ফিচার I শরৎ থেকে শীতে
প্রকৃতির সন্ধিসময়ে প্রয়োজন ত্বকের বিশেষ পরিচর্যা। সে জন্য রূপরসদও বদলে ফেলা চাই
আষাঢ়ে উষ্ণতার চোটপাট, শরতে তেড়ে-বৃষ্টি, আবার ডিসেম্বরে পা দিয়েও শাল-সোয়েটার ছাড়া দিব্যি দিন কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে এখন। সব মিলিয়ে প্রকৃতিকে যেন আর নির্দিষ্ট নিয়মকানুনের মধ্যে ফেলা যাচ্ছে না কোনোভাবেই। তাই ‘ওয়েদার ট্রানজিশন’ টার্মটাও ক্রমেই চলে যাচ্ছে বাতিলের খাতায়। আবহাওয়ার এ খামখেয়ালিপনা ত্বকও যেন সামলে উঠতে পারছে না। তাই প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন আগেভাগেই। ত্বককে আবহাওয়ার অদল-বদলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে মেনে চলা চাই কমপ্লিট স্কিন কেয়ার রুটিন। পাল্টে নিতে হবে সৌন্দর্যসামগ্রীগুলোও। প্রস্তুতি শুরু করতে হবে ট্রানজিশন পিরিয়ডেই, অর্থাৎ এক মৌসুম থেকে অন্য মৌসুমে পা রাখার মাঝের সময়ে। শরৎ থেকে শীতে যাওয়ার এমন বদলে কেমন হবে ত্বকচর্চা?
ফোমি ফেসওয়াশের বদলে
এই সময় ধীরে ধীরে রূপরুটিনে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। শুরুটা হোক ত্বক পরিষ্কারের পণ্য দিয়েই। ফোমি ফেসওয়াশ ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। তাই শীতে অয়েল অথবা ক্রিম ক্লিনজিং ফর্মুলাই বেশি উপযোগী। এগুলোর বিল্ট ইন ময়শ্চারাইজিং ইনগ্রেডিয়েন্ট ত্বকের ময়লা-দূষণ মেকআপ পরিষ্কার করবে, তবে শুষ্ক করে ফেলবে না চেহারা; বরং বাড়তি আর্দ্রতা জোগাবে।
এক্সফোলিয়েটর নয়
যেকোনো ঋতুতেই এক্সফোলিয়েটরের ব্যবহার ত্বকের যত্নে উপকারী। মৃত কোষ সরিয়ে মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখার জন্য। তবে শীতে না বুঝে ব্যবহার করলে ত্বকের শুষ্কতা, চামড়া ওঠা আর ফাটা ভাব বেড়ে যেতে পারে। আলফা আর বেটা হাইড্রোক্সি অ্যাসিডযুক্ত এক্সফোলিয়েট ত্বকের জন্য কোমল। তবে শীতে এসবও এড়িয়ে যেতে পারলে ভালো; বরং ত্বকে ফেস অয়েল মেখে উষ্ণ পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মুখটা ভালোভাবে মুছে নিলেই চলবে।
টোনারের পরিবর্তে
শীতে প্যাট অন টোনার ফর্মুলা এড়িয়ে ত্বকে ব্যবহার করা চাই কোমল টোনার মিস্ট অপশনগুলো। এটা সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শে আসে না, বরং স্প্রের মতো মুখে ছড়িয়ে পড়ে। ত্বকের জন্য এটা পারফেক্ট অপশন।
ময়শ্চারাইজার নয়, ভারী ক্রিম
ফ্যাটি অ্যাসিড, স্কোয়ালেন আর সেরামাইড- শীতে ত্বককে সুরক্ষা দেওয়ার সেরা উপাদান। তাই ময়শ্চারাইজারের বদলে এগুলোতে তৈরি ভারী ক্রিম এই ঋতুর বিরূপ প্রভাব থেকে বাঁচাবে ত্বককে। জোগাবে বাড়তি আর্দ্রতা।
আইক্রিমের বদলে
ডিহাইড্রেশনের সুস্পষ্ট প্রভাব সবার আগে ধরা পড়ে চোখের চারপাশে। শীতে এর প্রকোপ আরও বেশি। তাই সামান্য অযত্নেই দেখা যায় সূক্ষ্ম রেখা এবং বলিরেখা। তাই এ সময় শুধু আইক্রিম ব্যবহার যথেষ্ট নয়, দরকার লেয়ারিং। প্রথমে আই সিরাম দিয়ে এর ওপর দেওয়া চাই আইক্রিম। এতে শীতের শুষ্কতা থেকে বাঁচবে, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখাবে চোখের চারপাশ।
লিপ বামের পরিবর্তে
শীতে ঠোঁট ফাটা মামুলি ব্যাপার। সৌন্দর্যে ব্যাঘাত ঘটায়। অনেকে লিপ বামের প্রলেপ দিয়েই মনে করেন, ঠোঁট সুরক্ষিত হয়ে গেল। তবে শুষ্কতা কমাতে বা ফাটা রোধে তা যথেষ্ট নয়। এ সময় লিপ সিরাম সবচেয়ে কাজের। কারণ, এই সৌন্দর্যসামগ্রী ঠোঁটের ওপর সেট হয়ে বসে থাকে না, গভীর থেকে ঠোঁটের কোষ সারাই করে। শুষ্কতাও দূর করতে পারে।
জাহেরা শিরীন
ছবি: ইন্টারনেট