ফিচার I am টু pm
অফিসের পর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান? কেজো সাজ পাল্টে হয়ে ওঠা চাই পার্টির মধ্যমণি। এটাও সম্ভব
অফিসের কাজ শেষেই আড্ডা কিংবা কোনো নিমন্ত্রণ যদি থাকে? কাজের সাজে সেখানে চলে যাওয়া ঠিক হবে না। তাই অফিস শেষে ছোট্ট সময়টুকুতেই সেরে নিতে হবে সাজ।
প্রয়োজন প্রস্তুতি
যদি আগে থেকেই জানা থাকে, অফিসের পর পার্টিতে ছুটতে হবে, আগের রাতে ঠিক করে নেওয়া চাই আউটফিটের সঙ্গে মিলিয়ে মেকআপটা কেমন হবে। সে অনুযায়ী দু-একটা বাড়তি উপকরণ পুরে রাখা যেতে পারে বিউটি ব্যাগে। সকালে উঠে চুলও ভালোভাবে শ্যাম্পু আর কন্ডিশন করে নেওয়া চাই। কারণ, পরিষ্কার চুলে যেকোনো সাজই সহজে নেওয়া যায়। আর অফিস ব্যাগে সব সময় একটা ছোট বিউটি ব্যাগ থাকলে ভালো। যাতে থাকবে কনসিলার আর পাউডারের মতো কুইক টাচ আপ প্রডাক্ট। থাকবে আইলাইনার, ব্লাশঅন স্টিক আর কয়েক রঙের লিপস্টিক। যেন হুটহাট কোথাও ছুটতে হলে পরিপূর্ণভাবে তৈরি হয়ে নেওয়া যায়।
ময়শ্চারাইজেশন মাস্ট
অফিসের ভেতরে এসির শীতলতায় আর্দ্রতা হারায় ত্বক। ফলে দিন শেষে দেখায় ম্যাড়ম্যাড়ে, অনুজ্জ্বল। এর ওপর নতুন করে মেকআপের চেষ্টা অনুচিত। কারণ, এতে ক্লান্ত ত্বক আরও প্রাণহীন দেখায়। তাই সারা দিনের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলতে হবে সাজের শুরুতেই। মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে মাখিয়ে নিতে হবে ময়শ্চারাইজার। তবে তা হায়ালুরনিক অ্যাসিডযুক্ত হলে ভালো। দ্রুত শুষে নেয় ত্বক, ভেতর থেকে আর্দ্র আর পরিপুষ্ট দেখায়। আর মেকআপে প্রাইমারের কাজ করে।
কনসিলারের কারসাজি
ত্বকে চটজলদি প্রাণ জোগাতে কনসিলারের জুড়ি নেই। শুধু চেহারার মাঝ বরাবর উঁচু স্থানে অর্থাৎ কপাল, নাক ও থুতনির উঁচু অংশগুলোতে কনসিলার মেখে নিলেই চলবে। সে ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশনটা ইচ্ছা করলে এড়িয়েও যাওয়া যায়। আরও নিখুঁত মুখত্বক চাইলে চটজলদি চোখের নিচে আর দাগযুক্ত জায়গাগুলোতে কনসিলার মাখা যেতে পারে। সঙ্গে সামান্য ফাউন্ডেশন মেখে পাউডার দিয়ে সেট করে নিতে হবে। ব্যস, তৈরি পারফেক্ট মেকআপ বেজ।
হাইলাইট
এই একটা উপকরণের ঠিকঠাকমতো ব্যবহারই পাল্টে দিতে পারে পুরো লুক। তাতে কেজো সাজ হয়ে উঠতে পারে একদম পার্টি পারফেক্ট। চিক বোন, নাক, কিউপিডস বো, চিন আর কপালের উঁচু অংশে বুলিয়ে নিতে হবে হাইলাইটার।
স্মোকি কিংবা শিমারি
চোখের সাজ কতটা নাটকীয় হবে, তা নির্ভর করে কেমন অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন, তার ওপর। নিমেষেই সাজ পাল্টে দিতে পারে সামান্য শিমারের ব্যবহার। পাশাপাশি চলবে আইশ্যাডোর মেটালিক শেডগুলোও। নাইট আউটের জন্য তা যেমন পারফেক্ট, তেমনি চেহারায় চনমনে উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে প্রাণবন্ত দেখাবে। তবে পুরো চোখে শিমারি শ্যাডের ব্যবহার না করে চেহারায় দীপ্তভাব ফুটিয়ে তুলতে চাইলে, এর উপায়ও আছে। চোখের ইনার কর্নার যদি শিমার বা মেটালিক শেড দিয়ে হাইলাইট করা যায়, জাদুর মতো পাল্টে যাবে সাজ। সাজ পরিবর্তনের আরও সহজ উপায় আছে। সকালে দেওয়া আইলাইনারের লাইনটা স্মাজ করে দেওয়া যেতে পারে পেনসিল ব্রাশ দিয়ে। তারপর সামান্য কালো আইশ্যাডো দিয়ে আরেকটু স্মোকি যদি করে নেওয়া যায় আইমেকআপ, তাহলে তো কথাই নেই।
লাইনের বাইরে
কেজো সাজের অনেক বাঁধাধরা নিয়ম থাকে। কিন্তু পার্টির লুকে প্রাধান্য পায় ব্যক্তির পছন্দ। আইলাইনারের টানটা তাই ড্রামাটিক হতে পারে। ক্যাট বা গ্রাফিক—আইলাইনারের টানে থাকুক আয়োজনের আমেজ। থাকতে পারে রঙের ছোঁয়াও। হালের কোবাল্ট, মস কিংবা অতিবেগুনি রঙা আইলাইনারে সাজুক চোখজোড়া। তাতে যদি পড়ে গ্লিটারি পার্টিকেল, তাহলে তো তৈরি পুরোদস্তুর রেট্রোগ্ল্যাম লুক।
বাড়তি ব্লাশঅন
পিঙ্ক, পিচ, রোজ টোনের নিউট্রাল শেডের ব্লাশঅন সকালে ব্যবহারের জন্য সেরা। অফিস আওয়ারে প্রাণবন্ত দেখাতে যথেষ্ট। কিন্তু একই ব্লাশঅন রাতে দেখাবে মলিন। সে জন্য চাই শিমারি ফর্মুলার অপেক্ষাকৃত গাঢ় রঙের ব্লাশঅন। চলবে প্লাম, ডিপ পিঙ্ক আর মভ রঙগুলো। হালকা হাতে একটু একটু করে মাখাতে হবে ত্বকে। যেন ত্বকরঙের সঙ্গে মানানসই দেখায়।
ডিপ লিপ
নিউট্রাল, প্যাস্টেল শেডের লিপস্টিকগুলোই সাধারণত কেজো সাজে বেশি মানানসই। যদি তা পাল্টে গাঢ় করে নেওয়া যায়, চেহারাতেও আসবে দারুণ পরিবর্তন। লাল এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ অপশন। কিন্তু সে জন্য রাতে শুধু র্যাডিশ টোনের লিপস্টিকেই লাস্যময়ী দেখাবে, তা নয়। পছন্দের প্লাম, ডার্ক ব্রাউন এমনকি ভ্যাম্পি বেরি শেডের লিপস্টিক মেখেও হয়ে যাওয়া যায় পার্টির আকর্ষণ। শুধু খেয়াল রাখা চাই, ঠোঁটের চারপাশে যেন ঘেটে না যায় লিপস্টিক।
জাহেরা শিরীন
মডেল: নাজ
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন