skip to Main Content

সেলুলয়েড I লি

উৎস গ্রন্থ: দ্য লাইভস অব লি মিলার/ অ্যান্টনি পেনরোজ
চিত্রনাট্য: লিজ হানা, জন কলি, ম্যারিয়ন হিউম
পরিচালনা: এলেন কুরাস
চিত্রগ্রহণ: পাভেল এদেলমান
সম্পাদনা: মিকেল ই. জি. নিলসেন
অভিনয়: কেট উইন্সলেট, অ্যান্ডি স্যামবার্গ, আলেক্সান্দার স্কার্সগোর্ড
সময়ব্যাপ্তি: ১১৬ মিনিট
ভাষা: ইংরেজি
দেশ: যুক্তরাজ্য
মুক্তি: ২০২৩

একদা যে লাস্যময়ী তরুণী হরদম শিহরণ জুগিয়ে কাঁপিয়েছেন ফ্যাশন রানওয়ে, ফটোগ্রাফারের ক্যামেরার সামনে ছড়িয়েছেন রূপের চোখধাঁধানো দ্যুতি, অবাধ মেলামেশা আর বেখেয়ালি তাড়নায় যৌবনের দিগ্ভ্রান্ত দূতের মতো কাটিয়েছেন ভোগবিলাসী জীবন, তিনিই হাজির সরাসরি যুদ্ধের রূঢ় ময়দানে। মুহুর্মুহু গোলাবর্ষণ, সদ্য জীবন খোয়ানো অগুনতি মৃতদেহের দগদগে ক্ষত আর ধ্বংসস্তূপের সামনে। যেখানে পায়ে পায়ে মৃত্যুর উপস্থিতি। একপলকে জীবননাশের শঙ্কা। তবু তিনি দুর্মর। পুষ্প বিছানাতুল্য জীবনকে পায়ে দলে এমন বিভীষিকার ভেতর নিজেকে হাজির করে জীবনের প্রকৃত তাৎপর্য নিরিখ করতে এবং সেটির সাক্ষ্য পরবর্তী প্রজন্ম ও ইতিহাসের জন্য ক্যামেরায় দৃশ্যবন্দীর মাধ্যমে নথিভুক্ত করে রাখার দায়িত্ববোধে অনড় তিনি।
তিনি লি মিলার (২৩ এপ্রিল ১৯০৭-২১ জুলাই ১৯৭৭)। পুরো নাম এলিজাবেথ ‘লি’ মিলার, লেডি পেনরোজ। গেল শতকের বিশের দশকের আমেরিকান ফ্যাশন মডেল। তুমুল জনপ্রিয়তার মধ্যেই যিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন প্যারিসে। সেখানে গিয়ে পরিণত হন ফ্যাশন ও ফাইন-আর্ট ফটোগ্রাফারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ‘ব্রিটিশ ভোগ’ ম্যাগাজিনের ওয়ার করেসপনডেন্ট হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে দুঃসাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। ফ্যাশনের মতো কোমল ভুবনে বিচরণকারী এক নারীর পক্ষে যুদ্ধের ভয়াবহতার ভেতর ক্যামেরাকে অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগিয়ে দায়িত্ব পালন করা মোটেই সহজ নয়, বরং অনেকটাই অভাবনীয় ছিল, সে কথা বলা বাহুল্য। এই কিংবদন্তিকে ঘিরে জীবনীভিত্তিক মুভি ‘লি’।
মুভিতে লির ১৯৩৮ সাল থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার পরপরের, মোট ১০ বছরের জীবনের চিত্র আঁকা হয়েছে। এর সূচনা ঘটে একটি ফ্রেমিং ডিভাইসের মাধ্যমে। যেখানে লিকে দেখা যায় নিজের খামারবাড়িতে। সময়কাল ১৯৭৭। একজন তরুণ সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন তত দিনে বৃদ্ধা হয়ে যাওয়া লি। সেখানে, ফ্ল্যাশব্যাকে নিজ জীবনের গল্প শোনান তিনি। যে গল্প শোনানো শেষে, অর্থাৎ মুভির সমাপ্তি অংশে যিনি মিলিয়ে যান হাওয়ায়।
নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া, ‘ভোগ’-এর মডেল হিসেবে সুনাম কুড়ানো, আমেরিকান প্রসিদ্ধ ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট ম্যান রের শিষ্য ও প্রেমিকা হিসেবে বেপরোয়া যৌবন কাটানো এবং পরবর্তীকালে ফ্যাশন ফটোগ্রাফার হিসেবে নিজের সৃষ্টিকর্মের ভেতর পরাবাস্তবতার রেশ ছড়ানো লির জীবনীকে অনেকের কাছে একই সঙ্গে কৌতূহলোদ্দীপক ও সন্দেহজনক মনে হতে পারে। তাই একে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা নির্মাতার জন্য ছিল দারুণ চ্যালেঞ্জিং। আর তা আমেরিকান ফিল্মমেকার এলেন কুরাস দারুণভাবেই উতরে গেছেন, বিশেষত নামভূমিকায় ‘টাইটানিক’খ্যাত হলিউড তারকা কেট উইন্সলেটের দুর্দান্ত অভিনয়ের মহিমায়। মুভিটিতে লির তোলা সত্যিকারের বেশ কিছু আলোকচিত্র ব্যবহার করেছেন নির্মাতা। পাশাপাশি ওই দুঃসাহসী ফটোগ্রাফারের কিছু আলোকচিত্রকে করেছেন পুনঃসৃষ্টি।
সরল জীবন বেছে নেননি লি। বাস্তবতার সঙ্গে পরাবাস্তবতা ও জাদুবাস্তবতার ঘটিয়েছিলেন বিপজ্জনক মিশ্রণ। তারই ছাপ স্পষ্ট হয়ে আছে ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া বায়োগ্রাফিক্যাল ওয়ার ড্রামা জনরার ‘লি’ মুভিতে।

 আরিফুল ইসলাম

কুইজ
১। ‘লি’ কোন জনরার মুভি?
[ক] ক্রাইম ফিকশন
[খ] কমেডি
[গ] ডার্ক হিউমার
[ঘ] ওয়ার ড্রামা

২। নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন কে?
[ক] কেট উইন্সলেট
[খ] ডেমি মুর
[গ] লেডি গাগা
[ঘ] শার্লট গেইন্সব্যু

৩। প্রথম জীবনে লি কী ছিলেন?
[ক] ফ্যাশন ফটোগ্রাফার
[খ] ফ্যাশন মডেল
[গ] ফ্যাশন কোরিওগ্রাফার
[ঘ] ফ্যাশন জার্নালিস্ট

গত সংখ্যার বিজয়ী
১. শিলামণি, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা,
২. নাজমুল হাসান, ধানমন্ডি, ঢাকা,
৩. সানজানা ইয়াসমিন, হালিশহর, চট্টগ্রাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top