আমাদের দেশে ফলের রাজা আম। লোভনীয় স্বাদ, পাকা রং, মিষ্টি ঘ্রাণের কাছে হার মানি সবাই। তাই অনেক সময় কোনো কিছু না ভেবেই ক্রয় করি আম। প্রতিটি ফল গাছ থেকে পেড়ে ফেলার পর সেই ফলের এনজাইম ফলটিকে পচাতে শুরু করে। এই ফলগুলোকে পচে যাওয়ার আগেই মানুষের কাছে বিক্রি করার জন্য তাতে প্রয়োগ করা হয় ফরমালিন। যা ফলকে পচতে দেয় না। ফরমালিনের এই বিষাক্ত ছোবল থেকে রেহাই পায়নি আমও।
ফরমালিন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি কিডনি, লিভারসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিকলাঙ্গতা এমনকি মারণব্যাধি ক্যানসারের কারণ হতে পারে। আমাদের ফরমালিনযুক্ত ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
যেভাবে বুঝব কোনো ফলে ফরমালিন আছে কি না।
রং: রং দেখে ফরমালিনমুক্ত আম চেনা যায়। প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমে সবুজ ও হলুদের একটি মিশেল লক্ষ করা যায়। তবে একেবারে হলুদ নয়। একেবারে হলুদ দেখা গেলে বুঝতে হবে আমে ফরমালিন আছে। প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমগুলোতে কালচে অথবা সাদাটে ভাব দেখা যায়। ফরমালিন দিয়ে পাকানো আম থাকে পরিষ্কার, কোনো দাগ থাকে না।
ভেতরে শাঁস দেখে: সাধারণভাবে পাকা আম কাটলে ভেতরে শাঁসের রং হয় লালচে হলুদ। কিন্তু ফরমালিন মেশানো থাকলে দেখা যাবে শাঁসটি হবে হালকা অথবা গাঢ় হলুদ রঙের। এর কারণ হলো বাইরে থেকে আমটি পাকা দেখা গেলেও ভেতর ততটা পাকেনি।
রস দেখে: সাধারণ ফরমালিনবিহীন আম প্রচণ্ড রসালো হয়। ফরমালিন দিয়ে পাকানো আমে রস কমে যায়। কেনার আগে অনেকেই আম একটু খেয়ে দেখেন। এমতাবস্থায় দেখে নিতে পারেন রসের পরিমাণও।
গন্ধ শুঁকে: প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমের বোঁটায় পাকা ঘ্রাণ থাকে। ফরমালিন দিয়ে পাকানো আমে গন্ধটি থাকে না। আম ফরমালিনমুক্ত হলে আমের বোঁটায় মিষ্টি, পাকা গন্ধ থাকবে।
স্বাদ চেখে:ফরমালিনমুক্ত আম মুখে দিলে টকমিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায় এবং আমে মাছি বসে। ফরমালিন দিয়ে পাকানো আমে টকমিষ্টি স্বাদটি পাওয়া যায় না। মাছিও বসে না।
চিকিৎসকেরা বলেন, ফরমালিনযুক্ত আম মুখে দিলে জিহ্বা অল্প জ্বালাপোড়া করতে পারে। কখনো কখনো গলাও জ্বলে। এমন লক্ষণসমূহ দেখা গেলে বুঝে নিতে হবে আমটিতে ফরমালিন রয়েছে।