ক্যানভাস রিপোর্ট
অ্যাঞ্জেলা। পুরো নাম অ্যাঞ্জেলা ডি’কস্টা। বসবাস রাজধানীর ধানমন্ডিতে। প্রতিশ্রুতিশীল ফ্যাশন মডেল। পথচলা শুরু কৈশোরেই, ২০১৯ সালে।
ক্যানভাসকে অ্যাঞ্জেলা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই অভিনয় করার স্বপ্ন দেখতাম। শুরুতে মডেলিংয়ের পরিকল্পনা ছিল না। তা ছাড়া পড়াশোনার চাপ ছিল, স্বভাবতই। তবে পড়াশোনার বাইরেও কিছু করার ইচ্ছে ছিল। এভাবেই শুরু।’
জানালেন, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ফ্যাশন ফটোগ্রাফারের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে মডেল হিসেবে নিজের পোর্টফোলিওর শুট করেন অ্যাঞ্জেলা। সে বছরই ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ পত্রিকায় ছবি ছাপা হয় তার। এরপর ছাপা হয় ‘আরটিভি লুক অ্যাট মি’ ম্যাগাজিনে। অ্যাঞ্জেলার ভাষ্য, ‘এরপর বিভিন্ন জায়গা থেকে মডেলিংয়ের জন্য ডাক আসে। তারপর আস্তে আস্তে মডেলিংকে পেশা হিসেবে নিয়ে ফেলি।’
‘আমি এখন ফ্যাশন মডেল হিসেবে কাজ করছি। এটাই আমার পেশা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে। নিজেকে সেভাবেই গ্রুমআপ করেছি। গ্রুমিং স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে নিজের হাঁটা, কথা বলা, ম্যানারিজম সবকিছু ঠিক করেই নিজেকে সেভাবে তৈরি করেছি,’ জানালেন তিনি।
শুরুতে অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও এখন তার ধ্যান-জ্ঞান মডেলিং ঘিরে। অ্যাঞ্জেলা বলেন, ‘মডেলিং শুরু করার পর অনেকেই বলেছেন, আমি রাম্পের জন্যই ঠিক আছি। এখন নিজেরও মনে হয়, মডেলিংই আমার জন্য পারফেক্ট। আসলে আমি প্রত্যেকটি সেক্টরে সেরা হয়ে থাকতে চেযয়েছি। কিন্তু মডেলিং এ কাজ শুরু করার পর থেকে মনে হয়েছে, আমাকে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে। তাই আপাতত যে সেক্টরে আছি, এখানেই কাজ করব; তবে কখনো ভিজুয়ালের ভালো কোনো প্রস্তাব পেলে নিশ্চয় ভেবে দেখব।’
উঠতি এই মডেলের ক্যারিয়ার বেশি দিনের নয়। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ফ্যাশন ব্রান্ডের মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। তা ছাড়া র্যাম্পেও বেশ নিয়মিত তিনি। বললেন, ‘মোটামুটি সব ভালো ভালো শোতেই আমি মডেল হিসেবে ডাক পাই। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভিএলসিসি শো, এসএ টিভি হাইট অব ফ্যাশন, ইউএসডিবি মেকআপ ক্যাফে প্রেজেন্টস বাংলাদেশ ওমেন এন্টারটেইনমেন্ট আওয়ার্ড, বিশ্বরঙের ৫০ ইয়ারস অ্যানিভার্সারি অব স্বপ্নীল ফাউন্ডেশন, অনুরাগ ব্রাইডাল শো, মিরর এক্সপো, ক্লোদিং ব্র্যান্ড বাই চমন চৌধুরী, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড প্রেজেন্টস নিবেদিতা স্লেন্ডার পাওয়ারড বাই ফেডটিভাইভ প্রভৃতি।’ পাশাপাশি নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে কাজ করছেন বিটিভিতে।
দেশে অ্যাঞ্জেলার প্রিয় মযেল জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া। অন্যদিকে প্রিয় ভারতীয় মডেল অ্যান্জেলা জনসন এবং প্রিয় ইন্টারনেশনাল মডেল বেলা হাদিদ। এরমধ্যে বেলা হাদিদকে নিজের আইডল মনে করেন তিনি।
র্যাম্পে প্রথম ক্যাটওয়াকের স্মৃতি ঘেঁটে অ্যাঞ্জেলা বলেন, ‘আমি প্রথম যখন একটি গ্রুমিং স্কুলে ভর্তি হই, সেদিন গ্রুমিং স্কুলের লঞ্চিংয়ে একটি ছোটখাটো রেড কার্পেট ফ্যাশন শো ছিল। প্রথম দিন র্যাম্পে হাঁটতে খুবই নার্ভাস ছিলাম। ভেতরে ভয় কাজ করছিল, ক্যাটওয়াক করতে গিয়ে পড়ে যাই কি না, দর্শকরা হাসাহাসি করেন কিংবা কোরিওগ্রাফার বকা দেন কি না। যখন নিজের টার্ন এলো, শুধু ভাবছিলাম কিভাবে পোজ দেব, কেমন করে হাঁটব। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে কোনোরকম হেঁটে এসেছিলাম। আমার হাঁটা ভালো ছিল না; তবু কোরিওগ্রাফার বেশ উৎসাহ দিলেন, প্রশংসা করলাম। তার কথায় সেদিন সত্যিই অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম।’
‘আমি মনে করি প্রথম প্রথম মডেলিংয়ে সবাই কোন না কোন প্রতিবন্ধকতা বা বাধা উপলব্ধি করেন। আমার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা ছিল পরিবার। পরিবারের বাধা বিপত্তি থেকে বেরিয়ে আসতে আমার অনেক সময় লেগেছে। মাঝখানে অনেকদিন গ্যাপও গেছে। কারণ প্রথম প্রথম বাসা থেকে না জানিয়ে মডেলিং শুরু করেছিলাম। পরে জানতে পেয়ে বাবা-মা বেশ শাসন করেছিলেন। টানা কয়েক মাস বাসা থেকে বের হতে পারিনি,’ বলেন অ্যাঞ্জেলা।
তিনি আরও বলেন, ‘বন্ধুদের পরামর্শে গ্রুমিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সে কথা বাবা-মাকে জানাই। তাদের রাজিও করাই। এখন তাদের বেশ অনুপ্রেরণা পাই।’
ইতোমধ্যে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা হলেও অ্যাঞ্জেলা জানান, ‘আমি মনে করি মিডিয়া কঠিন একটা জায়গা। আর এখানে টিকে থাকতে হলে ধৈর্যটা অনেক দরকার। তাহলে একদিন না একদিন স্বপ্নটা পূরণ করা সম্ভব।’ দেশের গন্ডি পেরিয়ে নিজেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এই প্রতিশ্রুতিশীল মডেল।
এক ঝলক:
- অ্যাঞ্জেলা ডি’কস্টা
- উচ্চতা: ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি
- ওজন: ৪৫ কেজি
- বাস্ট: ৩২
- সোল্ডার: ১৪
- আপার ওয়েস্ট: ২৫
- লোয়ার ওয়েস্ট: ২৭
- হিপ: ৩৬
- বসবাস: ধানমন্ডি, ঢাকা