দেশজুড়ে চলছে গরম ও করোনাভাইরাসের উৎপাত। এই সময় শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে ক্লান্তি, বিরক্তির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষতি হবে। এই মুহূর্তে করোনা-লড়াইয়ের একমাত্র সম্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। অতএব কোনও বিশেষ রোগের কারণে কড়াকড়ি না থাকলে দিনে কম করে আড়াই-তিন লিটার পানি খান। খাটাখাটনি বা ব্যায়াম বেশি করলে খেতে হবে আরও বেশি। তবে এখন উচিৎ ভেষজ পানি বা শরবত খাওয়া।
ভারতীয় আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেবাশিস ঘোষ জানান, বিভিন্ন রোগ সারাতে ভেষজ পানির ভূমিকা আছে। আবার পানির স্বাদ-গন্ধ বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু বিশেষ পুষ্টি যোগানোর ক্ষেত্রেও কয়েক ধরনের ভেষজ পানি বিশেষভাবে কার্যকর। ঠিক পদ্ধতিতে বানিয়ে ঠিক সময়ে খেলে সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতারও উন্নতি হয়।
রোগমুক্তিতে ভেষজ শরবত ও পানি
এক চামচ ত্রিফলা (আমলকী, হরিতকী ও বহেরা) ফলের চূর্ণ এক গ্লাস পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে পেট পরিষ্কার হয়। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট গুণের জন্য এই মিশ্রণ প্রদাহ কম রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফ্লু ঠেকাতে কাজে আসে। উষ্ণ পানিতে গুলে খেলে গলা ব্যথার প্রকোপ কমে। এর সঙ্গে এক চিমটি দারচিনির গুঁড়ো ও এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে স্বাদ-গন্ধের যেমন উন্নতি হয়, ভারী হয় উপকারের পাল্লাও।
এক চামচ মেথি শুকনো কড়াইতে ভেজে, গুঁড়ো করে এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল, এলডিএল-এর প্রকোপ কমে। প্রদাহ কমে বলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। হজমও ভালো হয়।
গরম পানিতে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে বানান ধনিয়ার পানি। হজমের যেমন উপকার হবে, কম থাকবে প্রদাহের প্রকোপ। বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
১ চা চামচ সাদা জিরে, দেড় কাপ পানি, আধ চা চামচ মধু নিন। কড়াইতে জিরে হালকা করে ভেজে দেড় কাপ পানি দিয়ে ৩-৪ মিনিট ফোটান। ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে পানিটা খেয়ে নিন। এতে ওজন যেমন কমবে, হজম শক্তিও বাড়বে।
মৌরির পানি বানাতে পারেন দু-’ভাবে। হয় এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মৌরি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেঁকে খান। নয়তো এক গ্লাস পানিতে ফুটিয়ে তাতে এক চামচ মৌরি দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন ২-৩ মিনিট। তারপর ছেঁকে চায়ের মতো খান। স্বাদ ও গুণ বাড়াতে অল্প লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। ঠাণ্ডা করেও খেতে পারেন। পেট ফাঁপা, গ্যাস, বদহজমের উপসর্গ কমে কিছুটা। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের প্রকোপও কম থাকে।