একটি শিশুর প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে তার পরিবার। শিক্ষক হচ্ছেন বাবা–মা। প্রত্যেক বাবা–মা চান, তার সন্তান ইতিবাচক গুণাবলি নিয়ে বেড়ে উঠুক। যেমন সততা, দয়া, মিতব্যয় ইত্যাদি। কিন্তু একটি শিশুর মধ্যে আপনাআপনি কিংবা রাতারাতি গুণগুলো গড়ে ওঠে না। তার জন্য যথাসময়ে উপযুক্ত শিক্ষার প্রয়োজন পড়ে।
মূলত ১০ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে যা শিক্ষা দেওয়া হয়, একটি শিশু বড় হয়ে সেসব গুণেরই অধিকারী হয়। তাই শিশুর জন্মের পর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। ১০ বছর বয়সের আগেই শিশুকে যা শিক্ষা দেওয়া উচিত, সেগুলো জেনে নিন এখানে।
সকলকেই সম্মানের চোখে দেখা: বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বৈষম্য। আপনার সন্তানের মধ্যে যেন বৈষম্যের বীজ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সবাইকে সমানভাবে দেখার শিক্ষা দিন।
ভুল করা কোনো অপরাধ নয়: ভুল করা মানে সব কিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। ভুল থেকেই মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করে। আপনার সন্তান ভুল করার পর যেন হতাশ হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখুন।
জ্ঞান বড়: পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না করতে পারলে অনেক বাবা–মা তাদের সন্তানকে তিরস্কার করে থাকেন। কিন্তু এ তিরস্কার ঠিক নয়। সন্তানকে বোঝান যে পরীক্ষার ফলের চেয়ে অর্জিত জ্ঞানই বড়।
বাবা-মা কখনো শত্রু নয়: সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব পূর্ণ আচরণ করুন, তাদের ভরসার জায়গা হয়ে উঠুন, যাতে সে যাবতীয় সমস্যা আপনার কাছে খুলে বলতে পারে। এমন কোনো আচরণ করবেন না, যাতে আপনার সন্তান আপনাকে শত্রু ভেবে বসে।
ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ না করা: সন্তানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য বেশি চাপ প্রয়োগ করবেন না। শিশুদের মধ্যে অন্যের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার প্রবণতা দেখা যায়। আপনার সন্তানের কাছে আপনার ছোটবেলার কথা শেয়ার করুন। সততাই সম্মান—এ বিষয়ে ওকে শিক্ষা দিন।
কিছু না বুঝলে প্রশ্ন করা: কথায় আছে জ্ঞানীর কাছে প্রশ্ন বেশি আর মূর্খের কাছে উত্তর। কোনো বিষয়ে না বুঝলে আপনার সন্তানকে নিঃসংকোচে প্রশ্ন করার শিক্ষা দিন। সবকিছু বুঝে ফেলেছে- এমন মিথ্যা ভান যেন না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
অসুস্থ বোধ করলে: শরীরিকভাবে অসুস্থ বা অস্বস্তি বোধ করলে সেটি যেন বাবা–মায়ের কাছে নিঃসংকোচে বলে ফেলে, সে বিষয়ে শিশুকে শিক্ষা দিন। এ ব্যাপারে ওর ভেতর যাতে কোনো জড়তা কাজ না করে, সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনারই।
পরিবেশকে সম্মান করা: যেখানে–সেখানে ময়লা না ফেলা, গাছের পাতা বা ফুল না ছেঁড়া- এসব বিষয়ে শিক্ষা দিন। শিশুকে পরিবেশের মুল্য সম্পর্কে জ্ঞান দিন। গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানান।
‘না’ বলতে শেখানো: ‘না’ বলতে পারা অনেক বড় গুণ। এই ‘না’ বলতে না পারা কতটা বিড়ম্বনার সেটা বড়রা হাড়ে হাড়ে টের পান। তাই শিশুকে না বলতে সেখান। যেটা সে পারবে না সেটায় না বলতে ও যেন দ্বিধায় না ভোগে, সেদিকে লক্ষ রাখুন।