির সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে প্রদর্শিত হয় জ্যোৎস্না মাহবুবার দ্বিতীয় একক ছাপচিত্র প্রদর্শনী ‘কল্পনার জানালা’। ৭২টি ছাপচিত্র নিয়ে। রং মিশ্রণের মুহূর্ত থেকে শুরু, ছাপচিত্রের প্রতিটি স্তরে লুকিয়ে আছে বর্ষীয়ান এই শিল্পীর দীর্ঘদিনের সাধনা। এর মধ্য দিয়ে প্রথম একক প্রদর্শনীর তিন দশক পর আবারও তিনি ফিরলেন নিজের শিল্পীসত্তা নিয়ে। জানা যায়, শিক্ষকতা জীবন, পারিবারিক দায়বদ্ধতা আর ব্যক্তিগত সংগ্রামের মাঝেও শিল্প তাকে কখনো ছাড়েনি। সাম্প্রতিক সময়ে করা শিল্পীর ছাপচিত্রগুলোতে ফুটে উঠেছে প্রকৃতি, স্মৃতি ও মানবাত্মার গভীর টানাপোড়েন। রেখা, রং আর টেক্সচারের স্তরে স্তরে ভালোবাসা, সহনশীলতা এবং অন্তরের মুক্তির পথ খুঁজেছেন ৭৩ বছর বয়সী এই শিল্পী।

লালন উৎসব

৯ থেকে ১১ অক্টোবর। ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দো ঢাকার অডিটরিয়ামে পরিবেশিত হলো ‘দ্য হিউম্যান ভয়েস’-এর উদ্বোধনীসহ পাঁচটি শো। এটি একজন নারীর একক লড়াইয়ের গল্প। একটি টেলিফোন আলাপের ভেতর লুকিয়ে থাকা হাজারো আবেগ, অপূর্ণতা আর হৃদয়ভাঙার ব্যথা নিয়ে সাজানো। নাট্য সংগঠন নিনাদের প্রথম প্রযোজনা এটি। ফরাসি কবি, কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও নাট্যকার জ্যঁ ককতো রচিত গল্প অবলম্বনে বাংলা অনুবাদ ও নাট্য রূপান্তরের পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রজ্ঞা তাসনুভা রুবাইয়াৎ। একক অভিনয় করেছেন সাদিকা স্বর্ণা। এর গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্রটি নিজ প্রেমিকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছে শেষবারের মতো। অন্য এক নারীকে সেই প্রেমিক বিয়ে করতে যাচ্ছে পরদিনই। ফোনের ওপারে দীর্ঘশ্বাসের মতো নীরবতা, কাঁপা কণ্ঠে ভালোবাসার স্মৃতিচারণা আর নিজের ভেতরে ফুঁসে ওঠা অসহায়ত্বের আওয়াজ—সব মিলিয়ে মানসিক অস্থিরতার এক গভীর নাট্যভাষা তৈরি করেছে। তাতে এটি শুধু একটি মঞ্চনাটক নয়; ভালোবাসা ও বিচ্ছেদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা মানসিক সংকটের এক মানবিক আর্তনাদেরও ঘটিয়েছে প্রকাশ।

দ্য হিউম্যান ভয়েস

১৮ অক্টোবর। জাতীয় পর্যায়ে লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত হয় লালন উৎসব ও লালন মেলা। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায়। লাখো লালন ভক্তের পদচারণে উদ্যান হয়ে উঠেছিল মুখর। সংগীতানুষ্ঠানের আগে প্রদর্শিত হয় লালন সাঁইয়ের ওপর নির্মিত ভিডিও চিত্র। এ্যানি বৈরাগী, সুখলাল রায়, সূচনা শেলী, ফাহমিদা আহমেদ শিফা, অরূপ রাহী, দীনা মণ্ডল, মুজিব পরদেশী, কানিজ খন্দকার মিতু, সাগর বাউল প্রমুখের পাশাপাশি লালনগীতি পরিবেশন করে নীরব অ্যান্ড বাউলস, বাউলা ব্যান্ড, পথিক নবী অ্যান্ড টিম ক্রিয়েটিভ, বেঙ্গল সিম্ফনি ও লালন ব্যান্ড। ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’, ‘আল্লাহ বলো মনরে পাখি’, ‘কী সন্ধানে যাই সেখানে মনের মানুষ যেখানে’, ‘আলিফ দিয়ে টোকা মারো’, ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখী’, ‘আমার ঘরখানায় কে’, ‘প্রাণ গৌর এসে’, ‘তিন পাগলের হলো মেলা’, ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’, ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি’, ‘পাপ পুণ্যের কথা আমি কারে বা শুধাই’, ‘মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার’, ‘এমন মানব জনম আর কি হবে’, ‘জাত গেল’ প্রভৃতি গান বিমোহিত করে দর্শক-শ্রোতাদের।

 লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top