কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। এ বাক্যের তাৎপর্য বোঝা যায় অসুস্থ অবস্থায়। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম না বোঝার মতোই সুস্থ থাকাবস্থায় আমরা সুস্থতার মর্ম বুঝি না। প্রতিকারের চেয়ে বরাবরই প্রতিকার ভালো। তাই আগে থাকতে সচেতন হওয়া ভালো।
আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কিডনি। বাংলায় একে বৃক্ক বলা হয়ে থাকে। কিডনি আমাদের শরীরে ছাঁকনির কাজ করে। যা মূলত রক্ত পরিশোধনের কাজ করে। মানুষ জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই ছাঁকনি পুরো তৈরি হয়। প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের কিডনিতে ১০ থেকে ১২ লাখ ছাঁকনি থাকে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, মানুষের শরীরে কিডনি কতটা স্পর্শকাতর অঙ্গ।
মানুষের কিডনির ছাঁকনিগুলো প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১৭০ লিটারের মতো পরিশোধন করে। পরিশোধনের মাধ্যমে এক থেকে তিন লিটার শারীরিক বর্জ্র প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বের করে দেয় কিডনি। এই ছাঁকনপ্রণালি বাধাগ্রস্ত হলে কিডনি রোগ হয়।
ছাঁকন ছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্ত তৈরিতে সাহায্য করা ও ভিটামিন ‘ডি’ কার্যকর করায় কিডনি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
কিডনির এই ব্যস্ততা থাকে মানুষের গোটা আয়ুষ্কালজুড়ে। আর তাই কিডনি যাতে ভালো থাকে, সেদিকে সবারই সজাগ থাকা প্রয়োজন।
১. প্রতিদিন ৭-৮ গ্লাস পানি পান করুন। কিডনি ভালো থাকবে।
২. প্রস্রাব কখনোই চেপে রাখবেন না। চেপে রাখলে কিডনিতে সংক্রমণ হওয়ার শঙ্কা থাকে।
৩. চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো প্রকার ওষুধ, বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।
৪. বয়স চল্লিশ উত্তীর্ণ হলে প্রতিবছর অন্তত একবার ডায়াবেটিস ও ব্লাডপ্রেশার পরীক্ষা করান। ডায়াবেটিস বা ব্লাডপ্রেশার থাকলে নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।
৫. বছরে অন্তত একবার প্রস্রাবের মাইক্রো-এলবুমিন পরীক্ষা করিয়ে নিন।
এসব করলে কিডনিতে কোনো সমস্যা থাকলে সেটা তাৎক্ষণিক ধরা পড়বে। তখন চিকিৎসা করা সহজ হবে।