skip to Main Content

ফিচার I রেস্তোরাঁয় স্বাস্থ্যবিধি

করোনার সংক্রমণ এড়াতে মানা চাই নতুন সাধারণ নিয়ম। রেস্তোরাঁতেও। ভোজনরসিক ও স্টাফ- উভয়কেই। সতর্ক থাকতে হবে সেখানে যাওয়া থেকে বেরোনো পর্যন্ত

স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত হচ্ছে রেস্তোরাঁগুলোর বন্ধ দরজা। যদিও করোনা হানা দিচ্ছে এখনো। নিউ নরমালে বিশ্বের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ সাজছে নতুন আঙ্গিকে। কর্মীদের ওপর বর্তেছে নানান নিয়ম। এ ক্ষেত্রে ইস্তাম্বুলের গোল্ডেন হর্ন রেস্টুরেন্টকে উদাহরণ হিসেবে টানা যেতে পারে। সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে আলাদা করা হয়েছে চেয়ার-টেবিল। পুরো সেটআপকে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে স্বচ্ছ প্লাস্টিকে। তাঁবুর আদলে। টেবিলে আছে বিশেষ বোতাম। তা চাপলে বেয়ারা আসে। কিন্তু আমাদের দেশের রেস্তোরাঁগুলোতে তেমন প্রস্তুতি নেই। এদিকে সীমিত পরিসরে কর্মক্ষেত্র খুলে যাওয়ায় মানুষের আনাগোনা বাড়ছে সরাইগুলোতে। ভোজনরসিকদের কর্তব্য নিরাপদ সরাইখানা বেছে নেওয়া।
সংক্রমণ এড়াতে প্রয়োজন ভোক্তা ও রেস্তোরাঁকর্মীদের যৌথ সতর্কতা। একেবারে রসুইকর থেকে শুরু করে পরিবেশক পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যেতে পারে। ভোক্তারা যদি রেস্তোরাঁয় যাওয়া থেকে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত কিছু নিয়ম মেনে চলেন, তাহলেও নিরাপদ থাকা সম্ভব।
একেক রেস্তোরাঁর আদল একেক রকম। ফলে ঝুঁকিও আলাদা। তবে কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সুরক্ষিত থাকা যাবে। সতর্কতা শুরু করতে হবে ঘর কিংবা অফিস থেকে বেরোনোর আগেই। রেস্তোরাঁয় যাওয়ার জন্য আলাদা একটি পোশাক রাখা চাই। ভিড় এড়ানোর জন্য আগেই টেবিল বুক করে নিলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। চেয়ারসহ স্যানিটাইজ করে রাখার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা যেতে পারে। জানতে হবে, কোন রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ তাদের চেয়ার-টেবিল প্রতিবার ব্যবহারের পর স্যানিটাইজ করে। সেখানে যাওয়াই নিরাপদ। কোথাও কোথাও কাস্টমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাতের পাশাপাশি জুতাও স্যানিটাইজ করা হয়। এটি ঝুঁকি এড়াতে সহায়ক। এমনকি ইন্টেরিয়রের বদল এনেছে কিছু রেস্টুরেন্ট। আগে ছয়জনের বসার ব্যবস্থা ছিল, এখন বড়জোর তিনজন। আবার যে কক্ষে আটটি টেবিল, সেখানে চারটি। ওয়েটারের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার জন্য স্টার্টার থেকে ডেজার্ট পর্যন্ত সব পদ একবারে অর্ডার করা ভালো। এতে বেয়ারা বারবার টেবিলের সামনে আসবে না। ফলে সবাই নিরাপদ থাকবে।
আগে ওয়েটাররা টেবিলের সামনে এসে খাবারের অর্ডার নিয়ে গেলেও এখন এই পদ্ধতি এড়িয়ে বিকল্পটি গ্রহণ করা যেতে পারে। অ্যাপভিত্তিক সেবা চালু আছে এমন রেস্তোরাঁয় ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। যদি তা না থাকে, তাহলে যারা মেনু চার্টের ছবি তুলে গ্রাহকের ফোনে ই-মেইল করার ব্যবস্থা রেখেছে, সেখানে যাওয়াই নিরাপদ। টেবিলের উপর কাচ পেতে সেটির নিচে মেনু চার্টের প্রতিটি পাতা রাখা যেতে পারে। এতে চার্টটি হাতের স্পর্শে আসবে না।
দেখতে হবে কোন রেস্তোরাঁ খাবার পরিবেশনে ওয়ানটাইম তৈজস ব্যবহার করে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লেট ও গ্লাসের চেয়ে এখন সেগুলোই নিরাপদ। কর্মীদের প্রতি পদ পরিবেশনের পর হাত ধুয়ে নিতে হবে। রসুইকরদেরও। রান্নার আগে ও পরে। প্রতিবার খাবার পরিবেশনের জন্য আলাদা গ্লাভস, মাস্ক পরা এবং মাথা ঢেকে রাখা জরুরি। রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ রকম সতর্ক ওয়েটার না থাকলে সেখানে না যাওয়াই ভালো।
রেস্তোরাঁয় প্রবেশের পর কোনো স্থানে অযথা স্পর্শ না করা ভালো। সারফেস থেকে হাতে করোনাভাইরাস চলে আসার আশঙ্কা থাকে। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হলে রেলিং ছোঁয়া উচিত হবে না। লিফট থাকলে বোতাম চাপার ক্ষেত্রে টিস্যু ব্যবহার করা যেতে পারে। টিস্যুও নিজের হওয়া চাই। রেস্তোরাঁয় যাওয়ার আগেই বাড়ি বা অফিস থেকে টয়লেট সেরে নেওয়া নিরাপদ। কেননা, সেই জায়গার টয়লেটগুলো কমন। ওয়াশরুমের হাতলে অনেক মানুষের ছোঁয়া লাগে। নিতান্তই যেতে হলে হাতল কিংবা দরজার কড়া টিস্যু দিয়ে ধরাই উত্তম। কিংবা স্যানিটাইজার স্প্রে করা যেতে পারে। রেস্তোরাঁর ওয়াশরুমের তোয়ালে থেকেও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে।
সংক্রমণের ঝুঁকি থাকাকালীন বাফেট এড়িয়ে চলা ভালো। এমনকি সেলফ সার্ভিসও অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কেননা, একই চামচে অনেকের স্পর্শ থাকে। সপরিবার রেস্তোরাঁয় যান অনেকে। কোনোটিতে শিশুদের খেলার আলাদা জায়গা থাকে। এখন চাইল্ড জোনে সন্তানদের না পাঠানোই নিরাপদ।
বিল মেটানোর সময় নগদ টাকাপয়সা লেনদেন না করে কার্ডে পরিশোধ করা উত্তম। ওয়েটারকে টিপস দিতে হলে তা একটি টিস্যুতে পেঁচিয়ে দিতে হবে। রেস্তোরাঁ থেকে বেরোনোর সময় আরও একবার হাত স্যানিটাইজ করে নেওয়া যেতে পারে। যেখানে ঢোকা ও বের হওয়ার জন্য আলাদা পথ থাকে, সেখানে ভিড় কম হয়। সে রকম রেস্তোরাঁয় যাওয়া যেতে পারে। ব্যক্তিগত সতর্কতার জন্য প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ভিড় এড়িয়ে চললে ভালো। ফেরার পর গায়ের জামাকাপড় ছেড়ে ফেলা উত্তম। সম্ভব হলে গোসল করে নিতে হবে।

 ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top