বেঁচে থাকলে আজ ৭১ বছর বয়স ছুঁতেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত নাট্যকার ও গবেষক। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। নাটকের আঙ্গিক ও ভাষার ওপর ছিল তার গবেষণা। পাশ্চাত্য শিল্পের বিভাজনকে বাঙালির হাজার বছরের নন্দনতত্ত্বের আলোকে অস্বীকার করে এক নতুন শিল্পরীতি প্রবর্তন করেন। তিনি এর যার নাম দেন ‘দ্বৈতাদ্বৈতবাদী শিল্পতত্ত্ব’। এ রীতিতে লেখা তার নাটকগুলোতে সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষের সামাজিক নৃতাত্ত্বিক পটে তাদের বহুস্তরিক বাস্তবতা উঠে আসে।
১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার সেনেরখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সেলিম আল দীন। শৈশবে পড়াশোনার হাতেখড়ি আখাউড়ায় গৃহশিক্ষকের কাছে। তারপর সেনেরখিল প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে মৌলভীবাজারের বড়লেখার সিংহগ্রাম হাইস্কুল, কুড়িগ্রামের উলিপুরে মহারাণী স্বর্ণময়ী প্রাইমারি স্কুল এবং রংপুর ও লালমনিরহাটের স্কুলে পড়াশোনা করেন। তারপর সেনেরখিলের মঙ্গলকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এখান থেকেই ১৯৬৪ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৬ সালে ফেনী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন এবং টাঙ্গাইলের সা’দত কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি নেন। এরপর ১৯৯৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সেলিম আল দীন।