সেলুলয়েড I প্রিয় মালতী
চিত্রনাট্য: শঙ্খ দাশগুপ্ত, আবু সাঈদ রানা
পরিচালনা: শঙ্খ দাশগুপ্ত
চিত্রগ্রহণ: বরকত হোসেন পলাশ
সম্পাদনা: সালেহ সোবহান অনীম
অভিনয়: মেহজাবীন চৌধুরী, নাদের চৌধুরী, আজাদ আবুল কালাম, সমু চৌধুরী, শহিদুল আলম সাচ্চু, শাহজাহান সম্রাট, রিজভী রিজু
সময়ব্যাপ্তি: ১১৯ মিনিট
ভাষা: বাংলা
দেশ: বাংলাদেশ
মুক্তি: ২০২৪
রাজধানীর পুরান ঢাকার ভিড়ভাট্টা ও শোরগোলের মাঝে তরুণ যুগলের কাব্যময় সংসার। তরুণী অন্তঃসত্ত্বা। তরুণটি কারখানাশ্রমিক। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে ফারাক আছে ঠিকই, তবে দৃশ্যত সুখের ঘাটতি নেই তেমন। তরুণীর নাম মালতী দাশ। তরুণ পলাশ কুমার দাশ। প্রাত্যহিক জীবনের ছোট ছোট আনন্দ, খুনসুটি আর ভালোবাসায় মাখামাখি রঙিন মুহূর্তগুলো তারা বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে। তাতে নবজীবনের দোলা দিয়ে যায় অনাগত সন্তান।
এমন সুখ আর আনন্দ খুব বেশি দিন স্থায়ী হয় না এই যুগলের জীবনে। অগ্নিকাণ্ডে পলাশ নিহত হলে মালতীর জীবনে নেমে আসে রূঢ় বাস্তবতার বিভীষিকা। ওলটপালট হয়ে যায় সবকিছু। তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে সরকারের পক্ষ থেকে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের অর্থসাহায্য দেওয়ার ঘোষণা আসার পর। শ্বশুর, বাড়িওয়ালা আর আগন্তুক পাওনাদারের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়ে মালতী। এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী পলাশ মুমূর্ষু অবস্থার উদ্ধার হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গিয়েছিল এবং তাকে চিতার আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে কোনো নথি কিংবা লাশের পোস্ট মর্টেমের সুযোগ না থাকায় অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা দুরূহ হয়ে ওঠে। তবু চলতে থাকে মালতীর লড়াই। তার এই সংগ্রামমুখর জীবনে পাশে থাকে পলাশ ও মালতীর দুই বন্ধু। বিশেষত এক বন্ধু, যে একটি স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি স্টেশনারি দোকান চালায়।
তবু শেষ হাসি হাসা হয় না মালতীর। নিজের ঠিকঠাক যত্ন নেওয়ার এতটুকু ফুরসত বা সুযোগ পায়নি বলে সন্তান প্রসবের পর মারা যায় সে। তার সদ্যোজাত সন্তানটি বড় হতে থাকে সেই বন্ধুর কাছে। শহর ঢাকার নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনের এমন চিত্র চলচ্চিত্রের ক্যানভাসে এঁকেছেন বাংলাদেশি তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্ত। ‘প্রিয় মালতী’ চলচ্চিত্রে; যা ইতিমধ্যে বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানোরামা সেকশনে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারজয়ী ‘প্রিয় মালতী’ সম্পর্কে গণমাধ্যমে নির্মাতার ভাষ্য, ‘সিনেমায় মালতী চরিত্রটি সংগ্রামের। সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয় চরিত্রটিকে। দেশের অনেক নারীর জীবনেই এমন ঘটনা আছে। জীবনসংগ্রামের পাশাপাশি প্রচলিত কিছু নিয়মকেও প্রশ্ন করা হয়েছে। মালতীর সমস্যা-সংগ্রামগুলো শুধু তার একার নয়, এগুলো দেশের মানুষের সমস্যা-সংগ্রাম। মালতী চরিত্রটি একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর। বিশৃঙ্খল এই শহরে তাকে লড়াই করতে হয় শ্বশুরবাড়ি, সমাজ ও ধর্মীয় রীতিনীতির বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি আমি প্রশ্ন করতে চেয়েছি, একজন মানুষের অস্তিত্ব কি ডেথ সার্টিফিকেট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে?’ তার সেই প্রচেষ্টা আপাতদৃষ্টে বেশ সফলই বলা চলে; কেননা, চলচ্চিত্রটি অনেক দর্শকের মনেই দাগ কেটেছে।
আরিফুল ইসলাম
কুইজ
১। ‘প্রিয় মালতী’র কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন কে?
[ক] তানজিন তিশা
[খ] তমা মির্জা
[গ] সারিকা
[ঘ] মেহজাবীন চৌধুরী
২। এর প্রেক্ষাপট কোন শহর?
[ক] খুলনা
[খ] ঢাকা
[গ] রাজশাহী
[ঘ] বরিশাল
৩। মালতীর সন্তান কোথায় বড় হয়?
[ক] মালতী-পলাশের বন্ধুর কাছে
[খ] পলাশের বাবা-মায়ের কাছে
[গ] অনাথ আশ্রমে
[ঘ] দত্তক নেওয়া পরিবারে
গত সংখ্যার বিজয়ী
১. সাদিয়া আফরিন, জালালাবাদ, সিলেট
২. তাসরিফা আক্তার, ধানমন্ডি, ঢাকা
৩. টিংকু, গুলশান, ঢাকা।