skip to Main Content

তনুরাগ I আপাদমস্তক আবরণে

চাই শিট মাস্ক। কিন্তু সে তো শুধু মুখত্বকের জন্য! এখানেই ভুল হয়ে যাচ্ছে না তো

কোরিয়ানদের কামাল এই বিউটি স্টেপল। সিক্ত নানা ধরনের ত্বকবান্ধব উপাদানে। হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, কখনো আবার ভিটামিন সিতে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখন আর শুধু মুখত্বকে আটকে নেই এর কার্যকারিতা। ছড়িয়ে পড়েছে শরীরের বিভিন্ন অংশজুড়ে। শিট মাস্ক দিয়ে এখন ট্রিটমেন্ট হয় ভিন্ন ভিন্ন বডি পার্টে। প্রাণহীন হাত জোড়ায় উজ্জ্বলতা যোগে, ব্রেস্ট এরিয়ায় আর্দ্রতা বাড়াতে, বাট বিউটিফায়িংয়ে কিংবা গর্ভবতী মায়ের পেটের ত্বক টান টান করে তুলতে।
গলায় গলিয়ে
গলার জন্য তৈরি বিশেষ শিট মাস্কগুলোর কাজ মূলত ঝুলে পড়া, বয়সের ছাপে ম্রিয়মাণ ত্বককে সারিয়ে তারুণ্যোজ্জ্বল করে তোলা। বেশির ভাগ নেক শিট মাস্কে তাই প্লামিং উপাদানের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। যেমন হায়ালুরনিক অ্যাসিড। কোনো কোনোটাতে থাকে কোলাজেন বুস্টিং এলিমেন্ট। গলার ত্বক টান টান করতে চাইলে অ্যামিনো অ্যাসিডে তৈরি নেক শিট মাস্কগুলো থাকতে পারে পছন্দের তালিকায়। সঙ্গে যদি থাকে হুইট প্রোটিন, তাহলে তো কথাই নেই। বায়োসেলুলোজে তৈরি শিট মাস্ক বেছে নেওয়া গেলে তা গলার ত্বকের অংশ টান টান করে তো তুলবেই; সঙ্গে বাড়াবে উজ্জ্বলতা। দেবে লিফটেড লুক। প্রয়োজনীয় আর্দ্রতার জোগান দিয়ে করে তুলবে কোমল আর পেলব। কিছু কিছু লাক্সারিয়াস নেক মাস্কে অ্যাডেনোসিনের উপস্থিতি থাকে; যা গলার ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়াতে সহায়ক। নিয়াসিনামাইড থাকলে তা কাজ করবে ব্রাইটেনিংয়ে; সোডিয়াম হায়ালুরনেট কাজ করবে ময়শ্চারাইজিংয়ে।
আর্মপিট আগলে
এই শিট মাস্ক মূলত কালচে হয়ে যাওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত আর্মপিটের যত্নের জন্য তৈরি। আর্দ্রতা জোগানোর পাশাপাশি সুদিং ও কামিং ইফেক্ট দেয়। ফুকোইডান, অ্যালো আর নিয়াসিনামাইডের মতো উপাদানে তৈরি। যার প্রতিটি দাগছোপ হালকা করার কাজ করে; স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখাতে সহায়ক। এ ছাড়া শেভিংয়ের পর ইরিটেশন দূর করার জন্যও আর্মপিট শিট মাস্ক দারুণ কাজের।
হ্যান্ড শিট মাস্ক
সেরামে পরিপূর্ণ হ্যান্ড গ্লাভস বললেও ভুল হবে না। স্লিপ অন হওয়ায় যখন-তখন পরে নেওয়া যায় অনায়াসে। অসম্ভব রুক্ষ ও শুষ্ক হাতে জোগায় আর্দ্রতা। ডিপ ময়শ্চারের জোগান দেয় ভায়োলেট ফ্লাওয়ার ফর্মুলেটেড হ্যান্ড মাস্কগুলো। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের ক্ষত সারাইয়ে সহায়তা করতে পারে ওট আর শিয়া বাটারসংবলিত শিট মাস্ক। শিয়া বাটার জোগাবে জরুরি আর্দ্রতা আর প্রিবায়োটিক ওট দেবে বাড়তি মসৃণ ভাব। ডেইলি বেসিসে যারা ডিপ হ্যান্ড থেরাপি দিতে চান, তাদের সংগ্রহে থাকা চাই এই হ্যান্ড মাস্কগুলো।
ব্রেস্ট অ্যাট বেস্ট
দেহের এই অংশে মাস্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। আলাদা যত্নআত্তি মানে ওই ক্লিনজিং আর স্ক্রাবিং অব্দি। এমন অবস্থায় ব্রেস্ট এরিয়ার জন্য আলাদা শিট মাস্ক ব্যবহারের ব্যবস্থা করা গেলে তো কথাই নেই! সব ধরনের ত্বকের জন্য ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি এগুলো। বেশির ভাগই অ্যাডভান্সড রিস্টোরেটিভ সিস্টেমে তৈরি। স্কিন প্ল্যামিং ইফেক্ট দেয়, পাশাপাশি টান টান এবং টোন আপ করে বাস্ট এরিয়া। ফলাফল—পুষ্ট ও লিফটেড দেখায় দেহের এই অংশ। বুব শিট মাস্কের কোনোটা আবার ব্রা-এর মতো ব্রেস্ট প্যাড আকারের। সোডিয়াম হায়ালুরনেট আর মেরিন কোলাজেনের নির্যাসে পরিপূর্ণ এই প্যাডগুলো ক্লিভেজ এরিয়া রিশেপ করার আশ্বাস দেয়, ফার্মনেস বাড়ায়; বাড়ায় ইলাস্টিসিটি আর বাউন্স।
বেলি ফিক্স
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এগুলো গর্ভবতী মায়েদের জন্য তৈরি করা হয়। প্রেগনেন্ট বেলির স্ট্রেচ মার্চ রোধে সহায়তা করে। পোস্টপার্টাম পিরিয়ডে ইনফ্লেমড স্কার টিস্যুকে মিলিয়ে দিতেও সচেষ্ট। সাধারণত অ্যালোভেরা, প্রোপোলিস আর হাইড্রোলাইজড মেরিন কোলাজেনে তৈরি এই বেলি মাস্কগুলো। কোনো কোনোটায় থাকে ক্যাফেইন। পেটের ত্বক টান টান করে তুলতে দারুণ কার্যকর। আলটিমেট মাদার সেলফ কেয়ার মোমেন্টের জন্য।
বাট বিউটিফুল
দেহের এই অংশের ত্বকও অনেকটা অবহেলিত। তাই ভালো অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি সুন্দর দেখাতে বাট শিট মাস্কের জুড়ি নেই। বেশির ভাগই হাইড্রেটিং ও টোনিংয়ের সুবিধা দেবে এমন ফর্মুলায় তৈরি। তাই এ ধরনের মাস্কে হায়ালুরনিক অ্যাসিড, কোলাজেন, অ্যালো লিফ জুস আর ক্যামোমাইলের মতো উপাদানের উপস্থিতি থাকে সবচেয়ে বেশি। সাধারণত ক্লাউড শেপের হয় এ শিট মাস্কগুলো। সোডিয়াম হায়ালুরনেটও উপস্থিত থাকে কোনো কোনোটায়। থাকে মেরিন কোলাজেনও। হারানো পুষ্টতা, টান টান ভাব এবং ইলাস্টিসিটি ফিরিয়ে দেওয়ায় কাজ করে এগুলো। ব্লু অ্যালগি ক্যামোমাইল আর ওটও উপস্থিত থাকে কোনো কোনো মাস্কে। বেবি বাট অনুভূতির জন্য।
হ্যাপি ফিট
মৃতকোষ, ময়লা, দূষণ থেকে ক্লান্তি—কত কিছুই না জমে পা জোড়ায়! সব দূরের ওয়ান-স্টপ সল্যুশন হতে পারে ফুট শিট মাস্ক। বাজারে মিলবে ফুট পিলিং মাস্ক। অনেকটা মোজার আদলে তৈরি। পায়ে পরে নিতে হবে। রেখে দিতে হবে পিলিং জেল পুরোপুরি শুষে নেওয়া অব্দি। প্রায় ঘণ্টা, দেড় ঘণ্টা অব্দি। নির্দিষ্ট সময় পরে পা ধুয়ে নিতে হবে। ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে লিকুইড। নিয়মিত ব্যবহারে দেখা যাবে পায়ে জমে থাকা মৃতকোষ আর চামড়া দূর হতে শুরু করেছে। কোনো কোনো ফুট মাস্ক আবার এক্সফোলিয়েটিং জেল দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে। এএইচএ এবং বিএইচএ সংবলিত। সপ্তাহখানেক ব্যবহারের পরই পা হয়ে উঠবে মসৃণ। কোমল আর ঝকঝকে।

 বিউটি ডেস্ক
মডেল: আনসা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top