কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। তিনি ছিলেন একাধারে একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্রনির্মাতা। হিমু, মিসির আলি ও শুভ্রর মতো জনপ্রিয় কিছু চরিত্র তিনি সৃষ্টি করে গেছেন নিজের লেখনীশক্তি দিয়ে। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিন শতাধিক।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর তিনি নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে আটক করেছিল। নির্যাতনের পর তাকে হত্যার জন্য গুলি চালায়। কিন্তু তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছিলেন।
হুমায়ূন আহমেদ রচিত প্রথম উপন্যাস ছিল ‘নন্দিত নরকে’। এটি ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এটি নিয়ে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে।
তার লেখা অন্যতম উপন্যাসগুলো হচ্ছে: মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া, লীলাবতী, কবি, বাদশাহ নামদার ইত্যাদি। বাংলা সাহিত্যের উপন্যাস শাখায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। এ ছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
চলচ্চিত্র নির্মাণ করেও তিনি খ্যাতি কুড়িয়েছেন। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধভিত্তিক আগুনের পরশমণি (১৯৯৪)। ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আটটি পুরস্কার লাভ করে। তার নির্মিত অন্যান্য সমাদৃত চলচ্চিত্র হচ্ছে: শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), দুই দুয়ারী (২০০০), শ্যামল ছায়া (২০০৪) ও ঘেটু পুত্র কমলা (২০১২)। শ্যামল ছায়া ও ঘেটু পুত্র কমলা চলচ্চিত্র দুটি বাংলাদেশ থেকে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কারের জন্য নিবেদন করা হয়েছিল। এ ছাড়া ঘেটু পুত্র কমলা চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।