খাবার টেবিলে যেটি না হলেই নয় সেটি হচ্ছে চামচ। ভাত, তরকারি কিংবা ডাল বাড়া থেকে শুরু করে মিষ্টি খাওয়া কিংবা চায়ের সঙ্গে চিনি মেশাতে চামচের প্রয়োজন সব জায়গাতেই।
যুগের পর যুগ ধরে চলেছে এ চামচের বিবর্তন। ধারণা করা হয়, প্রাচীন প্রস্তর যুগে খাওয়াদাওয়ার কাজে ব্যবহৃত তৈজস হিসেবে চামচের ব্যবহার শুরু হয়। আমাদের নানি-দাদিদের রসুইঘরে দেখা যেত পিতলের চামচ। বনিয়াদি পরিবারের অনেকেই সোনা কিংবা রুপার চামচের ব্যবহার দেখেছেন। চামচ তৈরির উপাদান বদল হতে হতে এখন প্লাস্টিকে এসে ঠেকেছে, যদিও রন্ধনবিশারদেরা প্লাস্টিকের চামচের বদলে স্টেনলেস স্টিলের চামচ ব্যবহার করতেই উৎসাহ দেন।
চামচ মূলত ধাতু, কাঠ বা প্লাস্টিকের হয়ে থাকে। ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে চামচকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন আকার।
কাটলারি সেটের সবচেয়ে ছোট যে চামচ থাকে সেটি হচ্ছে টি স্পুন বা চা চামচ। চায়ে দুধ বা চিনি মেশানো ছাড়াও মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে এ চামচ ব্যবহৃত হয়। তবে চা চামচের চেয়ে সামান্য বড় আকৃতির যে চামচটি থাকে, সেটিই মূলত ডেজার্ট স্পুন। কিন্তু আমরা অনেকেই টি স্পুনের সঙ্গে ডেজার্ট স্পুন গুলিয়ে ফেলি।
খাবারের চামচগুলো হয় মাঝারি আকৃতির। অর্থাৎ ডেজার্ট স্পুনের চেয়ে বড়। এ চামচকে টেবিল চামচ বলা হয়।
তিন কাঁটাবিশিষ্ট কাঁটা চামচগুলো সাধারণত মিষ্টি খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এ চামচ চার কাঁটারও হতে পারে। একে বলা হয় ডেজার্ট ফোর্ক।
ফল বা স্যালাদ খাওয়ার জন্য দুই কিংবা তিন কাঁটার কাঁটাচামচ ব্যবহার করা হয়। অবশ্য অনেকেই ডেজার্ট ফোর্ক দিয়ে ফল বা স্যালাদ খেয়ে থাকেন।
মূল ডিশ খাওয়ার জন্য টেবিল চামচের সঙ্গে মাঝারি আকৃতির কাঁটাচামচ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
মাঝারি আকৃতির ও গোল মাথাওয়ালা চামচগুলো হচ্ছে স্যুপ খাওয়ার চামচ। স্যুপ বেড়ে দেওয়ার জন্যও এ চামচ ব্যবহার করা হয়।
টেবিল চামচের চেয়ে আকারে কিছুটা বড় আকৃতির চামচ হচ্ছে কারি স্পুন। এগুলো দিয়ে তরকারি বাড়া হয়।
ভাত বা পোলাও বাড়তে বড়, চওড়া ও একমাথা ফ্ল্যাট চামচ ব্যবহার করা হয়।
চামচের জগতে সবচেয়ে ছোট চামচটি ব্যবহার করা হয় লবণের চামচ হিসেবে। আচারের জন্যও আছে পিকলস স্পুন।
একধরনের চামচ আছে যা গ্লাসের দৈর্ঘ্যের চেয়ে লম্বা হয়। এ চামচের দেহ চিকন হয় এবং মাথা হয় ছোট। এ ধরনের চামচকে ড্রিঙ্ক স্পুন বলা হয়। গ্লাসের ভেতরে কিছু নাড়াচাড়া করে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য এ চামচ ব্যবহার করা হয়।
টং নামের চামচগুলো ব্যবহার করা হয় রোস্টের জন্য। এ ছাড়া কাবার বেড়ে দেওয়ার জন্যও টং চামচ ব্যবহার করা হয়।
Nice post