ছুটিরঘণ্টা I কাতালান সৌন্দর্য
বার্সেলোনা। ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক শহর। পরতে পরতে ছড়িয়ে রয়েছে অনেক রত্নভাণ্ডার। ভ্রমণ করে এসে লিখেছেন এলিজা বিনতে এলাহী
যতটুকু মনে পড়ে, ছোটবেলায় স্পেন সম্পর্কে জেনেছি ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ইতালিয়া ৯০’ যখন চলছিল। যদিও ফুটবল দল হিসেবে সে সময় স্পেন কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্তও যেতে পারেনি। তবে দেশটির নামের সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে এভাবেই। একবিংশ শতাব্দীতে স্পেন বেশির ভাগ তরুণের কাছে পরিচিত রিয়েল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের জন্য। সঙ্গে স্পেনের ঐতিহ্য ভ্রমণ আর চকোলেট তো রয়েছেই।
তখনো ভাবিনি ভ্রমণ কিংবা ঐতিহ্য ভ্রমণের প্রতি প্রেম এত প্রগাঢ় ও নিবিড় হবে। একে একে ইউরোপের ২৫টি দেশের জানা-অজানা শহরের পথে পথে ঘুরে বেড়াব। কেউ যদি আমায় জিজ্ঞেস করে, ঐতিহ্য ভ্রমণে মহাদেশটির কোন কোন শহরে যাওয়া যেতে পারে, আমি শুরুতেই বলব, ইতালির রোম, স্পেনের বার্সেলোনা আর গ্রিসের এথেন্স। তবে এ কথাও সত্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, পর্যটনশিল্পের সঙ্গে ইতিহাস সংযুক্ত করে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনয়নে গোটা ইউরোপ সিদ্ধহস্ত।
স্পেনে প্রদেশ রয়েছে ৫০টি। দেশটি ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। প্রস্তর নির্মিত দুর্গপ্রাসাদ, বরফের পর্বতমালা, বিশাল আকারের সৌধ, জল সরবরাহের প্রাচীন নালা, স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষ স্পেনকে পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল করে তুলেছে। আন্দালুসিয়া প্রদেশের রাজধানী সেবিয়া সংগীতের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী জীবনযাপনের জন্য বিখ্যাত। কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সেলোনা স্থাপত্য এবং নৌপরিবহনশিল্পের জন্য, আর জাতীয় রাজধানী মাদ্রিদের আঁকাবাঁকা সরু পথ, জাদুঘর, গ্রন্থাগার এবং ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় জীবনধারা পর্যটকদের উৎসাহের জায়গা। এ ছাড়া ষাঁড়ের লড়াই, ফিয়েস্তা উৎসব, ফ্লেমিংগো ড্যান্স স্পেনের সংস্কৃতিকে দিয়েছে নিজস্বতা।
আট দিনের স্পেন ভ্রমণে আমি তিন দিনই কাটিয়েছি বার্সেলোনায়। ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত এবং গর্বের সঙ্গে রাজকীয় স্থাপত্যের বিস্ময় ছড়ানো এই শহরের প্রতিটি কোনায়, প্রতিটি ইঞ্চিতে সুপ্ত রয়েছে ইতিহাস। এমন একটি শহরের পুরো স্বাদ নিতে হলে আপনাকে দীর্ঘ সময়জুড়ে, সপ্তাহব্যাপী হেঁটে হেঁটে দেখতে হবে। আমার এমনটিই ইচ্ছে। তবে বিদেশ-বিভুঁইয়ে তা সব সময় সম্ভব নয়। কেননা ভ্রমণের সঙ্গে আর্থিক সংগতির একটি বিরাট যোগসাজশ রয়েছে।
সাগ্রাডা ফামিলিয়া
বার্সেলোনায় এলে কাতালানের আধুনিকতার হোতা খ্যাত স্থপতি আন্তোনি গাউদির গড়া সাগ্রাডা ফামিলিয়া প্রতীকী মন্দির দেখার সুযোগ মিস করা ঠিক হবে না! এই রোমান ক্যাথলিক গির্জা বিশ্বের কয়েকটি আলোচিত অসমাপ্ত ভবনের একটি। ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দিয়েছে একে। ১৮৮২ সালে এর নির্মাণ শুরু হয়। বলা হয়ে থাকে, ২০২৬ সালের মধ্যে তা শেষ হবে। এখানে প্রবেশের টিকিট আগে থেকে কেটে রাখা ভালো। নয়তো লম্বা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে টিকিটের লাইনে।
আমি যখন এই গির্জায় হাজির, তখনো এর কাজ চলছে। বেশ কিছু অংশ ছিল কাপড়ে ঢাকা। তাই প্রাণভরে ছবি তুলতে পারিনি। ব্যাসিলিকার তিনটি প্রতীকী ডিজাইনের মাধ্যমে ধর্মীয় বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এগুলোর মধ্যে নেটিভিটি ফ্যাসাড খ্রিস্টের জন্মের প্রতিনিধিত্ব করে। প্যাশন ফেসেড প্রতিনিধিত্ব করে ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার সময় যিশুর যন্ত্রণাকে। অন্যদিকে গ্লোরি ফ্যাসাড যিশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থান এবং তার বর্তমান ও ভবিষ্যতের গৌরবের প্রতীক। এখানে ১৮টি উঁচু টাওয়ার রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ১০টির। সেখানকার দেয়ালে এমনটিই লেখা ছিল। টাওয়ারের ওপর থেকে প্রায় পুরো বার্সেলোনা শহর দেখা যায়, দূর সীমানা পর্যন্ত।
পার্ক গুয়েল
স্থপতি গাউদির আরেকটি রত্ন। পার্কটির নামকরণ করা হয় ধনী উদ্যোক্তা ইউসেবি গুয়েলের নামে। তিনিই গাউদিকে একটি বিলাসবহুল আবাসিক কমপ্লেক্স নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই প্রকল্প বাতিল হয়ে গেলে গাউদি একটি পার্কের ডিজাইন করেন। ১৯১৪ সালে তৈরি হয় পার্ক গুয়েল। এর ৯ বছর পর থেকে এখনো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। ১৯৮৪ সালে এই স্থাপনাকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা দেয়।
পার্কটি কাতালান আধুনিকতাবাদের স্থাপত্যশৈলী অনুসরণ করে বানানো। আন্তোনি গাউদির ডিজাইন করা বেশ কয়েকটি স্বতন্ত্র স্থান এবং কাঠামো রয়েছে এই পার্কের ভেতর। পার্কে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে রঙিন মোজাইক ড্রাগন। পার্ক গুয়েলের সালা হিপোস্টিলা (হাইপোস্টাইল রুম), মিউজু দেল গার্দা (গার্ড মিউজিয়াম), জার্ডিন্স ডি’অস্ট্রিয়া (অস্ট্রিয়ার উদ্যান), প্লাকা দে লা নাতুরা (প্রাকৃতিক সোপান), আকর্ষণীয় পাথরের রাস্তা—সবই সরাসরি গাউদির প্রতিভা থেকে জন্ম নেওয়া শৈলী।
গথিক কোয়ার্টার
বার্সেলোনার গথিক কোয়ার্টার নিয়ে আসলে একটি পুরো ভ্রমণ বই লিখে ফেলা সম্ভব! এই কোয়ার্টারের রস আস্বাদন করতে হলে হেঁটেই প্রতিটি কর্নার দেখতে হবে। বলা হয়ে থাকে, বার্সেলোনার সত্যিকারের ইতিহাস শুরু হয়েছিল ঠিক যেখানে গথিক কোয়ার্টার আজ দাঁড়িয়ে আছে, সেখান থেকে। কেননা এখানেই রোমানরা তাদের প্রথম বসতি স্থাপন করেছিল। ৬০ ফুট উঁচু প্রাচীর সংযোজনের মাধ্যমে সুরক্ষিত ছিল এটি। সেই প্রাচীরের ভগ্নাংশ আজও টিকে রয়েছে। মধ্যযুগীয় অনেক স্থাপনা এখনো দাঁড়িয়ে আছে একইভাবে। গথিক কোয়ার্টারের অনেক রাস্তায় অবশ্য বাহন চলাচল বন্ধ। পর্যটকেরা হেঁটে সরু ও ঘোরানো রাস্তা এবং গলিপথগুলো ঘুরে দেখার সুযোগ পান। এখানে আপনি নিজের গতিতে হাঁটতে পারেন, অথবা চাইলে ওয়াকিং ট্যুরের নিতে পারেন সাহায্য। ব্যক্তিগতভাবে আমি একটা ওয়াকিং ট্যুরে জয়েন করেছিলাম।
গথিক কোয়ার্টারের একেবারে কেন্দ্রে দেখা পাবেন লা সেউ। পুরো শহরের গথিক স্থাপত্যের সবচেয়ে সুন্দর উদাহরণগুলোর একটি চমৎকার এই ক্যাথেড্রাল। দিনের বেলা এটি আশ্চর্যজনক আর রাতের আলোকসজ্জাও একেবারেই শ্বাসরুদ্ধকর! এই ক্যাথেড্রালকে ঘিরে অনেক ঐতিহাসিক ভবনও রয়েছে। অনেক পর্যটক এই ক্যাথেড্রালে এসেই তাদের গথিক কোয়ার্টার অন্বেষণ শুরু করেন; তারপরে ছড়িয়ে পড়েন। হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়বে ঐতিহাসিক আকর্ষণ ছাড়াও বেশ কিছু বিখ্যাত জাদুঘর, মিষ্টি ও চকোলেটের ছোট ছোট দোকান, অদ্ভুত বুটিক এবং ক্ল্যাসিক কাতালোনিয়ান খাবারের দোকান।
গথিক কোয়ার্টারের আবহ এমনই ইন্দ্রজালিক, ভাষায় বর্ণনা করা দুরূহ। প্লাকা রিয়াল এলাকাটি স্থপতি গাউদির ডিজাইন করা ল্যাম্পপোস্টে ভরা। এখানে থাকা ঝরনাটি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের দারুণভাবে আকর্ষণ করে। অন্যদিকে, যারা গথিক কোয়ার্টার ভ্রমণ করেন, তারা সাধারণত লা রাম্বা এলাকায় বিচরণ করতে ভালোবাসেন। ক্যাফে, কেনাকাটার সুযোগ এবং অন্য অনেক উৎসব ও ক্রিয়াকলাপে সে এক প্রাণবন্ত পরিবেশ!
লা বোকেরিয়ার ফলের জুস
কী নেই লা বোকেরিয়াতে! এ এক বর্ণিল বাজার। দেখে মনে হবে, রঙের খেলা চলছে সর্বত্র। বার্সেলোনার শহর ভ্রমণের লিস্টে তিনটি বিষয়ের একটি হলো এই মারকেদো দে লা বোকেরিয়া। এটি ২ হাজার ৫০০ বর্গমিটারের বেশি জায়গা দখল করে আছে। এখানে রয়েছে বিভিন্ন পণ্য বিক্রির ৩০০টি স্টল। পাবেন মাংস, শুকনো ফল, তাজা ফল, শাকসবজি, লেবু, টিনজাত খাবার, মাছ ও সামুদ্রিক খাবার। বাজারে আরও রয়েছে প্রচুর পানশালা।
লা বোকেরিয়া কেন এত বিখ্যাত? কারণ, এটি শুধু স্পেনের নয়, পুরো ইউরোপের সবচেয়ে পুরোনো ও অন্যতম দর্শনীয় বাজার, যার ইতিহাস রয়েছে ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে।
ক্যাথেড্রাল অব বার্সেলোনা
এই চমৎকার গথিক ক্যাথেড্রাল গথিক কোয়ার্টারের সর্বোচ্চ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর চারপাশে রয়েছে মধ্যযুগীয় সরু লেনের এক আনন্দদায়ক গোলকধাঁধা। ক্যাথেড্রালটি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে, রোমানেস্ক যুগে নির্মাণ শুরু হয়ে শেষ হয় মধ্যযুগে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ থেকে বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাইরের অংশটির সংস্কার করা হয়।
ক্যাথেড্রালের দেয়ালে অঙ্কিত সব ইতিহাস জানতে ও উপভোগ করতে বেশ সময়ের প্রয়োজন। সময় খুব অল্প থাকায় আমাকে ভীষণ অতৃপ্তি নিয়ে ফিরতে হয়েছে।
মিউজু ফ্রেডেরিক মারেস
এটি একটি শিল্প ও ভাস্কর্য সংগ্রহশালা। ভাস্কর ফ্রেডেরিক মারেসের হাজার হাজার আইটেমের সংকলন রয়েছে এখানে। গথিক কোয়ার্টারের একটি শান্ত স্কয়ারে এর অবস্থান। দেখে মনে হয়, যেন কোনো গুপ্তধন! জাদুঘরটি দ্বাদশ শতাব্দীর রয়েল প্যালেসের অংশ ছিল। আক্ষরিক অর্থে হাঁ করে কোনো জিনিসের দিকে তাকিয়ে থাকা বলতে যা বোঝায়, আমি সেভাবেই তাকিয়ে ছিলাম এখানকার প্রতিটি ভাস্কর্যের দিকে।
ক্যাম্প ন্যু
শুধু ফুটবল স্টেডিয়াম নয়, জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রও এটি। ক্যাম্প ন্যুকে যথাযথভাবে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রীড়া স্থান হিসেবে গণ্য করা হয়। ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার এই ঘরের মাঠে একসঙ্গে প্রায় এক লাখ দর্শক খেলা দেখতে পারেন। স্টেডিয়ামটির যাত্রা শুরু ১৯৫৭ সালে। ক্যাম্প ন্যুর ইংরেজি করলে দাঁড়ায় ‘দ্য নিউ গ্রাউন্ড’। বার্সেলোনার ম্যাচ দেখা হোক বা স্টেডিয়াম ঘুরে দেখা হোক কিংবা মিউজিয়াম পরিদর্শন করা হোক না কেন, এখানে ভ্রমণ যেকোনো ফুটবলপ্রেমীর জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা।
ক্যাম্প ন্যু এক্সপেরিয়েন্স কাতালোনিয়ার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এখানে আপনি চেঞ্জিং রুম, টানেল টু দ্য পিচ, ডাগআউট, প্রেস রুম, প্রেসিডেন্ট বক্স প্রেস বক্স—সব ঘুরে দেখতে পারবেন। ট্যুরের শুরুতে ম্যাচের দিনে মাঠে থাকার একটি থ্রিডি ভার্চ্যুয়াল অভিজ্ঞতার সঙ্গে আপনাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। সফরটি মিউজিয়াম পরিদর্শনের মাধ্যমে শেষ হয়, যেখানে সাজানো রয়েছে বার্সেলোনা ফুটবল দলের ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন ও ট্রফি।
পুরোনো বন্দর
পোর্ট ভেল, ওল্ড হারবার—বার্সেলোনার বন্দরের প্রাচীনতম অংশ। ১৯৯২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের আগে এটি নতুন করে সাজানো হয়েছে। এর আগে বন্দর এলাকায় ছিল ফাঁকা গুদাম, মার্শালিং ইয়ার্ড এবং কারখানা। সিটি সেন্টার থেকে কিছুক্ষণ হাঁটলে পৌঁছে যাওয়া যায় পোর্ট ভেল হারবারে। এটি এ শহরের সবচেয়ে সুন্দর এলাকাগুলোর একটি। আন্তর্জাতিক পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে সমান জনপ্রিয়। বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর একটি দুর্দান্ত জায়গা।
গথিক কোয়ার্টারের সরু রাস্তাবেষ্টিত একটি পথচারী ওয়াটারফ্রন্ট, পামগাছসহ পোর্ট ভেল দারুণ মনোরম। বার্সেলোনা বন্দরের রয়েছে দুই হাজার বছরের ইতিহাস। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর সারা বছর সক্রিয় থাকে এবং প্রতিবছর প্রায় ১৬ মিলিয়ন পর্যটককে স্বাগত জানায়। কাতালান ভাষায় বার্সেলোনা বন্দরের আনুষ্ঠানিক নাম ‘পোর্ট ডি বার্সেলোনা’। ভূমধ্যসাগর এবং উত্তর আফ্রিকার উপকূলে ফেরি ও ক্রুজ জাহাজগুলো পোর্ট ভেল বন্দর থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
কলম্বাস মনুমেন্ট
বার্সেলোনা শহরের অন্যতম বিখ্যাত এই ভাস্কর্যে কলম্বাসকে তার হাত প্রসারিত করে, তর্জনী তুলে সমুদ্রের দিকে নির্দেশ করতে দেখা যায়। স্তম্ভের ভেতরে একটি লিফট রয়েছে। ফলে ভাস্কর্যের পায়ের নিচে অর্ধবৃত্তাকার প্ল্যাটফর্মে যেতে পারেন পর্যটকেরা। সেখান থেকে শহরের দুর্দান্ত সব দৃশ্য অবলোকন করা যায়।
১৮৮৮ সালে বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মেলার জন্য শহরটির উপকূলে উৎসবের সমাপ্তি নিদর্শন হিসেবে এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। এর উচ্চতা ৬০ মিটার। প্রথমে গুজব রটেছিল, কলম্বাস আসলে আমেরিকার দিকে ইশারা করছেন। তবে তা সঠিক নয়। কেননা আমেরিকা মহাদেশটি রয়েছে এর উল্টো দিকে।
বার্সেলোনা শহরে ছড়িয়ে রয়েছে এই রকম আরও অসংখ্য গল্প, ইতিহাস, ভাস্কর্য, খাবার, স্থাপনা ও উৎসব। তাই এই শহর ভ্রমণ শেষে কোনো পর্যটকই খালি হাতে ফেরেন না। তাদের স্মৃতিতে জমা হয় অমূল্য সব রত্নভাণ্ডার।
ছবি: লেখক ও ইন্টারনেট