প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করলো স্টার সিনেপ্লেক্স। ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ সেরা চলচ্চিত্রসহ ছয়টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জয় করেছে স্টার সিনেপ্লেক্স প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘ন ডরাই’। গত ৩ ডিসেম্বর তথ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, ‘ন ডরাই’ এবং ‘ফাগুন হাওয়ায়’ যৌথভাবে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জয় করেছে।
সাগর পাড়ের অকুতোভয় এক কিশোরীর সার্ফার হয়ে ওঠার গল্প নিয়ে নির্মিত ছবি ‘ন ডরাই’ সেরা ছবি, সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেত্রী, সেরা চিত্রনাট্য, সেরা সাউন্ড ডিজাইন, সেরা সিনেমাটোগ্রাফি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে। প্রথম ছবিতেই এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ছবির প্রযোজক স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, “এটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটা গল্প নিয়ে ‘ন ডরাই’ নির্মাণ করেছি। এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাব এমনটা ভাবনায় ছিল না। এ পুরস্কার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার। আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত এবং গর্বিত। এ অর্জন আমাদেরকে আগামীতে আরও ভালো ছবি নির্মাণে উৎসাহ ও সাহস যোগাবে। ছবির সঙ্গে যুক্ত সকলকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই। সেই সাথে দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
প্রযোজনা ছাড়াও ছবিটির ভাবনা মাহবুব রহমান রুহেলের। দেশের প্রথম নারী সার্ফার নাসিমার জীবনের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিটি নির্মাণের কথা ভাবেন তিনি। রুহেল বলেন, “নাসিমা নারীর শক্তির প্রতীক। রক্ষণশীল পরিবেশের মধ্যে থেকে নাসিমা যে কাজটি করে দেখিয়েছেন তাতে আমি আকৃষ্ট হয়েছি। ‘ন ডরাই’-এর মাধ্যমে নারীর সংগ্রাম, সাহসিকতা এবং শক্তিমত্তার কথা তুলে ধরতে চেয়েছি আমরা। পাশাপাশি আমাদের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য এবং বিশালতার বিষয়টিও তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।”
এ ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট প্রায় সকলেই নতুন। এটা আরেকটা চ্যালেঞ্জ ছিল বলে জানান মাহবুব রহমান। তিনি বলেন, ‘নতুনদেরকে নিয়ে কাজ করেছি আমরা। নতুন হলেও প্রত্যেকে খুব ভালো কাজ করেছেন। সকলের চেষ্টা আর শ্রমেই ছবিটি দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে ছবির নির্বাহী প্রযোজক জেফার রহমানের কথা উল্লেখ করতে চাই। তিনি এ বিষয়টিকে উৎসাহিত করেছেন। তার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।’
২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর মুক্তি পায় স্টার সিনেপ্লেক্স প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ন ডরাই’। সার্ফিং নিয়ে নির্মিত দেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র এটি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন তানিম রহমান অংশু। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুনেহরা বিনতে কামাল। আরো আছেন সাঈদ বাবু, শরীফুল রাজসহ অনেকে।
সিনেমার প্রায় ৯০ শতাংশ দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে কক্সবাজারে। সিনেমায় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এতে তুলে ধরা হয় সার্ফিং নিয়ে কক্সবাজারের স্থানীয় এক মেয়ে আয়েশার সংগ্রাম। যাকে সমাজ, পরিবার আর স্বজনরা বারবার মনে করিয়ে দেয়, ‘তুই নারী, তোর জন্য সমুদ্র না, সার্ফিং না!’ সংসারের শিকলে বাঁধতে চায় তাকে। কিন্তু আয়েশা নাছোড়বান্দা। সমুদ্রের বিশাল ঢেউয়ের ভেতর থেকে সার্ফিং বোটে সওয়ার হয়ে দুর্দান্ত দাপটে বেরিয়ে আসে সে।