সি-শার্প I হোম স্টুডিও সেটআপ
মিউজিক স্টুডিও কেমন হওয়া চাই? শব্দ ধারণে তো বিশ্বস্ত হতেই হবে। কম বাজেটে কেমন করে নিজের বাড়িতে এটি সম্ভব? জানিয়েছেন ইফতেখার ইনান
একসময় মিউজিকের জন্য ‘হোম স্টুডিও’ বেশ খরচসাপেক্ষ ছিল। এখনো ভালো মানের একটা স্টুডিও সেটআপ করতে গেলে অনেক বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে প্রযুক্তির বদৌলতে আজকাল কম খরচে এটি সম্ভব হচ্ছে। কম বাজেটের হোম স্টুডিও তৈরি করতে কী কী লাগে?
রুম সেটআপ
রুম ছোট-বড় যেমনই হোক, হোম স্টুডিও স্থাপনের জন্য সাধারণ কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। ঘরের সামনের দেয়াল থেকে শুরু করে ৩৮ থেকে ৪০ শতাংশ জায়গার ভেতরে রেকর্ডিং করার সেটআপ অর্থাৎ পিসি, স্পিকার এবং বসার জায়গা স্থাপন করা যেতে পারে। সেখান থেকে ৬০ ডিগ্রি কোণে মনিটর স্পিকার দুটি রাখতে হবে (ছবির মতো)। হেডফোন দিয়ে কাজ করলে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
রুম একুস্টিক
রুম নির্বাচনের পরের ধাপ হচ্ছে সেটিকে রেকর্ডিংয়ের জন্য উপযুক্ত করে তোলা। একটা ঘরের শব্দের চলাচল কোয়ালিটিকে প্রভাবিত করে। রুম একুস্টিক সামাল দেওয়াটাই আসলে ঠিকভাবে হোম স্টুডিও সেটআপের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
ভালো মানের রেকর্ডিংয়ের জন্য দুটি ব্যাপার নিশ্চিত করা জরুরি— রুম সাউন্ডপ্রুফ করা এবং এর একুস্টিক ট্রিটমেন্ট ঠিকঠাক করা।
বাইরে থেকে যেন শব্দ ঘরে প্রবেশ না করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য যেসব ফাঁকা স্থান দিয়ে বাইরের শব্দ ঘরে প্রবেশ করতে পারে, সে স্থানগুলো বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। ঘরের দরজা ও জানালার পাল্লার সংযোগস্থানের ওপর ফোম বা রাবার লাগিয়ে বাইরের শব্দ ঘরে আসা বন্ধ করা যায়।
এরপর রুম একুস্টিক ঠিকঠাক করার পালা। প্রফেশনাল রেকর্ডিং স্টুডিওতে সাধারণত দেয়ালে ফোমের প্যানেল থাকে। এটি দেখতে চমৎকার হলেও এর কাজ মূলত শব্দের প্রতিধ্বনি রোধ করা। ‘একুস্টিক অ্যাবজর্বশন’ বলা হয়; যা মাইক্রোফোন থেকে আসা শব্দই শুধু ধারনে সাহায্য করে।
এটি ভালোভাবে কাজ করে যখন আরেকটি একুস্টিক ট্রিটমেন্টও রুমে ব্যবহার করা হয়, যাকে ডিফিউশন বলে। স্টুডিওর ভেতরে, দেয়ালে ও ছাদে একুস্টিক ফোম প্যানেল লাগিয়ে একই সঙ্গে একুস্টিক অ্যাবজর্বশন ও ডিফিউশন নিশ্চিত করা সম্ভব। সুতরাং, হোম স্টুডিও সেটআপ করতে দ্বিতীয় প্রয়োজনীয় উপাদান হচ্ছে একুস্টিক ফোম প্যানেল, যা ৪ থেকে ৬ পিস লাগবে।
যন্ত্রপাতি
প্রথমেই দরকার একটা ডেস্কটপ পিসি। আহামরি হাই-এন্ড কনফিগারেশনের পিসি না হলেও চলবে। মোটামুটি ভালো প্রসেসর থাকলেই হয় আর র্যাম কমপক্ষে ৮ গিগাবাইট জরুরি। সঙ্গে লাগবে কনডেনসার মাইক্রোফোন। বাজেটের মধ্যে ভালো মাইক্রোফোন কেনাই শ্রেয়, কেননা এটি স্টুডিওর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রের একটি।
কনডেনসার মাইক্রোফোনের সঙ্গে বেশ কিছু অ্যাকসেসরিজ পাবেন, যার মধ্যে এক্সএলআর কেবল, শক মাউন্ট, স্ট্যান্ড ও পপ ফিল্টার থাকা দরকার। মাইক্রোফোনে কার্ভ ফোম আছে কি না, সেটাও নিশ্চিত হতে হবে।
এরপর লাগবে সাউন্ড কনভারটার। যেহেতু আমাদের দেশে এটি সাউন্ড কার্ড হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া লাগবে ন্যূনতম দুটি মনিটর স্পিকার। খরচ কমাতে হলে স্পিকারের বদলে স্টুডিও গ্রেড হেডফোনও ব্যবহার করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে রেকর্ডিং বাজানোর জন্য একটা নরমাল স্পিকার সেট রাখলে ভালো।
(চলবে)
ছবি: সংগ্রহ
অনলাইন টিভি স্টুডিও (ভিডিও +অডিও) করতে কি কি সরঞ্জাম প্রয়োজন?
তালিকা আকারে দ্রুত জানালে উপকৃত হতাম।