ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ুক, এটা সবাই চায়। আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে ফর্সা ত্বকের অধিকারী হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ করুন, সেই সঙ্গে স্কিনে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করুন। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরে আসুক।
স্কিনের পরিচর্যায় যে যে প্রাকৃতিক উপাদানগুলোকে লাগাতে হবে। আসুন জেনে নিই সে সব উপাদান সম্পর্কে-
বাদাম
অল্প সময়ে ত্বককে ফর্সা করে তুলতে বাদামের কোনও বিকল্প হয় না। এ ক্ষেত্রে ত্বকের পরিচর্যায় অ্যালমন্ড তেলকে যেমন কাজে লাগাতে পারেন, তেমনি ইচ্ছা হলে পরিমাণ মতো বাদাম নিয়ে তার পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগালেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যাবে। বাদামে রয়েছে উপস্থিত ভিটামিন ই এবং আরও অনেক উপকারি উপাদান, ত্বককে ভিতর থকে সুন্দর করে তোলে, সেই সঙ্গে ড্রাই স্কিনের মতো সমস্যাও দূর হয়। ফলে স্কিন সুন্দর হয়ে উঠতে একেবারেই সময় লাগে না।
অ্যাভোকাডো
মাত্র ৪-৫ দিনের মধ্যেই ত্বক ফর্সা এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠুক, ত্বকের পরিচর্যায় অ্যাভোকাডকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে একটা অ্যাভোকাডো নিয়ে প্রথমে তা ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর তা দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ভাল করে লাগিয়ে নিতে হবে মুখে। এবার ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে প্রথমে দুধ, তারপর জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফলতে হবে মুখটা। এভাবে প্রতিদিন ত্বকের যত্ন নিলে স্কিনে পুষ্টিকর উপাদানের মাত্রা এতটা বেড়ে যাবে যে তার প্রভাবে ত্বক ফর্সা হয়ে উঠতে দেখবেন সময়ই লাগবে না।
আমের খোসা এবং দুধ
গরমকালে রাতের বেলা গরম গরম দুধে আম মিশিয়ে খেতে সুস্বাদু লাগে! কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে দুধের সঙ্গে আমের খোসার মিশিয়ে ত্বকে লাগালে দারুন উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো দুধে অল্প করে আমের খোসা মিশিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনটা মুখে, গলায় এবং ঘারে লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিয়ে ধুয়ে নিন। এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন ত্বকের চরিত্র বদলাতে শুরু করে দিয়েছে।
টমেটো
এই সবজিটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় লাইকোপেন নামক একটি উপাদান, যা সব ধরনের ত্বকের দাগ মিলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মৃত কোষেদের স্থর সরিয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা হয়ে উঠতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল, ত্বকের পরিচর্যায় কীভাবে কাজে লাগাতে হবে টমাটোকে? এক্ষেত্রে ১-২ টা টমাটো ব্লেন্ডারে ফেলে তার সঙ্গে ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই মিশ্রনটা ভাল করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
গোলাপ জল
এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ভিতর থেকে ত্বককে পরিষ্কার করে। ফলে স্কিন সুন্দর এবং তুলতুলে হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে সম পরিমাণে গোলাপ জল এবং কাঁচা দুধ মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রণ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখে লাগিয়ে ফেলুন। সারারাত রেখে সকালে মুখটা ধুয়ে নিন। এমনটা মাত্র দু`দিুন করলেই দেখবেন ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা হয়ে উঠেছে। ইচ্ছা হলে মুলতানি মাটির সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়েও মুখে লাগাতে পারেন। এমনটা করলেও সমান উপকার পাবেন।
ডাবের পানি
শুধু তৃষ্ণা মেটাতে নয়, ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতেও ডাবের পানির কোনও বিকল্প নেই। দিনে দু`বার যদি ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধোয়া যায়, তাহলে ত্বক ফর্সা হতে একেবারে সময়ই লাগে না। শুধু তাই নয়, মুখের দাগ মেটাতেও এই ঘরোয়া পদ্ধতিটি দারুন কাজে আসে।
মধু এবং দই
পরিমাণ মতো দই অল্প করে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেই পেস্টটা কম করে ১৫ মিনিট মুখে মাসাজ করে নিন। প্রসঙ্গত, মধু ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তোলে আর লেবুর রস এবং দইয়ে মিশ্রনে উপস্থিত ভিটামিন-সি ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
অ্যালোভেরা
অল্প করে অ্যালোভেরা জেল নিয়ে তাতে পরিমাণ বাদাম গুঁড়ো মিশিয়ে একটা মিশ্রন বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেই মিশ্রনটি ভাল করে মুখে লাগিয়ে কম করে ১৫-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, অ্যালোভেরা জেল ত্বককে ফর্সা করার পাশপাশি নানাবিধ স্কিন ডিজিজে প্রকোপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যদিকে, বাদাম গুঁড়ো মুখে জমে থাকা ময়লা এবং ব্ল্যাক হেডস দূর করতে দারুন কাজে আসে।
ডিম
ত্বককে ফর্সা করে তুলতে ডিমের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। চাই তো ত্বকের পরিচর্যায় ডিমকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে একটা ডিমের কুসুম নিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিয়ে সেটি সারা মুখে ভাল করে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর কম করে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে দু`বার এই ফেস প্যাকটি মুখে লাগাতে শুরু করলে দেখবেন ফর্সা ত্বক পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগবে না।
লেবুর রস
একটা লেবু থেকে রস সংগ্রহ করে তাতে ১ চামচ চিনি মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রনটি ততক্ষণ পর্যন্ত মুখে ঘষতে থাকুন, যতক্ষণ না চিনিটা ত্বকের সঙ্গে একেবারে মিশে যায়। যখন দেখবেন এমনটা হচ্ছে, তখন মুখটা ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নেবেন। ফর্সা ত্বক পেতে এই ঘরোয়া পদ্ধতিটি দারুন কাজে আসে। তাই যারা অল্প দিনেই অপরূপ সুন্দর হয়ে উঠতে চান তারা অবশ্যই কাজে লাগান এই পদ্ধতিটিকে। আসলে এই মিশ্রনটিতে উপস্থিত চিনি ত্বকের উপরি অংশে জমে থাকা মৃত কোষের স্থরকে সরিয়ে দেয়। ফলে স্কিন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, লেবুর রসে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড ত্বককে ফর্সা করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এই ঘরোয়া পদ্ধতিটি কাজে লাগানোর পর মনে করে মুখে ময়েসচারাইজার লাগাতে ভুলবেন না যেন!
দুধ এবং কলা
অল্প সময়ে ত্বক উজ্জ্বল করতে কলার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তার উপর যদি দুধকে কাজে লাগানো হয়, তাহলে তো কথাই নেই! এক্ষেত্রে একটা কলাকে নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো দুধ মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন পেস্টটা যেন একেবারে মিহি হয়ে যায়। তবেই ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।