skip to Main Content

ফিচার I মেটাল X মেকআপ

একদম তৈরি, ফিটফাট! পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গয়না আর মেকআপ। কিন্তু কোথায় যেন খামতি। সব হিসাব-নিকাশ বারবার। তবু মিলছে না সমাধান! এখানেই লুকিয়ে আছে পাতালপুরীর গোপন রহস্য

ওয়েডিং গ্লাম থেকে কফি ডেট—মেটাল আর মেকআপে প্রেম না জমলে সবটাই শেষ! আভরণের আবরণে কোন রঙের মাতামাতি, তা দেখে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিলে তবেই জমবে খেলা। পোশাকের পাশাপাশি মনোযোগ দেওয়া চাই গয়নাতেও। যে ধাতুতে গড়া হয়েছে, সেই ধাতুর গুণ বিশ্লেষণে সহজ হবে সিদ্ধান্ত। সুন্দরতার শতভাগ পরিস্ফুটন।
কালার থিওরি
রঙের মনস্তত্ত্ব বহুল আলোচিত। সাদা মানে শান্ত, হলদেতে উচ্ছল, নীলেতে শান্তি। এ এখন মোটামুটি সবাই জানে। এই দেশের বহুল ব্যবহৃত জুয়েলারির রং খুব বেশি নয়। সোনালি, রুপালি, অক্সিডাইজড আর ইদানীং রোজ গোল্ড—মেটাল কালার প্যালেটের এই চারের রাজত্বই চলছে নিরন্তর। বহু বছরেও হয়নি নতুনের কোনো যোগ। এই চার রঙেরই আছে নিজস্বতা; যা সাজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে বলে জানা যায়।
সোনালি
সোনার গয়না অথবা সোনারং গয়না—যেটাই বেছে নেওয়া হোক, রং মোটামুটি একই হয়। এমন অলংকারে দেখা যায় মূলত দুই রং—হলুদ আর লাল। তাই তৈরি হয় ওয়ার্ম শেড। উজ্জ্বলতা বাড়ে। সান-কিসড লুক যেন।
রুপালি
রুপালি গয়নায় পাওয়া যায় নীল আর সাদা আলো। তাই তুলনামূলক শীতল আবহ তৈরি করে। কুল লুক মেকআপের জন্য আদর্শ বলা চলে।
রোজ গোল্ড
মূলত ট্র্যাডিশনাল গোল্ডের সঙ্গে পিংকিশ টোনের সখ্য। যেখানে হলুদাভ আভা খানিকটা কম। পিচ কালারের রাজত্ব দৃশ্যমান। এর সঙ্গে নিউট্রাল কালার প্যালেট বেশ মানিয়ে যায়।
অক্সিডাইজড
রুপালির সঙ্গে খানিকটা কালোর মিলমিশের এই রং গাঢ় ছাই রং। চিরকালীন চাহিদার এই অলংকার শেডের সঙ্গে আর্দির মাখামাখি মানায় বেশ।
এই চার রঙের দর্শনই ভিন্ন। কোনোটা উষ্ণ তো কোনোটা শীতল। নিজস্বতা তাদের আনকোরা করেছে।
জুয়েলারি টোন X মেকআপ টোন
মেকআপ ও জুয়েলারি—দুই ক্ষেত্রেই ত্বকের রং অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই সাজসজ্জার আগে এ বিষয়ও ভাবনায় রাখা যেতে পারে। ওয়ার্ম আন্ডারটোনের ত্বকে সোনারং গয়না যতটা মানাবে, অন্য কোনোটা তত মানাবে না বলে জানা যায়। আবার, কুল আন্ডারটোনে সিলভারের আধিপত্য জোরালো। অন্যদিকে, যদি বেছে নেওয়া হয় নিউট্রাল টোন, তাতেও চিন্তার কারণ নেই। কারণ, সব স্কিন টোনের সঙ্গেই সখ্য গড়ে নেওয়ার মতো গুণ রয়েছে এর।
 সোনার গয়নার সঙ্গে উষ্ণ রঙের জুটি মেলে বেশ। অর্থাৎ কালার প্যালেটের তুলনামূলক ওয়ার্ম শেড মানাবে ভালো। সন্ধ্যার সময় এমন সাজ নজর কাড়বে বেশ।
 রুপা রং গয়নার সঙ্গে এমন কিছু বেছে নেওয়ার পরামর্শ পাওয়া যায়, যেগুলো তুলনামূলক শীতল শেড। সিলভার, হোয়াইট গোল্ডের জুয়েলারি হলে প্যাস্টেল শেড মানাবে দারুণ। আই মেকআপে শিমার ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। তাতে জেল্লা বাড়বে।
 রোজ গোল্ড জুয়েলারির সঙ্গে রোমান্টিসিজমের সন্ধি চোখ এড়ানো মুশকিল। মেকআপের ক্ষেত্রে এই সূত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এমন মিষ্টি সোনালি গয়নার সঙ্গে রোজ লিপস্টিক, শ্যাম্পেইন হাইলাইটার মানাতে পারে।
 অক্সিডাইজড অথবা অ্যান্টিকের চাহিদা চিরকালীন। এমন অলংকার বেছে নিলে আর্দি টোনের মেকআপ মানাবে। এমারেল্ড, বারগেন্ডি, টেরাকোটাও হতে পারে বিকল্প।
ক্ষণ বুঝে আয়োজন
মেকআপ আর জুয়েলারির সন্ধিকে বলা যেতে পারে পাওয়ার কাপল। কারণ, তাহলেই পুরো প্রস্তুতি জমে হবে ক্ষীর! অর্থাৎ একদম পারফেক্ট। তবে কী কারণে সাজগোজ, সেদিকেও নজর দেওয়া জরুরি। যদি বন্ধুদের সঙ্গে ব্রাঞ্চের আড্ডা হয় অথবা দিনের বেলার কোনো দাওয়াত, তবে সেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলাই যথেষ্ট। অতিরঞ্জন অনাবশ্যক। স্টেটমেন্ট জুয়েলারি আলমিরাতে রেখে মিনিমালে দেওয়া যেতে পারে মনোযোগ। সঙ্গে সাজও সেই অনুযায়ী হলে বেশ মানাবে।
সন্ধ্যার সাজে বোল্ড মেকআপ আর জুয়েলারি—দুয়েই হওয়া যেতে পারে মাতোয়ারা। বাধ্যবাধকতাকে বাই বাই করার এই-ই সময়। ড্রামাটিক মেকআপে লাল লিপ স্টিক, টানা টানা আইলাইনার, স্টেটমেন্ট জুয়েলারি সোনালি কিংবা রুপালি—সবই চলবে এ সময়ে।
এ তো গেল সূত্র মেনে। সজ্জাসূত্রের বাইরে নিজের মতো করে হতেই পারে নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া। যা ইচ্ছা তাই, তবে একদম নিজের মতো। স্বাতন্ত্র্য। এসব মেনে সবটা গোছাতে চাইলেও তেমন কঠিন কিছু নয়। স্মার্ট স্টাইলিংই সই।

 সারাহ্ দীনা
মডেল: আরনিরা
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: তান বাই তানহা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top