ফিচার I বর্ষায় চুল বশ
বর্ষায় বশে থাকুক চুল। হালের নতুন আর বিচিত্র হেয়ারস্টাইলে
পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে পাগল মন নিয়ে নেচে উঠতেই পারেন। কিন্তু আর্দ্রতায় ভরপুর বাতাস আর হুটহাট বৃষ্টির ছাট থেকে যদি চুল রক্ষা করা না যায়, তাহলেই সেরেছে! অনুজ্জ্বল আর এলোমেলো চুলে আসলেই পাগলাটে দেখাবে। সেটা একেবারেই কাক্সিক্ষত নয়। বর্ষা মানেই বিউটি চ্যালেঞ্জ। ত্বকের বাড়তি সব সমস্যার সঙ্গে বাড়ে মেকআপ টিকিয়ে রাখার যুদ্ধ। আর চুলের ক্ষেত্রে অনেকের কাছেই বৃষ্টি মানেই অনাসৃষ্টি। মুশকিলটা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে যাদের চুল বড় তাদের জন্য। একবার ভিজে গেলে শুকানোর সুযোগ তো মেলেই না, উপরন্তু দীর্ঘক্ষণ স্যাঁতসেঁতে থাকার ফলে চুলকানি ও অস্বস্তিকর দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। তার ওপর বর্ষার আবহাওয়ার ঘন ঘন মতিগতি বদলের উৎপাত তো আছেই, সেটাও চুলের সুস্বাস্থ্যের প্রতিকূল। এই মৌসুমে তাই হয়ে ওঠা চাই সচেতন। সাধের চুলের স্বাস্থ্য নিয়ে একদমই আপোস করা যাবে না। স্টাইলিংয়েও হতে হবে সাবধান ও কৌশলী।
দেশি-বিদেশি বিখ্যাত চুল বিশারদদের মতে, হেয়ারকাটের ওপর গুরুত্ব দেওয়া চাই এ সময়। কারণ, একটি পারফেক্ট মনসুন ফ্রেন্ডলি হেয়ারকাট বর্ষায় চুল বশে রাখার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায়। এমনভাবে চুল কাটা উচিত, যা বৃষ্টিতে ভেজার পর চটজলদি শুকিয়ে যাবে। কোনো ধরনের হেয়ার ড্রায়ার ছাড়াই, প্রাকৃতিক বাতাসে। সুন্দর স্ট্রাকচারড হেয়ারকাট এ ক্ষেত্রে বেশি জুতসই। সঙ্গে বজায় রাখা চাই চুলের প্রাকৃতিক টেক্সচার। লম্বা চুলে সুন্দর লেয়ার করে নিলে বাড়তি ভলিউম যোগ হবে। সঙ্গে লং, সাইড ব্যাঙস লুকে যোগ করবে বাড়তি আবেদন। তবে ফেস স্ট্রাকচার বুঝে করে নিতে হবে অবশ্যই। আশির দশকের ববেও কেটে নেওয়া যেতে পারে। ব্যাঙস ছাড়া অথবা সমেত। স্ট্রেইট, কার্লি অথবা ওয়েভি— সব ধরনের চুলের জন্য। আর অভিনব কিছু করতে চাইলে রয়েছে মনসুন ফ্রেন্ডলি হেয়ারস্টাইলের দারুণ সব অপশন। সহজ কিন্তু সুন্দর। এসব কৌশলে যে কারও চুল হয়ে উঠবে একদম মনসুন প্রুফ।
টপ নট
মনসুন ফ্রেন্ডলি হেয়ারস্টাইলগুলোর তালিকার শীর্ষে থাকবে এটি। সিম্পল এবং স্টাইলিশ। করে নেওয়া যায় তুড়িতেই। ওয়েভি, কার্লি কিংবা স্ট্রেইট চুলে যেমন মানায়, ঘন বা পাতলা চুলেও দেখায় দারুণ। বর্ষায় নেতিয়ে পড়া চুলে সহজে স্টাইলিং করতে টপ নট অনবদ্য। সব চুল একসঙ্গে করে শক্ত পনিটেইল বানিয়ে নিতে হবে। পছন্দ অনুযায়ী একদম চূড়ায় কিংবা মিড হাইটে এটি করে নেওয়া যেতে পারে। স্লিক শিক লুক চাইলে স্টাইলিং ক্রিম মেখে নিতে হয়। তারপর পেঁচিয়ে নিয়ে বানের আকারে গড়ে নিতে হবে। তারপর পিন দিয়ে আটকে নিতে হবে। ব্যস! চিকন হেডর্যাপ দিয়ে পেঁচিয়েও নেওয়া যেতে পারে স্টাইলিংয়ের জন্য।
হাফ আপ হাফ ডাউন
এই মৌসুমের হেয়ারস্টাইলিংয়ের সেরা অপশন। এতে করে স্টাইলিশ তো দেখায়ই। শুকাবারও পর্যাপ্ত সুযোগ থাকে। কারণ, অর্ধেকটা বেঁধে, নিচের দিকের বাকিটা চুল ছেড়ে রাখা হয়। তাই মনসুন স্টাইলিংয়ের জন্য পারফেক্ট এটি। করেও নেওয়া যায় বিভিন্নভাবে। মাথার উপরিভাগের চুল বানে বেঁধে বাকিটা ছেড়ে রাখা এই হেয়ারস্টাইলের ক্ল্যাসিক ধাঁচ। অনেকে আবার ভলিউমনাইজিং পনিটেইল পছন্দ করেন বানের বদলে। যারা আরও বেশি এক্সপেরিমেন্ট পছন্দ করেন, তারা মাথার উপরিভাগে বাঁধতে পারেন ফ্রেঞ্চ ব্রেইড। বাকিটা ছেড়ে দিলেই একদম র্যাম্প রেডি হাফ আপ হাফ ডাউন হেয়ারস্টাইল তৈরি। তবে চুল বাঁধার আগে টেক্সারাইজড স্প্রে করে নিলে ভালো। এতে চুলে সুন্দর টেক্সচার তৈরি হবে। টিকে থাকবে দীর্ঘ সময়।
ট্রেন্ডি টেইল
মেসি পনিটেইল এ সময়ের জন্য বেশ জুতসই। বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও স্টাইলিংয়ের খুব একটা হেরফের হয় না এতে। দেখায় আরও আবেদনময়ী। ওয়েভি পনিটেইলও দারুণ দেখাবে। সাইড ব্রেইডও করে নেওয়া যাবে পনিটেইলের সঙ্গে। সাজে বোহিমিয়ান ভাইব যাদের পছন্দ, তাদের জন্য।
জাহেরা শিরীন
মডেল: ওশিন
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন