skip to Main Content

বহুরূপী I কাবাব ক্যারিশমা

মাছ বা মাংস সমন্বিত খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে অনেকে বেশ পছন্দ করেন। যখন খোলা শিখায় কিংবা কাঠকয়লার আগুনে ভাজা হয়, এসব খাবারের স্বাদ আরও খুলে যায়। হ্যাঁ, এমনভাবে ভাজা কাবাবের স্বাদে সবাই মুগ্ধ থাকে। মুরগি, খাসি কিংবা গরুর মাংস, অথবা পনির কি সবজি—যা দিয়েই তৈরি হোক না কেন, কাবাব বিশ্বজুড়ে অত্যন্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয়। এর প্রতি ঝোঁক মধ্যপ্রাচ্যের রন্ধনশৈলীর সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।
শিক কাবাবের জুড়ি মেলা ভার। প্রধানত অ্যাপেটাইজার বা স্ন্যাকস হিসেবে বিবেচিত। ভারতীয় উপমহাদেশে মোগলদের হেঁশেলে উদ্ভূত। উপমহাদেশীয় মসলা মিশিয়ে মাংসের সঙ্গে প্রস্তুত করা হয়। পরে এটি স্কিউয়ারের ওপর ভাজা হয়। বিভিন্ন ধরনের মসলার ব্যবহার একে এনে দেয় সমৃদ্ধ স্বাদ ও ঘ্রাণ।
ঐতিহ্যবাহী মোগল অ্যাপেটাইজার রসাল, সরস, সিল্কি-টেক্সচারযুক্ত ও মনোরম হয়। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ মালাই কাবাব। সাধারণত মুরগির মাংসের বড় টুকরো দিয়ে তৈরি, যা দই, ক্রিম, কাজুবাদাম ও চিনাবাদাম দিয়ে ম্যারিনেট করা হয়। এরপর মুরগির টুকরো স্কিউয়ারে রেখে ২৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে প্রিহিটেড ওভেনে ১৫ মিনিট গ্রিল করা হয়।
অ্যাপেটাইজার বা স্ন্যাকস হিসেবে গালুটি কাবাবের স্বাদ যেকোনো অনুষ্ঠান বা পার্টিতে বাড়তি আকর্ষণ যোগ করে। রাজকীয় ট্রিটটি কিমা করা মাটন ও কাঁচা পেঁপে দিয়ে তৈরি, যা পরবর্তীকালে মসলা দিয়ে মেরিনেট করা হয়। তারপর কিমা করা মাটনটি বেসন, ডিম ও কাঁচা মরিচের সঙ্গে বাটাতে মিশিয়ে তেলে ভাজা হয়। মসলা ও খাঁটি ঘিয়ের ব্যবহার একে চমৎকার স্বাদ ও সুবাস এনে দেয়। গালুটি কাবাব আওয়াধি রন্ধনপ্রণালির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি নবাবি রন্ধনশৈলীতে তৈরি করা হয়। লক্ষৌর নবাব ওয়াজিদ আলী শাহের পাতে প্রথমবার এটি পরিবেশন করা হয়েছিল। বলে রাখা ভালো, তার দাঁত ছিল নাজুক। ফলে তিনি এমন কাবাব খেতে চেয়েছিলেন, যা মুখের মধ্যে নরম হয়ে গলে যাবে।
শিশ কাবাব মধ্যপ্রাচ্য ও আওয়াধি খাবারের একটি জনপ্রিয় সংযোজন। লেবুর রস, বেল মরিচ, অলিভ অয়েল, জিরা, গোলমরিচ ও আদা দিয়ে মেরিনেট করা ভেড়ার মাংসে এই বিদেশি অ্যাপেটাইজার তৈরি করা হয়। প্রস্তুত করতে গ্রিলটি আগে থেকে গরম করে রেখে ভেড়ার মাংসের টুকরো একটি তন্দুর চুলার ওপর স্কিউয়ারে রান্না করা চাই।
টুন্ডে কাবাব একটি লিপ-স্ম্যাকিং ডিশ, যা প্রধানত স্টার্টার বা অ্যাপেটাইজার হিসেবে ব্যবহৃত। সাধারণত মহিষের মাংস এবং ১৬০ ধরনের মসলার মধ্যে পছন্দসইগুলো ব্যবহারে তৈরি করা যায়। দই, গরমমসলা, গ্রেট করা আদা, রসুনগুঁড়া, লবঙ্গ, এলাচি, ছোট পেঁয়াজ, গলানো ঘি, শুকনো পুদিনা, ভিনেগার, চিনি ও চুন ব্যবহারে তৈরি করার চল বেশি।
শামি কাবাবের উৎপত্তি মোগলদের রাজকীয় রান্নাঘরে। ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সমান জনপ্রিয়। কিমা করা মাটন এবং অন্যান্য উপাদান যেমন কাঁচা মরিচ, লাল মরিচ, গোলমরিচ, জিরা, লবঙ্গ, দারুচিনি, ধনে দিয়ে তৈরি।
হারিয়ালি কাবাব নামক বিখ্যাত স্টার্টারটি হাড়বিহীন চিকেন কিউবে তৈরি; সঙ্গে ধনে, পুদিনা এবং অন্যান্য মসলার সুগন্ধযুক্ত গ্রিন পেস্টে মিশ্রণ করা হয়। নিরামিষভোজীরা চাইলে চিকেনের পরিবর্তে পনির ব্যবহার এবং একে কাস্টমাইজ করতে পারেন। এই কাবাব প্রস্তুত করতে লেবুর রস, লবণ ও লঙ্কাগুঁড়া মুরগির কিউবের সঙ্গে মেশাতে হবে। রসুন, আদা, পুদিনা, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচসহ সব মসলা কষিয়ে নিয়ে দই, গরমমসলা ও ধনেগুঁড়াযুক্ত মিশ্রণে গ্রিন পেস্ট যোগ করা চাই। এই পেস্ট দিয়ে চিকেন ম্যারিনেট করুন। ওভেন প্রিহিট করে ম্যারিনেট করা মুরগির কিউবগুলো তেলমিশ্রিত স্কিউয়ারে দিন। ঘরে বানানো ঝামেলার মনে হলে, সুস্বাদু হারিয়ালি কাবাব উপভোগ করতে, সেরা যেকোনো ফাইন ডাইনিং রেস্টুরেন্ট বেছে নিতে পারেন।

 ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top