শীত এলেই শহরের মুখশ্রী বদলে যায়। আকাশের নীল ধীরে ধীরে মিশে যায় ধোঁয়া-ধূসর কুয়াশায়, বাতাসে মিশে থাকে ধোঁয়া ওঠা চায়ের ঘ্রাণ। রোদটা একটু কুণ্ঠিত হয়ে পড়ে, আর বিকেলগুলো যেন নিজস্ব এক ছন্দে নরম হয়ে আসে। এই ঋতু শুধু ঠান্ডা নয়, একধরনের অনুভব, যেখানে মানুষ খোঁজে উষ্ণতা, নিজের মতো স্বাচ্ছন্দ, আর ফ্যাশনে মেলে ব্যক্তিত্বের কোমল প্রকাশ। ঠিক এই সময়েই দেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ড টুয়েলভ নিয়ে এসেছে তাদের নতুন সম্ভার– ‘উইন্টার ২০২৫ কালেকশন’।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কালেকশন শুধু পোশাক নয়; আধুনিক জীবনের ছন্দ, রং আর অনুভবেরও এক পরিশীলিত প্রতিফলন। শীতের রং সব সময়ই অভিন্ন নয়; কখনো নিস্তব্ধ, কখনো মৃদু, আবার কখনো গভীর। টুয়েলভের এই মৌসুমের কালার প্যালেট যেন প্রকৃতির নিজের রঙধনু থেকেই তুলে আনা। চকলেট ব্রাউন, ক্যামেল, অলিভ, স্যান্ড, নেভি, ডিপ ব্লু, চারকোল। এইসব রঙের মিশেলে রয়েছে উষ্ণতা এবং এমন এক প্রশান্ত নান্দনিকতা, যা চোখে লাগে সৌন্দর্যে আর মনে ছুঁয়ে যায় বিমুগ্ধতায়।

সেই নরম রংগুলোর ভেতরে উজ্জ্বলতার প্রাণবন্ত স্পর্শ হিসেবে এসেছে মাস্টার্ড আর বারগান্ডির সূক্ষ্ম উপস্থিতি। যেন ভোরের সূর্যের নরম আলো কিংবা সন্ধ্যার গোধুলীর রঙের মতো অল্পতেই প্রাণ এনে দেয় পুরো দৃশ্যপটে। আর আছে চিরন্তন সাদা-কালোর সংমিশ্রণ। যা সময়ের কোনো সীমার মধ্যে বাঁধা পড়ে না। ফ্যাশনের ইতিহাসে যত রংই আসুক, এই জুটির আবেদন সব সময় অনন্য থেকে যায়।
টুয়েলভের চোখে রং মানে শুধু শেড নয়, বরং একটি জীবন্ত আবেগও। উৎসব কিংবা একটি ঋতুর সঙ্গে আপনার মনের চিত্রপটও পাল্টে দেওয়ার বৈশিষ্ট্যে ভরপুর একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ড।

টুয়েলভের ওয়েস্টার্ন কালেকশন যেন আধুনিক জীবনের গল্পই বলে। যেখানে প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝেও থাকে নিজেকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার আনন্দ। ‘ওয়ান পিস, ম্যানি মুডস’– এই ভাবনা নিয়েই সাজানো হয়েছে ব্যান্ডটির এবারের উইন্টারের আকর্ষণ। শহরের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, অফিসের মিটিং থেকে বন্ধুর আড্ডা বা একান্ত ভ্রমণ, প্রতিটি মুহূর্তের জন্য আলাদা কোনো পোশাক নয়; বরং এক পোশাকেই যেন মেলে নানা আবহ। সফট-শেল, লাইট-পাফার, বোম্বার, ইউটিলিটি শ্যাকেট, ব্রাশড নিট– সব পোশাকেই রয়েছে ব্যবহারিক ডিজাইন, হালকা উষ্ণতা ও চলাচলের সহজতা। ফ্যাশনকে এখানে দেখা হয়েছে একধরনের কার্যকর শিল্প হিসেবে। যা যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি পরিধানেও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ। আধুনিক তরুণ-তরুণীর ব্যস্ত জীবনে এই ভারসাম্যই সবচেয়ে জরুরি। আর টুয়েলভ সেই প্রয়োজনকেই সবার মুঠোয় এনে দিয়েছে সাবলীল ও নান্দনিকভাবে।
অন্যদিকে আবার শীত মানেই আমাদের কাছে উৎসব, পুনর্মিলন আর ঐতিহ্যের নতুন পাঠচক্র। এই আবহে টুয়েলভের এথনিক কালেকশন এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। নারীদের জন্য এসেছে শীত উপযোগী এথনিক লাইন, জ্যাকেট, শল আর পার্টিওয়্যার, টু/থ্রি পিস সেট, যেখানে ফ্যাব্রিকের স্বাচ্ছন্দে মিশে আছে রুচিশীল ডিজাইনের সৌন্দর্য। প্রতিটি পোশাকেই আছে হালকা উষ্ণতার আবরণ, পাশাপাশি তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এমন এক কাট ও টেক্সচার যা একদিকে এলিগ্যান্ট, অন্যদিকে ব্যবহারিক। উৎসবের আলোর নিচে, কিংবা নিত্যদিনের কোনো বিশেষ সন্ধ্যায় এই ফ্যাশনগুলো যেন নিজের মধ্যেই বহন করে এক নির্মল আভিজাত্য।
পুরুষদের এথনিক কালেকশনেও এসেছে নতুন নান্দনিকতার স্পর্শ যুক্ত ছোঁয়া। ক্লাসিক পাঞ্জাবি সেটগুলোতে এবার যুক্ত হয়েছে নতুন ডিজাইন টোন, প্রিমিয়াম কাপড় ও নিখুঁত সেলাইয়ের সূক্ষ্মতা। এই কালেকশন ঐতিহ্যের আবহকে আধুনিকতার আলোয় মেলে ধরেছে আর একই সঙ্গে দিয়েছে শিকড়ের টান ও আধুনিক ফ্যাশনেবল রুচির কোমল ছোঁয়া। বিয়েবাড়ির আয়োজন হোক বা পারিবারিক উৎসব কিংবা অফিসের কোনো বিশেষ দিন– টুয়েলভের এথনিক পোশাক সেই প্রতিটি মুহূর্তেই স্মৃতিময় করে তুলবেআপনার পছন্দের মতো করে, এমন দাবি ব্র্যান্ড সংশ্লিষ্টদের।

অন্যদিকে, টুয়েলভের ফরমাল কালেকশন হলো কর্মজীবনের বাস্তবতার সঙ্গে নান্দনিকতার মেলবন্ধন। অফিসের সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যার মিট-আপ পর্যন্ত একই পোশাকে বদলে যেতে পারে পরিবেশ, মেজাজ আর আত্মপ্রকাশের ভঙ্গি। ক্লিন টেইলারিং, নিখুঁত কাটিং, কমফোর্ট স্ট্রেচ ফ্যাব্রিক সবমিলিয়ে এই কালেকশন তৈরি করেছে এমন এক লাইনআপ, যা একদিকে প্রফেশনাল, অন্যদিকে পরিশালিত। শীতের শুষ্ক ঠান্ডায়ও এই পোশাকগুলো শরীরে এনে দেবে উষ্ণ আরাম, আর মনে জাগাবে আত্মবিশ্বাসের পরিমিত দীপ্তি।
টুয়েলভের প্রতিটি কালেকশনের পেছনে কাজ করে তাদের এক বিশেষ দর্শন। ফ্যাশন মানে শুধু বাহ্যিক সাজ নয়; বরং জীবনযাপনের সহজ সারল্যতা ও আনন্দ। উইন্টার ২০২৫-এর প্রতিটি পোশাকেই তাই দেখা যায় ‘কমফোর্ট ইন মোশন’-এর ভাবনা। প্রতিটি সেলাইয়ের ভেতরে আছে চলাচলের স্বাধীনতা, প্রতিটি ফ্যাব্রিকে আছে ত্বকের সঙ্গে সাবলীল কোমল পরশ। এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে ব্যস্ত শহুরে জীবনের ছন্দে কোথাও অস্বস্তি না আসে। কাপড় আর রং সবকিছুতেই সেই ভারসাম্যের অপূর্ব সংমিশ্রণ, যা টুয়েলভকে আলাদা করে তোলে কেবল ব্র্যান্ড হিসেবে নয়, বরং একধরনের জীবনবোধের প্রতিবিম্ব হিসেবে।
টুয়েলভের উপস্থিতিও আজ দেশের সীমা ছাড়িয়ে নতুন আঙ্গিকে বিস্তৃত। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে তাদের আউটলেট এখন শীতের এই কালেকশনে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও পাওয়া যাচ্ছে উইন্টার ২০২৫ কালেকশন। চাইলে ঘরে বসে বেছে নিতে পারেন নিজের পছন্দ, রং ও সামাঞ্জস্যের সঙ্গে মানানসই সব ফ্যাশনেবল পোশাক। সহজসাধ্য অর্ডার প্রক্রিয়া, দ্রুত ডেলিভারিসহ সবমিলিয়ে ব্র্যান্ডটি আজকের প্রজন্মের কাছে এক নির্ভরযোগ্য ফ্যাশন সঙ্গী।
শীতের বিকেল মানেই যেন একটু ধীর সময়, উষ্ণ কাপড়ের পরশ, হাতে গরম কফির কাপ, আর জানালার বাইরে নরম আলো। এই দৃশ্যেই টুয়েলভের পোশাকগুলো মিশে যায় প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে। ফ্যাশন এখানে আর বাহুল্য নয়, বরং জীবনযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যে কেউ নিজের মতো করে এই কালেকশন থেকে বেছে নিতে পারেন এমন কিছু পোশাক, যা শুধু শরীর নয়, মনকেও দেয় প্রশান্তি। কারণ, টুয়েলভ বিশ্বাস করে উষ্ণতা কেবল তাপমাত্রার পরিবর্তন নয়, শুধু শারীরিক অনুভূতিও এটি একটি মানসিক অনুভবেরও বহিঃপ্রকাশ।

এই শীতের গল্প তাই শুধু পোশাকের নয়! এটি সময়ের, মানসিকতার এবং আত্মপ্রকাশের সহজাত গল্প। শীত যেমন আসে নিজের ছন্দে, তেমনি টুয়েলভও তার সঙ্গে মানানসই করে নিয়ে এসেছে ফ্যাশনের গতিময়তা। সাবলীল ও স্পষ্ট, সংযত ও বোল্ড! উইন্টার ২০২৫ কালেকশন যেন এক নিখুঁত সংলাপের পরিশালিত প্রকাশ। যেটি প্রকৃতি ও মানুষের, ঐতিহ্য ও আধুনিকতার, ভালোবাসার ও প্রশান্তির।
শীতের আলো ফুরোতে ফুরোতে যখন শহর আবার আলোয় জ্বলে ওঠে, তখনই এই পোশাকগুলো নতুনভাবে বাঁচিয়ে তোলে প্রতিটি দিনকে। টুয়েলভের এই শীতকালীন আয়োজন সেই বেঁচে থাকার অনুভবকেই আরও সুন্দর করে তোলে, করে তোলে আরও উষ্ণ, আরও জীবন্ত! এই শীতে তাই নিজের গল্পটা লিখে ফেলুন টুয়েলভের সঙ্গে। রঙের নান্দনিকতায়, ফ্যাব্রিকের সাচ্ছন্দে আর স্টাইলের ফ্যাশন সচেতনতায়। কারণ প্রতিটি মানুষের পোশাকের ভেতরেই লুকিয়ে থাকে তার নিজস্ব গল্প। আর সেই গল্প বলার সঙ্গী যদি হয় টুয়েলভ! তবে শীতও যেন হয়ে ওঠে এক মৃদু কবিতা, যেখানে প্রতিটি সেলাইয়ের ভেতর দিয়ে বয়ে যায় উষ্ণতার সুর।
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: টুয়েলভ-এর সৌজন্যে

