কালের নদীতে ডুব দিয়ে সময়ের মুখচ্ছবির চালচিত্র গড়ে তুলে যাঁরা সময়-স্থানের নিগূঢ় ভাষ্য রচনা করেন, তাঁদেরই থাকে তৃতীয় আঁখি। যাকে শিল্পের ভাষায় থার্ড আই বলা হয়। এই তৃতীয় দৃষ্টির অধিকারী হন কবি, চিত্রকরসহ নন্দনস্রষ্টার কেউ কেউ। কালপ্রবাহে খণ্ডখণ্ড স্পেসের বর্ণনা চিত্রকলায় ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে নিজের থার্ড আই খুঁজতে চেষ্টা চালিয়েছেন শিল্পী মঞ্জুর রশিদ। ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের আর্ট গ্যালারিতে এই শিল্পীর ‘ন্যারেটিভ অব টাইম’ শিরোনামের চিত্র প্রদর্শনীর দিকে চোখ রাখলে রসিকজনের তেমনটাই মাথায় আসবে।
এই প্রদর্শনীর ক্যানভাসগুলো সময়-নদীর একেকটি বাঁক। একেকটি বাঁকে ফুটে উঠেছে একেকটি মুখচ্ছবি, মুখভঙ্গিমা অথবা একেকটি প্রাণ ও বস্তুর সাময়িক মুড। এসবের মধ্যে রয়েছে সময়ের কথকের ধৈর্য ও প্রাজ্ঞতার চিত্রকলা থেকে শুরু করে নিষ্পাপ কৈশোরের রঙিনকাল, রয়েছে কাজলের মতো কালো ব্ল্যাক-বিউটির নান্দনিক প্রকাশ অথবা সিরিয়ায় মার্কিন আস্ফালনে অভিশপ্ত শৈশব-কৈশোরের মুখচ্ছবি। তবে শুধু মানবিক অভিব্যক্তিই নয়; চাঁদ, ফুল, উচ্ছল ময়ূর ইত্যাদির মাধ্যমে সময়-নদীর যা কিছু সুন্দর, আকর্ষণীয় সেসবকেও মূর্ত করেছেন শিল্পী। স্মরণে রেখেছেন পশ্চিমা আলোকায়নে উজ্জ্বল সেই মুখাবয়ব, সেই ‘মোনালিসা’। মোনালিসার পুনর্নির্মাণের চেষ্টাও চালিয়েছেন তিনি। তবে সময়-নদীর গভীর ও গভীরতর তলে কতটা ডুব দিতে পেরেছেন, সেই প্রশ্নও অসমীচীন নয়।