এই শহর এই সময় I হিমশীতলতায়
দিনে রোদের দাপট, রাতে হিমশীতলতা—গেল মাসজুড়ে রাজধানীর আবহাওয়া বেশ আদুরেই ছিল বলা চলে! শিল্প ও সংস্কৃতিমনাদের জন্য তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে বসেছিল বিভিন্ন আয়োজন।
বাংলাদেশ-জাপান কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী স্মরণে প্রসিদ্ধ চিত্রশিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়ার (১৯২৯—২০১১) একটি বিশেষ শিল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাপান দূতাবাসে। ১৮ থেকে ২০ নভেম্বর চলা ‘কিবরিয়া: আ রেট্রোস্পেকটিভ’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে শিল্পীর বাছাই করা ৫০টি শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয়। আয়োজনে সহযোগিতা করে সোসাইটি ফর প্রমোশন অব বাংলাদেশ আর্ট (এসপিবিএ) ও দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এসপিবিএ চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী, দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সৈয়দ দুর্জয় রহমান। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। বলে রাখা ভালো, ১৯৫৯ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত টোকিও ইউনিভার্সিটি অব আর্টসে পড়ার জন্য জাপান সরকারের কাছ থেকে বৃত্তি পেয়েছিলেন শিল্পী কিবরিয়া। ওই দেশে থাকাকালে জাপানি শিল্পীদের কাছ থেকে জাপানি নন্দনতত্ত্বের মাধ্যমে তিনি বেশ প্রভাবিত হন বলে অভিমত শিল্পবোদ্ধাদের।
সাঁওতালদের জীবনাচার, সামাজিক-রাজনৈতিক অধিকার ও সংগ্রামী ঐতিহ্যের নানা দ্বান্দ্বিক বিষয় নিয়ে নাট্যদল আরণ্যকের বহুল প্রশংসিত নাটক ‘রাঢ়াঙ’-এর ২০০তম প্রদর্শনী হয়ে গেল ১৮ নভেম্বর, জাতীয় নাট্যশালায়। ২০০৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রথম মঞ্চে আসে প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত এ নাটক। এবারের প্রদর্শনীর অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন চঞ্চল চৌধুরী। এর আগে ২০২০ সালে শেষবার তিনি ‘রাঢ়াঙ’-এ অভিনয় করেছিলেন। প্রদর্শনীর দিন সকালে আয়োজন করা হয় বিশেষ সেমিনার। তাতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল। মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন রামেন্দু মজুমদার, গোলাম কুদ্দুছ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, অধ্যাপক শফি আহমেদ, অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী ও রবীন্দ্রনাথ সরেন। মামুনুর রশীদ জানান, ২০০০ সালে নওগাঁয় আলফ্রেড সরেনের নেতৃত্বে ভূমির জন্য লড়াই ও আলফ্রেড সরেনের আত্মত্যাগ, সাঁওতালদের দীর্ঘ সংগ্রামের বিশাল উত্তরাধিকারকে মঞ্চে তুলে ধরার প্রয়াসই ‘রাঢ়াঙ’। ইতিমধ্যে দেশের বাইরেও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রদর্শিত হয়েছে নাটকটি।
ক্যানসারের কারণে অনেক শিশুরই বেড়ে ওঠার স্বপ্ন ও সম্ভাবনা থমকে যায় অকালে। জটিল এই রোগের সঙ্গে লড়াই করা শিশুদের দিনগুলোকে খানিকটা আনন্দময় করে তোলার প্রচেষ্টায় তাদের ক্যামেরাবন্দি করেছেন ফারহানা সেতু। ক্যানসারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং ক্যানসার-আক্রান্ত শিশুদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে সেই ছবিগুলোর এক ব্যতিক্রমী এক্সিবিশনের আয়োজন করে মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন। বনানীর এশিয়াটিক সেন্টারের ‘বাতিঘর, স্মৃতিতে আলী যাকের’-এ প্রদর্শনীটির উদ্বোধন হয় ২০ নভেম্বর। ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত ‘অঙ্কুর’ নামের এই প্রদর্শনী। আয়োজকদের পক্ষে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ শিশু আক্রান্ত হয় রক্ত বা অস্থিমজ্জার ক্যানসারে; তাদের মধ্যে সুস্থতার হার মাত্র ২০ শতাংশ। আক্রান্ত শিশুদের স্বপ্ন ও দর্শনের প্রতিচ্ছবির দেখা মেলে ‘অঙ্কুর’-এ।
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ