গোটা বিশ্বের প্রায় ৮৫ কোটি মানুষের কিডনির সমস্যা রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব নেফ্রোলজির কিডনি বিশেষজ্ঞরা এমনটাই জানিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও এইডসে আক্রান্ত মানুষের থেকেও গোটা বিশ্ব কিডনির অসুখে ভোগা মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।
এ মুহূর্তে সারা পৃথিবীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৪২ কোটি ২০ লাখ। ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ৪ কোটি ২০ লাখ আর এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয়, কিডনির সমস্যার আক্রান্ত রোগীরা অনেকেই তাঁদের কিডনির সমস্যার কথা জানেন না।
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব নেফ্রোলজির কিডনি বিশেষজ্ঞ ডেভিড হ্যারিস ও আদিরা লেভিনের সাফ বক্তব্য, ‘কিডনির ব্যাপারে সচেতন হওয়ার জন্য এটাই উপযুক্ত সময়।’ উল্লেখ্য, কিডনিবিষয়ক এই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট হলেন হ্যারিস, আর সাবেক প্রেসিডেন্ট লেভিন।
এই দুই কিডনি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, অনেক সময়েই কিডনির রোগের কোনো উপর্সগ টের পাওয়া যায় না। ইনফেকশন, হৃদরোগের মতো মানুষ কিডনির সমস্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ এই বিষয়ে অনেকেই সচেতন নন, তাই কিডনির সমস্যা মাত্রা ছাড়ালে শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করানোয় অনেক সময়েই কিডনি বিকল হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
দেখা গেছে, ১০ শতাংশ পুরুষ ও ১২ শতাংশ নারী কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশ্বের প্রায় ১ কোটি মানুষের কিডনির ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। কিন্তু অর্থাভাবে অনেকেই তা পারছেন না। এ ছাড়া ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের কিডনিতে আঘাত লেগে ক্ষত তৈরি হওয়ার ঘটনা ঘটছে। কেউ কেউ এর থেকে সুস্থ হচ্ছেন কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই কিডনি ফেইলিওরের ঘটনাও ঘটছে। মার্কিন নেফ্রোলজি সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মার্ক ওসুকার বক্তব্য, কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, এমন মানুষের সংখ্যা প্রতি মুহূর্তে বাড়লেও, মানুষ এই ব্যাপারে সচেতন নয়, তাই গোটা পৃথিবীতে মারাত্মক আকার নিতে পারে। অর্থনৈতিক অসাম্যও কিডনির চিকিৎসার ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।