skip to Main Content

ফরহিম I ফেস ম্যাপিং ফ্যাক্ট

শাস্ত্র মেনে মনোযোগী চোখ মুখশ্রীর বিভিন্ন অংশে। তারপর? অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা

ত্বকে হঠাৎ হঠাৎ ব্রেক আউটের সমস্যা, ব্রণের উপদ্রব বা আনইভেন স্কিন-টোনের ঝক্কি! তবে এখনই সময় অন্তর্নিহিত কারণগুলো ঘেঁটে দেখার। এই সমস্যাগুলোর মূলোৎপাটনের সহজ সমাধান ফেস ম্যাপিং, যার সূত্রপাত সহস্র বছর আগে প্রাচীন আয়ুর্বেদ এবং চীনা মেডিসিনের সঙ্গে জড়িত।
ত্বক আসলে দেহের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার বহিঃপ্রকাশ। অনেকটা আয়নার মতো। কিডনি, হৃৎপিণ্ড, লিভারের মতো বড় অর্গানগুলোর স্বাভাবিক কার্যকারিতা বুঝতে ফেস ম্যাপিং অনন্য ভূমিকা পালন করে।
ফেস ম্যাপিং আসলে কী
এটি মূলত প্রাচীন এক আয়ুর্বেদিক প্রক্রিয়া। ত্বকের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সমস্যা নির্ণয়ের জন্য। বিভিন্ন ধরনের ত্বক সমস্যা যেমন ব্রণ, ব্রেক আউট, অ্যালার্জি, অসামঞ্জস্য স্কিন-টোনের মাধ্যমে দেহে লুকিয়ে থাকা রোগবালাই ঠাহর করাই এর উদ্দেশ্য।
ডায়েট, ঘুম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়াগুলোকে বাধাগ্রস্ত করে। তারই প্রতিচ্ছবি ত্বকে প্রতিফলিত হয়। ফেস ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে সেই সমস্যাগুলোর কারণ, অবস্থা ও প্রতিকার খুঁজে বের করা সম্ভব।
পুরো মুখমণ্ডলকে একটি ম্যাপের সঙ্গে তুলনা করলে একে তিনটি মূল বা প্রধান অঞ্চলে ভাগ করা যায়—চিবুক, গাল এবং টি জোন।
চিবুক
হরমোনের কারণে অনেকের চিবুকে ব্রণের উৎপাত বেড়ে যায়। একে অনেক ডার্মাটোলজিস্ট ‘দ্য বিয়ার্ড অব অ্যাকনে’ও সম্বোধন করেন। এ ছাড়া ত্বকে ইস্টের উপদ্রব বেড়ে গেলে কিংবা ইস্ট ইনফেকশন অথবা অ্যালার্জি থাকলে অনেকের চিবুকে আসতে পারে এই অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি। যারা ইস্ট অ্যালার্জিতে ভুগছেন, ইস্ট সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলার মাধ্যমে খুব দ্রুতই এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। যদি সুইট টুথ থাকে, তবে চিবুকে ব্রণের সমস্যা অচিরেই বেড়ে যেতে পারে। ড্রাইড ফ্রুট, অ্যালকোহল, হোল হুইট ব্রেড, অতিরিক্ত শর্করা, ক্রিমযুক্ত খাবার, ময়দা, চিনিযুক্ত খাবার চিবুকে ব্রণের সমস্যাকে আরও ত্বরান্বিত করে। যদি মুখটাকে একটু আয়ত্তে আনা যায়, তবে চিবুকে ব্রণের সমস্যা সহজে রুখে দেওয়া যাবে।
এ ছাড়া ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী স্যালিসাইলিক অ্যাসিড এবং বেনজয়েল পার-অক্সাইড ব্যবহার করলে মিলবে সুফল।
গাল
মনটা খারাপ! গালে হাত দিয়ে বসে পড়ার অভ্যাস আছে অনেকের। অথবা ঘর্মাক্ত মুখকে হাত দিয়ে মোছা, কিংবা আদর করে কেউ গাল টেনে দিল; ব্যস, ব্যাকটেরিয়া ঘুরেফিরে শুরু করল উৎপাত! গালে ব্রণের সমস্যার আরও একটা প্রধান কারণ মোবাইল ফোন। ফোনটা একদমই দায়সারা গোছে এখানে-ওখানে ফেলে রাখা, ল্যাপটপের কি-বোর্ড চাপার সময় আনমনেই হাতটা গালে ছুঁয়ে দেওয়া, বালিশের কভারটা বদলানোর ক্ষেত্রে উদাসীনতা—এ রকম ছোট ছোট অনেক কারণে গালে অ্যাকনের প্রকোপ দেখা দেয়। শুরুটা হতে পারে সচেতনতা থেকে। ছোট ছোট বদভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে সহজে এই সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
এ ছাড়া গালে ব্রণের আরেকটা কারণ হতে পারে ফুসফুস ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা। যদি বিষয়টি এমন হয়, তবে দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া চাই।
টি জোন
কপাল, নাক, থুতনি—এই তিনে মিলেই টি জোন। আর এখানেই অয়েল গ্ল্যান্ডের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। স্ট্রেস নিলে অয়েল সিক্রেশনের পরিমাণ যেমন বেড়ে যায়, তেমনি বাড়ে ব্রেক আউটও। কপালের সঙ্গে জড়িত আছে নার্ভাস সিস্টেম, হজমপ্রক্রিয়া এবং ভাটা দশা। আয়ুর্বেদের মতে, ভাটা দশা সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে চালনা করে। তাই কপালে ব্রণের কারণ হতে পারে মানসিক চাপ, শুষ্কতা এবং আন্ত্রিক প্রদাহ।
পরিমাণমতো পানি পান করা এবং প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলার মাধ্যমে খুব সহজে এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়া খাদ্যাভ্যাস থেকে দুধ, চিনি, চিজ, তেল—এগুলো বাদ দিলে এই সমস্যা দূর হয়ে যায় দ্রুত। ডায়েটে প্রো-বায়োটিক যুক্ত করা, নিয়মিত ইয়োগা এবং এক্সারসাইজ করার মাধ্যমেও টি জোনে ব্রেক আউট রুখে দেয়া সম্ভব। রক্তচাপে সমস্যা থাকলে নাকে দেখা দিতে পারে ব্রণের উপদ্রব। ঝাল খাবার, প্রাণিজ প্রোটিন, ক্যাফেইন কন্ট্রোলের মাধ্যমে নাকে ব্রণের উৎপাত কমানো যেতে পারে।
ভিটামিন, ওমেগা ৩, ৬, সাপ্লিমেন্টস, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খাদ্যাভ্যাসে যোগ করার মাধ্যমেও টি জোনকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।

 বিদিশা শরাফ
মডেল: রাফি
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top