বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নের দৃশ্য-শ্রাব্যের ন্যারেটিভ ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি পোশাকশিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান নারী শ্রমিকদের। তাঁদেরই সংগ্রাম ও সাফল্যের কাহিনি নিয়ে রুবাইয়াত হোসেনের নতুন ছবি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। এই ছবির দৃশ্যায়নের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল শুরু হয়ে ছবিটির কাজ শেষ হয়েছে ১ জুন। একটানা ৩৬ দিন শুটিং হয়েছে ঢাকা ও গাজীপুরে। ‘মেহেরজান’ ও ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’-এর পর রুবাইয়াতের এটি তৃতীয় ছবি।
বর্তমান ঢাকা শহরের নাগরিক জীবনের পটভূমিতে রচিত এই ছবির চিত্রনাট্যের মূল চরিত্রের নাম শিমু। এই চরিত্র ঘিরেই চলচ্চিত্রের ন্যারেটিভের উত্থান-পতনের আবর্তন। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ আসলে বাংলাদেশের সমাজজীবনের বাস্তবধর্মী এক চিত্র।
উল্লেখ্য, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, পর্তুগাল ও বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই চলচ্চিত্রের মূল অর্থায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অনুদান। এর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স সরকারের সিএনসি ফান্ড, নরওয়ে সরকার প্রদত্ত সোরফন্ড প্লাস, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রদত্ত ইউরিমাজ ফান্ড ও ডেনমার্কের ড্যানিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট ফান্ড। এ ছাড়া গত বছর লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবের ওপেন ডোরস-এ অংশ নিয়ে চিত্রনাট্যের জন্য জিতে নিয়েছে ‘আর্ট ইন্টারন্যাশনাল’-এর নগদ পুরস্কার। অনুদান ছাড়াও পরিবেশক ও আন্তর্জাতিক বিক্রয় প্রতিনিধি ফ্রান্সের শীর্ষস্থানীয় পরিবেশক ‘পিরামিড ফিল্মস’ও অর্থ বিনিয়োগ করেছে।
২০১৬ সালের লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ওপেন ডোরস ল্যাব’-এ অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’-এর স্ক্রিপ্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ। এরপর ২০১৭ সালে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবের স্ক্রিপ্ট স্টেশন, হংকং ফিল্ম ফাইনান্সিং ফোরাম ও লোকার্নো ওপেন ডোরস হাবে অংশগ্রহণ করে চিত্রনাট্যের কাজ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি চলে অর্থায়নের কাজ।
এই ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, দীপান্বিতা মার্টিন, মায়াবি মায়া, নভেরা রহমান ও পারভীন পারু। আরও রয়েছেন মুস্তাফা মনোয়ার, শতাব্দী ওয়াদুদ, জয়রাজ, মোমেনা চৌধুরী, ওয়াহিদা মল্লিক জলি ও সামিনা লুৎফা। এ ছাড়া দুটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিতা চৌধুরী ও ভারতের সাহানা গোস্বামী।
ছবিটির মূল কুশলীদের মধ্যে রয়েছেন চিত্রগ্রহণে ফরাসি চিত্রগ্রাহক সাবিন ল্যাঞ্চেলিন ও বারাকাত হোসেন পলাশ, শব্দগ্রহণে এলিশা আলবার্ট, শিল্প নির্দেশনায় ভারতের জোনাকি ভট্টাচার্য ও গ্যাফার হিসাবে পাওলো ডি সিলভা। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন রাজিব রাফি ও মাহদি হাসান। এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ ও অং রাখাইন। ছবিটির মূল প্রযোজক ফ্রঁসোয়া দ্যা’আক্তেমেয়ার (ফ্রান্স) ও আশিক মোস্তফা (বাংলাদেশ) এবং যৌথ প্রযোজক রয়েছেন পিটার হায়েল্ডাল (ডেনমার্ক) ও পেদ্রো বোর্হেস (পর্তুগাল)।
৫ জুন শুরু হচ্ছে ছবিটির সম্পাদনার কাজ। ফ্রান্স ও ডেনমার্কে হবে চূড়ান্ত সম্পাদনা ও পোস্ট প্রোডাকশন। আশা করা যায়, বাংলাদেশের খনা টকিজ ও ফ্রান্সের ‘লা ফিল্মস দি এপ্রেস-মিডি’-এর ব্যানারে নির্মিত এই ছবি মুক্তি পাবে ২০১৯ সালে।